শ্রীনিবাস কুচিভোটলা
অবশেষে শাস্তি। ভারতীয় ইঞ্জিনিয়ার শ্রীনিবাস কুচিভোটলাকে খুনের দায়ে প্রাক্তন মার্কিন নৌসেনা অ্যাডাম পিউরিটনকে যাবজ্জীবন কারদণ্ডের নির্দেশ দিল আমেরিকার একটি আদালত।
গত বছর ২২ ফেব্রুয়ারির ঘটনা। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার মাসখানেকের মাথায়। কানসাস সিটির এক পানশালায় হায়দরাবাদের বছর বত্রিশের যুবক কুচিভোটলা ও তাঁর বন্ধু অলোক মাদাসানিকে পশ্চিম এশিয়ার মুসলিম বলে ভুল করেছিল পিউরিটন। ‘জঙ্গি’ বলে সম্বোধন করে প্রথমে বচসা জুড়ে দেয় সে। তার পর হঠাৎই ‘গেট আউট ফ্রম মাই কান্ট্রি’ বলে ওই দুই ভারতীয়কে লক্ষ্য করে পর পর কয়েকটি গুলি চালায় নৌসেনার ওই প্রাক্তন কর্মী। অলোক অল্পের জন্য বেঁচে গেলেও, হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে মারা যান কুচিভোটলা। তাঁদের বাঁচাতে গিয়ে গুলিতে আহত হন বছর চব্বিশের মার্কিন যুবক ইয়ান গ্রিলটও।
কাল মার্কিন আদালত রায় দিয়েছে, এই দু’জনকে খুনের চেষ্টার দায়ে আরও ১৬৫ মাস করে জেল খাটতে হবে পিউরিটনকে। তার বয়স এখন ৫২। ফলে জীবদ্দশায় সে আর মুক্তি পাবে না বলেই মনে করছেন অনেকে। এ তো গেল খুনের মামলা! তার বিরুদ্ধে ফেডেরাল কোর্টে বর্ণবিদ্বেষী হিংসা ছড়ানোর পাশাপাশি অস্ত্র আইনেও মামলা চলছে। দোষী সাব্যস্ত হলে পিউরিটনের মৃত্যুদণ্ডও হতে পারে। পুলিশ সূত্রের খবর, গুলি চালিয়েই কানসাসের ওই পানশালা ছে়ড়ে পালিয়েছিল আততাতী। ঘণ্টা পাঁচেক পরে মিসৌরিতে অন্য একটি পানশালা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশের দাবি, সেখানকার বারটেন্ডারকে পিউরিটন নাকি ফলাও করে বলেছিল, কী ভাবে এই মাত্র দু’জনকে গুলি করে এসেছে সে।
রায় ঘোষণার খবর পেয়ে আজ ভিডিয়ো-বার্তায় কুচিভোটলার স্ত্রী সুনয়না ডুমালা বলেন, ‘‘যে মানুষটা স্বপ্ন দেখতে ভালবাসতেন, তিনি আর ফিরবেন না জানি। কিন্তু যারা হিংসা ছ়ড়ায়, তাদের এই শাস্তিটা জরুরি ছিল।’’
ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর-পরই মার্কিন মুলুকে বর্ণবিদ্বেষের বাড়বাড়ন্ত হয়েছে বলে অভিযোগ। প্রেসিডেন্ট নিজে মুসলিম-বিদ্বেষ ছড়াচ্ছেন বলেই ভারতীয়রা আক্রান্ত হচ্ছেন বলে ঝ়ড় ওঠে সোশ্যাল মিডিয়ায়। কুচিভোটলা-খুনে গোড়ায় মুখ খোলেননি বলেও সমালোচনার মুখে পড়েন প্রেসিডেন্ট। পরে অবশ্য ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করে দোষীকে উপযুক্ত শাস্তি দেওয়ার আশ্বাস দেয় ট্রাম্প প্রশাসন। স্থানীয় পুলিশের পাশাপাশি তদন্তে নামে এফবিআই-ও। মার্কিন কংগ্রেসেও বিষয়টি নিয়ে মুখ খোলেন ট্রাম্প। তার পরে চলতি বছরের গোড়ায় প্রেসিডেন্টের প্রথম স্টেট অব ইউনিয়ন বক্তৃতায় বিশেষ ভাবে আমন্ত্রণ জানানো হয় কুচিভোটলার স্ত্রীকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy