বিদ্রোহীদের মুছে দিতে বাড়ি বাড়ি ঢুকে সাধারণ মানুষ মারার অভিযোগ উঠল সিরিয়ার সরকারি বাহিনীর বিরুদ্ধে। আজ রাষ্ট্রপুঞ্জ জানিয়েছে, পূর্ব আলেপ্পোর চারটি এলাকায় গত কাল থেকে অন্তত ৮২ জনকে হত্যা করেছে প্রেসিডেন্ট বাসার আল আসাদের সেনা। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন ১১ জন মহিলা ও ১৩টি শিশু। একটি বিদ্রোহী গোষ্ঠীর নেতা সংবাদ সংস্থাকে জানিয়েছেন যে, বিদ্রোহী এবং সাধারণ মানুষেরা কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পূর্ব আলেপ্পো ছাড়বেন বলে সিরিয়া সরকারের সঙ্গে চুক্তি করেছে। মধ্যস্থতা করেছে রাশিয়া ও তুরস্ক।
আলেপ্পোর অবস্থা নিয়ে উদ্বিগ্ন আমেরিকাও। তবে একই সঙ্গে পেন্টাগনের মুখপাত্র পিটার কুক আজ জানান, গত ৪ ডিসেম্বর সিরিয়ার রাকায় যৌথ বাহিনীর বোমাবর্ষণে নিহত হয়েছে তিন ইসলামিক স্টেট (আইএস) জঙ্গি নেতা। এদের মধ্যে দু’জন— সালাহ এদিন গোরম্যাট ও স্যামি জেদিউ ২০১৫-র নভেম্বরে প্যারিসের হামলার চক্রান্তে জড়িত ছিল। তৃতীয় জঙ্গি ওয়ালিদ হাম্মান বেলজিয়ামে একটি ব্যর্থ হামলার ঘটনায় অভিযুক্ত। কুক বলেন, ‘‘পশ্চিমী
দেশে হামলার ছক কষছিল এরা।’’
বেশি চর্চা যদিও আলেপ্পো নিয়ে। সাধারণ মানুষ এ ভাবে বেঘোরে প্রাণ হারানোয় অসন্তুষ্ট রাষ্ট্রপুঞ্জের বিদায়ী মহাসচিব বান কি মুন। কালই সিরিয়ার সেনাবাহিনী জানিয়েছিল, বিদ্রোহীদের হাত থেকে আলেপ্পো পুনর্দখলের লড়াই প্রায় শেষের মুখে। পূর্ব আলেপ্পোয় আটকে ছিলেন অন্তত হাজার দশেক মানুষ। মানবাধিকার পর্যবেক্ষকরা জানান, সদ্য দখল করা এলাকাতেই বাড়ি বাড়ি ঢুকে তল্লাশি অভিযান শুরু করেছে সেনা। অনেককে দেখামাত্র গুলি করা হয়েছে। রাষ্ট্রপুঞ্জের মুখপাত্র রুপার্ট কোলভিলের কথায়, ‘‘আলেপ্পোর রাস্তায় পড়ে রয়েছে অসংখ্য মৃতদেহ। আকাশপথেও লাগাতার চলছে বোমাবর্ষণ। ফলে দেহগুলি উদ্ধারেও এগিয়ে আসছেন না স্থানীয় মানুষ।’’
টুইটারে একটি ভিডিওয় দেখা গিয়েছে, জ্বলন্ত অবস্থায় আর্তনাদ করছেন এক মহিলা। অদূরেই রক্ত মেখে পড়ে রয়েছে এক যুবকের দেহ। একটি রিপোর্ট বলছে, ২০১১ সালের মার্চে সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর প্রাণ হারিয়েছেন সাড়ে তিন লাখ মানুষ। তাঁদের মধ্যে ৯০ হাজারই সাধারণ নাগরিক।