ব্যালটে: ভোট দিচ্ছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এর্দোগান। ছবি: রয়টার্স
এক দিকে প্রেসিডেন্টের হাতে একচ্ছত্র ক্ষমতার দরজা খুলে যাওয়া, অন্য দিকে কিছুটা হলেও সেই দরজায় আগল পড়া। এই দুই রাস্তার মোড়ে দাঁড়ানো তুরস্কে আজ হল ঐতিহাসিক গণভোট। ভারতীয় সময় গভীর রাতে ভোটগণনা শেষ হওয়ার পর প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়িপ এর্দোগানের দাবি, তিনিই জিতেছেন। সংবিধান সংশোধন করে তাঁর ক্ষমতাবৃদ্ধির পক্ষেই ভোট পড়েছে ৫১.৩ শতাংশ।
প্রেসিডেন্টের ফোন পেয়ে ইতিমধ্যেই বিজয় সমাবেশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী বিনালি ইলদিরিম। বলেছেন, ‘‘আমরা এক জাতি।’’ উল্টো দিকে ভোটে কারচুপির অভিযোগ তুলে নির্বাচনী কর্তৃপক্ষের দ্বারস্থ হয়েছে বিরোধীরা। তবে এর্দোগানের অস্বস্তি রেখে দিচ্ছে দেশের সবচেয়ে বড় তিন শহর— রাজধানী আঙ্কারা, ইস্তানবুল এবং ইজমির। সেখানে ‘না’-এর প্রাধান্য।
গণভোট নিয়ে টানাপড়েন চলছিল দীর্ঘদিন ধরে। বিরোধীদের কণ্ঠরোধের অভিযোগ উঠেছিল প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে। সম্পর্কের অবনতি হয়েছিল নেদারল্যান্ডসের সঙ্গে। বিরোধীদের অভিযোগ ছিল, বিস্ফোরক সব বদল আনতে চান এর্দোগান। যেমন—
১) ভাইস প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর পদ বিলোপ করে যাবতীয় ক্ষমতা প্রেসিডেন্টের হাতে আনা।
২) ইচ্ছেমতো মন্ত্রী নিয়োগ ও ছাঁটাই, বিচারপতি নিয়োগ এবং আইন জারির ক্ষমতাও প্রেসিডেন্টের আওতায় আনা।
৩) প্রেসিডেন্ট পাঁচ বছর করে দু’দফায় ক্ষমতায় আসতে পারবেন। কিন্তু দ্বিতীয় বার মেয়াদ শেষের আগেই আইনসভা ভেঙে দেওয়া হলে তাঁর তৃতীয় বার ক্ষমতায় আসার পথও খোলা রাখা।
৪) প্রেসিডেন্ট যাতে যে কোনও সরকারি অফিসারের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ জারি করতে পারেন, সেই ব্যবস্থা করা।
এখানেই সমালোচকদের আশঙ্কা, এ বার একনায়ক হয়ে উঠবেন এর্দোগান। সিরিয়ার গৃহযুদ্ধের অন্যতম শরিক তুরস্ক। শরণার্থীর সংখ্যাও এই দেশে সবচেয়ে বেশি। ‘কুপ্রভাব’ পড়বে সবেতেই। ‘না-পন্থীদের’ সঙ্গে গত বছরের ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থানের পাণ্ডাদের যোগসাজশ রয়েছে— এমন প্রচার চালানোর অভিযোগ আগেই উঠেছে সরকারের বিরুদ্ধে। এ বার সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়েছে অ্যানিমেশন, যেখানে এর্দোগানের মুখটা হয়ে যাচ্ছে হিটলারের!
প্রেসিডেন্টের সমর্থকদের অবশ্য যুক্তি, আখেরে ভালই হবে। টালমাটাল অর্থনীতি, একাধিক জঙ্গি হানা, সেনা অভ্যুত্থানের চেষ্টা, কুর্দদের সঙ্গে গৃহযুদ্ধ, সিরিয়ার যুদ্ধ— একের পর এক ধাক্কার মুখে দেশের রাশ ধরার জন্য একটা শক্ত হাত খুবই দরকার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy