শ্রীঘরে নয়, মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালালে ঠাঁই মিলবে মর্গে। তবে এদেশে নয়, এমনতর শাস্তির বিধান তাইল্যান্ড সরকারের। মঙ্গলবার থেকেই শাস্তি দিতে মর্গে পাঠানো শুরু হয়েছে মত্ত অবস্থায় দুর্ঘটনা ঘটানো ড্রাইভারদের।
ওর্য়াল্ড হেল্থ অর্গানাইজেশন-এর পরিসংখ্যান অনুযায়ী, পথ দুর্ঘটনার কারণে বিশ্বে সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি হয় লিবিয়াতে। তালিকায় দ্বিতীয় স্থানেই রয়েছে তাইল্যান্ড। মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালানোই এত দুর্ঘটনার প্রধান কারণ। জানাচ্ছেতাইল্যান্ড সরকারই। অনেক দিন ধরে অনেক রকম চেষ্টা করেও বাগে আনা যাচ্ছে না মদ্যপ গাড়ি চালকদের। শেষ পর্যন্ত এই অভিনব শাস্তি চালু করা হয়েছে সম্প্রতি।
তাইল্যান্ডের নববর্ষ ‘সংক্রান’ উপলক্ষ্যে এপ্রিলে সাত দিন ধরে উৎসব-অনুষ্ঠান চলে। রাস্তা জুড়ে মিছিল, তুমুল হইচই, খাওয়াদাওয়া চলে তখন। মদ্যপ অবস্থায় রাস্তায় নেমে উদ্যাপন করা হয় নববর্ষ। সরকারি সূত্রের খবর, ওই সাত দিনে প্রতি ঘণ্টায় শুধুমাত্র পথ দুর্ঘটনাতেই মৃত্যু হয়েছে ২.৩ জন মানুষের। ঘণ্টায় আহত ১৬০ জন। সরকারি দফতর থেকে ওই সাত দিনের নামকরণও করা হয়েছে ‘দ্য সেভেন ডেজ অব ডেঞ্জার’। ডিপার্টমেন্ট অব প্রোবেশনের ডেপুটি ডিরেক্টর প্রসর্ন মহালীত্রকুল জানিয়েছেন, পথ দুর্ঘটনার কারণে প্রাণহানি কমাতে এ নিয়ে নানা ধরনের প্রচার চালিয়েও সফল হয়নি তাই সরকার। সেই কারণেই এই অভিনব উদ্যোগ।
মদ্যপ ড্রাইভারদের শায়েস্তা করতে এ বার তাই মর্গে ‘পাঠানোর’ ব্যবস্থা করেছে তারা। শুধু কি তাই, ১২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার কমিউনিটি সার্ভিস-সহ বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে লেকচারও শোনারও নিদান দেওয়া হয়েছে তাদের। এখনও পর্যন্ত মোট ১৭০০ জন মদ্যপ ড্রাইভার এ ধরনের শাস্তির মুখে পড়েছেন।
ব্যাঙ্ককে তাকসিন হাসাপাতালের মর্গে এ দিন শাস্তির মেয়াদ কাটাতে হাজির ছিলেন বহু ড্রাইভার। টিভি ক্যামেরা নিয়ে হাজির ছিলেন সংবাদমাধ্যমও। ঠিক কী করতে হয়েছে তাদের? প্রথমে মর্গের ঢুকিয়ে লাশ রাখার ট্রেগুলো ভাল করে সাফ করতে হয়েছে তাদের। এর পর তাদের নিয়ে যাওয়া হয় মৃতদেহ রাখার জায়গায়। প্রসর্ন জানিয়েছেন, টিভি ক্যামেরার সামনেই ড্রাইভারেরা জড়ো হয়েছিল একটি মৃতদেহের সামনে। চাদরে ঢাকা ওই মৃতদেহের হাত-পা ঝুলছিল বেডের বাইরে। ভয়ার্ত চোখে সেদিকে তাকিয়ে ছিল ড্রাইভারেরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ড্রাইভার বলে, “মৃতদেহ দেখে সত্যিই খুব খারাপ লাগছিল।” এমনকী, ওই মৃতদেহের সামনে দাঁড়িয়ে নিজের সুরক্ষা নিয়েও চিন্তায় পড়েন তিনি। সাংবাদিকদের বলে, “এ রকম অ্যাক্সিডেন্ট হলে হয়ত আমিই এখানে শুয়ে থাকতাম।”
আরও দেখুন
এই ডায়েট মেনে চললে দেড় মাসেই কমাতে পারেন ১০ কেজি ওজন
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy