Advertisement
০৬ মে ২০২৪
Afghanistan

পুরুষ চিকিৎসকের কাছে যেতে পারবেন না আফগান মেয়েরা

স্কুল, কলেজ, এনজিও বা অন্যত্র মেয়েদের চাকরিতে কোপের পরে এ বার তালিবানের নির্দেশ— কোনও আফগান মহিলা পুরুষ চিকিৎসকের কাছে যেতে পারবেন না।

পাল্লা দিয়ে বাড়ছে শরিয়ত আইন মেনে চলার নামে মেয়েদের অধিকার খর্ব করার ‘উল্লাস’।

পাল্লা দিয়ে বাড়ছে শরিয়ত আইন মেনে চলার নামে মেয়েদের অধিকার খর্ব করার ‘উল্লাস’। ফাইল চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
কাবুল শেষ আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০২৩ ০৬:৪২
Share: Save:

ঠিক যেন দু’হাত পিছমোড়া করে বেঁধে কেউ বোর্ডে অঙ্ক কষতে বলেছে— তালিবানের ফের নিষেধাজ্ঞা জারির পরে এমনটাই মনে করছেন আফগান মেয়েদের একাংশ। দেশে এক বছরেরও বেশি হয়ে গিয়েছে তালিবান শাসনের দ্বিতীয় পর্ব। নতুন করে ক্ষমতা দখল করার পরে সে দেশকে উন্নতির শিখরে নিয়ে যাওয়া হবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তালিবান, কিন্তু অর্থনৈতিক, সামাজিক সমস্ত ক্ষেত্রেই বর্তমানে পিছন দিকে হাঁটছে দেশটি। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে শরিয়ত আইন মেনে চলার নামে মেয়েদের অধিকার খর্ব করার ‘উল্লাস’।

স্কুল, কলেজ, এনজিও বা অন্যত্র মেয়েদের চাকরিতে কোপের পরে এ বার তালিবানের নির্দেশ— কোনও আফগান মহিলা পুরুষ চিকিৎসকের কাছে যেতে পারবেন না। অর্থাৎ অসুস্থ হলে এক মাত্র পথ মহিলা চিকিৎসকই। এ দিকে, শিক্ষা ক্ষেত্রে মেয়েদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করে দেওয়ায় আগামী দিনে মহিলাদের ডাক্তার হওয়ার পথও এক প্রকার অবাস্তব ভাবনা। এক সময়ে ঠিক এই পরিস্থিতিই ছিল। বিনা চিকিৎসায় কিংবা হাতুড়ের ভুল দাওয়াইয়ে মারা যেতেন মহিলারা। পুরুষ অভিভাবক ছাড়া বাড়ি থেকে বেরোনোও নিষিদ্ধ ছিল। পরিবারে কোনও ছেলে না থাকলে না-খেয়ে মরতে হত মেয়েদের। তবু রাস্তায় বেরোনো যেত না। মাঝে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছিল। কিন্তু আশঙ্কা, ফের সে দিকেই হাঁটছে আফগানিস্তান। আফগান মহিলাদের ক্ষোভ, পুরুষ চিকিৎসকের কাছে যাওয়া নিষেধ করে তাঁদের মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে তালিবান।

নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে খেলাধুলো ও রূপচর্চাতেও। আগামী দশ দিনের মধ্যে দেশের সমস্ত বিউটি স্যালোঁ বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। ইতিমধ্যেই কুন্দুজ়, বদখশান প্রদেশের স্যালোঁগুলি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। কাজ হারিয়ে চূড়ান্ত নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন স্যালোঁর মালিকেরা। প্রশাসন থেকে বলা হয়েছে, কোনও আফগান যদি বিউটি স্যালোঁর জন্য বাড়ি বা অফিসঘর ভাড়া দেন, তিনি বেআইনি কাজ করবেন। শাস্তি অবধারিত। মহিলা খেলোয়াড়দের বাড়ি গিয়ে রীতিমতো হুমকি দিয়ে এসেছেন তালিবান আধিকারিকেরা। জানিয়েছেন, খেলার মাঠে যেন কোনও মেয়েকে দেখা না যায়।

তালিবানের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সমাজমাধ্যমে সরব গোটা বিশ্ব। কিন্তু বাস্তবে তার প্রতিফলন নেই। আফগানিস্তানের রাজনৈতিক ও মানবাধিকার কর্মী শবনম নাসিমি টুইটারে কড়া সমালোচনা করে লিখেছেন, ‘‘মেয়েদের অধিকারে একের পর এক কোপ পড়বে। তা-ও তালিবানের এই অবিচারের প্রতিবাদ করবে না কেউ।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Afghanistan Taliban 2.0
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE