Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
Nepal

নেপালে ভাঙা হল পার্লামেন্ট

দীর্ঘদিন ধরেই নানা প্রশ্নে বিরোধ চলছে নেপাল কমিউনিস্ট পার্টির অন্দরে। চিনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়াতে গিয়ে ওলি ভারতের মতো প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষতি করেছেন বলে মনে করে প্রচণ্ড শিবির।

ফাইল চিত্র

ফাইল চিত্র

সংবাদ সংস্থা
কাঠমান্ডু শেষ আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০২০ ০৪:২০
Share: Save:

দলে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের মধ্যে নেপালের পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার সুপারিশ করলেন প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলি। তাঁর সুপারিশ মেনে পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ ‘হাউস অব রিপ্রেজ়েন্টেটিভস’ ভেঙে দিয়ে অন্তর্বর্তী নির্বাচনের কথা ঘোষণা করলেন প্রেসিডেন্ট বিদ্যাদেবী ভাণ্ডারী। এই পদক্ষেপকে ‘অসাংবিধানিক’ অ্যাখ্যা দিয়েছেন নেপাল কমিউনিস্ট পার্টিতে ওলির বিরোধী নেতা প্রচণ্ডের গোষ্ঠী, বিরোধী দলগুলির নেতা ও সাংবিধানিক বিশেষজ্ঞেরা।

দীর্ঘদিন ধরেই নানা প্রশ্নে বিরোধ চলছে নেপাল কমিউনিস্ট পার্টির অন্দরে। চিনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়াতে গিয়ে ওলি ভারতের মতো প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষতি করেছেন বলে মনে করে প্রচণ্ড শিবির।

আজ মন্ত্রিসভার জরুরি বৈঠক ডেকে পার্লামেন্ট ভেঙে অন্তর্বর্তী নির্বাচনের সুপারিশ করার সিদ্ধান্ত নেন ওলি। তাঁর সুপারিশ মেনে প্রেসিডেন্ট বিদ্যাদেবী ভাণ্ডারীও পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ ভেঙে অন্তর্বর্তী নির্বাচনের কথা ঘোষণা করেন। ৩০ এপ্রিল হবে প্রথম দফার অন্তর্বর্তী নির্বাচন। ১০ মে হবে দ্বিতীয় দফা।

আরও খবর: প্রধানমন্ত্রীর জন্য ১০টি ৪ তলা বাড়ি! খরচ প্রায় সাড়ে ১৩ হাজার কোটি

আরও খবর: জানুয়ারিতেই আসতে পারে করোনার টিকা, দাবি হর্ষবর্ধনের

ওলির সিদ্ধান্তের পরেই প্রতিবাদ জানিয়ে তাঁর মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দেন সাত মন্ত্রী। পরে নেপাল কমিউনিস্ট পার্টির স্থায়ী কমিটির বৈঠক ডাকা হয়। তাতে অবশ্য হাজির ছিলেন না ওলি ও তাঁর সমর্থকেরা। কমিটির তরফে বিবৃতিতে বলা হয় ওলি অগণতান্ত্রিক, অসাংবিধানিক পদক্ষেপ করেছেন। দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের জন্য তাঁর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করারও সুপারিশ করেছে কমিটি। সেই সুপারিশ দলের কেন্দ্রীয় কমিটিতে পাঠানো হয়েছে। বুধবার কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক হবে। সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, আজ সকালে বিরোধী নেতা ও প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী প্রচণ্ড ওলির বাসভবনে যান। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা না করেই ফিরতে হয় তাঁকে। বিরোধী নেপালি কংগ্রেসের তরফেও জানানো হয়েছে, সংবিধান ভেঙেছেন ওলি। একনায়কের মতো ক্ষমতা দখলে রাখতে চান তিনি। অতিমারির মধ্যেই দলে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জন্য দেশকে অস্থিরতার দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে।

নেপালের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বাবুরাম ভট্টরাইয়ের মতে, সংবিধান সভা থেকে নেপালের রাজনৈতিক ব্যবস্থার উন্নতির যে চেষ্টা করা হয়েছিল তা এই পদক্ষেপে ব্যর্থ হয়ে গেল। সাংবিধানিক বিশেষজ্ঞ ভীমার্জুন আচার্যের বক্তব্য, ‘‘সংখ্যাগরিষ্ঠ সরকার পার্লামেন্ট ভেঙে দিতে পারে এমন কোনও ব্যবস্থা নেপালের সংবিধানে নেই। সরকার গঠনের সম্ভাবনা থাকলে কোনওভাবেই পার্লামেন্ট ভাঙা যায় না।’’

সম্প্রতি মানচিত্র পরিবর্তন করে ভারতের তিনটি সীমান্তবর্তী এলাকাকে নেপালের অন্তর্ভুক্ত বলে দেখানোর সিদ্ধান্ত নেয় ওলি সরকার। সেই প্রস্তাব নেপালি পার্লামেন্টে সর্বসম্মত ভাবে গৃহীত হয়। এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানায় ভারত। এর পরেই জুন মাসে ওলি অভিযোগ করেন, তাঁকে ক্ষমতা থেকে সরানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের মধ্যে অনেক বার ওলির ইস্তফার দাবি জানিয়েছে প্রচণ্ড ও মাধব নেপাল গোষ্ঠী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Nepal parliament K. P. Sharma Oli
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE