Advertisement
০৩ মে ২০২৪

কাদের বিশ্বাস করব! ফেসবুক থ

কেউ বলছেন, হতেই পারে না। কেউ আবার পলক ফেলার আগেই চোখে আঙুল দিয়ে চিনিয়ে দিচ্ছেন— ‘গুলশনের রেস্তোরাঁয় ঢুকে নিবরাস ইসলাম নামের এই ছেলেটাই এলোপাথাড়ি গুলি চালিয়েছিল! বিলক্ষণ চিনি একে।

মার্কিন সাইটে এবং সোশ্যাল সাইটে: বন্ধুরা যে নাম বলছেন, বাঁ দিক থেকে নিবরাস ইসলাম, রোহন ইমতিয়াজ ও মির শমীহ মুবাশির।

মার্কিন সাইটে এবং সোশ্যাল সাইটে: বন্ধুরা যে নাম বলছেন, বাঁ দিক থেকে নিবরাস ইসলাম, রোহন ইমতিয়াজ ও মির শমীহ মুবাশির।

সংবাদ সংস্থা
ঢাকা শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০১৬ ০৩:৫২
Share: Save:

কেউ বলছেন, হতেই পারে না। কেউ আবার পলক ফেলার আগেই চোখে আঙুল দিয়ে চিনিয়ে দিচ্ছেন— ‘গুলশনের রেস্তোরাঁয় ঢুকে নিবরাস ইসলাম নামের এই ছেলেটাই এলোপাথাড়ি গুলি চালিয়েছিল! বিলক্ষণ চিনি একে। বড়লোকের এই বখাটে ছেলেটাকে আমার ভাইয়ের ফ্রেন্ডলিস্টেই দেখেছি। ভাবা যায়!’

চোখ কপালে তুলেই তাই ফ্রেন্ডলিস্ট কাটছাঁটের জল্পনা চলছে। মিউচুয়াল বন্ধুদেরও আড়চোখে দেখছেন নেটিজেনদের কেউ-কেউ। কানাডা থেকে এক জন তো বলেই ফেললেন, ‘‘কাকে যে বিশ্বাস করব, বুঝে উঠতে পারছি না। অ্যাকাউন্টটাই ভাবছি বন্ধ করে দেব।’’

নিবরাসেরও অ্যাকাউন্টও ব্লক দীর্ঘদিন। তবু আজ দিনভর তারই ছবি-ভিডিওতে ছয়লাপ সোশ্যাল মিডিয়া। কখনও সে অভিনেতা ফিরদৌসের সঙ্গে গ্রুপ ছবিতে। কখনও একান্ত নিজের বৃত্তে —দামি রেস্তোরাঁয় বন্ধুদের সঙ্গে জমাটি আড্ডায়।

এক ভিডিওতে বলিউড অভিনেত্রী শ্রদ্ধা কপূরের সঙ্গেও হাত মেলাতে দেখা গিয়েছে নিবরাসকে। সব দেখেশুনে অনেকেরই চোখ ছানাবড়া।

গুলশন হামলায় জড়িত সন্দেহে গত কালই পাঁচ বাংলাদেশি আইএস জঙ্গির ছবি প্রকাশ করেছিল মার্কিন একটি ওয়েবসাইট। বয়স, ২১ থেকে ২৭-এর মধ্যে। সকলেই আইএসের পোশাকে। আজ সেই পাঁচ মুখ নিয়েই তোলপাড় হল সোশ্যাল মিডিয়া। ছবি দেখে পাঁচ জনের মধ্যে অন্তত তিন জনকে বন্ধু ও সহপাঠী বলে দাবি করেছেন অনেকেই। জানা গিয়েছে, এরা প্রত্যেকেই সচ্ছল পরিবার থেকে উঠে আসা, উচ্চশিক্ষিত। কারা এরা? শনিবার রাতে পুলিশ এদের আকাশ, বিকাশ, ডন, বাঁধন এবং রিপন নামে চিহ্নিত করেছে। যদিও সোশ্যাল মিডিয়ায় শোনা যাচ্ছে অন্য সব নাম।

যেমন, এই নিবরাস ইসলাম। বন্ধুরা বলছেন, বছরের গোড়া থেকেই সে নিখোঁজ। খোঁজ নেই তার পরিবারেরও। ১২ জানুয়ারি গুলশন চত্বরেরই একটি কফিশপে বসে সে একটি নিজস্বী পোস্ট করে। ফেসবুক ঘেঁটে যাঁরা আজ তাঁকে চিহ্নিত করেছেন, তাঁদের দাবি— ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করে বেরিয়ে নিবরাস মালয়েশিয়ার মোনাশ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে গিয়েছিল। থাকত কুয়ালা লামপুরে। টুইটারেও তার একটি অ্যাকাউন্ট ছিল বলে দাবি বন্ধুদের। যা থেকে শেষ পোস্ট করা হয়েছিল ২০১৪-র ১ ডিসেম্বর। তার পরই সোশ্যাল মিডিয়া থেকে পাততাড়ি গোটাতে শুরু করে নিবরাস। বন্ধুরা বলছেন, পড়াশোনায় তুখোড় ছিল সে। ফুর্তিবাজও। বন্ধুদের সঙ্গে হামেশাই সে লং-ড্রাইভে কিংবা রেস্তোরাঁয় খেতে যেত। কিন্তু কখন ও কী ভাবে সে জঙ্গি হয়ে উঠল, হদিস নেই কারও কাছেই।

শনিবার প্রকাশিত ছবির মধ্যে থেকে মির শমীহ মুবাশির নামে এক পড়ুয়াকেও এ দিন চিহ্নিত করেছেন তার বন্ধুরা। তাঁদের দাবি, গত ২৯ ফেব্রুয়ারি থেকে ১ মার্চের মধ্যে গুলশন চত্বর থেকে নিখোঁজ হয়ে যায় সে। তার পরে কোথায়! মুখ বন্ধ সোশ্যাল মিডিয়ারও।

তৃতীয় জঙ্গি হিসেবে এ দিন সোশ্যাল মিডিয়ায় জোর আলোচনা রোহন ইমতিয়াজ নামের এক যুবককে নিয়েও। ঢাকা পুলিশের তরফে জঙ্গিদের যে ছবি প্রকাশ করা হয়েছে, তার মধ্যে থেকে রোহন ইমতিয়াজের মিল পেয়েছেন অনেকেই। সে-ও ‘নিখোঁজ’। ২১ জুন ছেলের নিখোঁজ হওয়ার খবর বাবা ইমতিয়াজ খান বাবুল নিজে পোস্ট করেন ফেসবুকে। বারবার ছেলেকে ফিরে আসার কথাও লেখেন স্থানীয় আওয়ামি লিগের নেতা। ছেলের তরফে অবশ্য উত্তর মেলেনি। আজও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Terrorist Facebook Attack
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE