Advertisement
০৭ মে ২০২৪

সিরিয়ায় কনভয়ে হামলা, ত্রাণ বন্ধের সিদ্ধান্ত রাষ্ট্রপুঞ্জের

যুদ্ধবিরতি ভেস্তে গিয়েছিল রবিবার মাঝ রাতেই। কনভয়ে হামলার জেরে সিরিয়ায় এ বার ত্রাণ পাঠানোও আপাতত বন্ধ করল রাষ্ট্রপুঞ্জ। সূত্রের খবর, আলেপ্পো প্রদেশের উরুম-আল-কুবরা শহরে গত কাল রাতের একটি বিমান হামলায় উড়ে গিয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জের অন্তত ১৮টি ত্রাণবোঝাই ট্রাক। ত্রাণকর্মী ও চালক মিলিয়ে নিহত ১২।

ত্রাণবাহী ট্রাকে হামলা।ছবি: এ এফ পি

ত্রাণবাহী ট্রাকে হামলা।ছবি: এ এফ পি

সংবাদ সংস্থা
আলেপ্পো শেষ আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০২:১৭
Share: Save:

যুদ্ধবিরতি ভেস্তে গিয়েছিল রবিবার মাঝ রাতেই। কনভয়ে হামলার জেরে সিরিয়ায় এ বার ত্রাণ পাঠানোও আপাতত বন্ধ করল রাষ্ট্রপুঞ্জ। সূত্রের খবর, আলেপ্পো প্রদেশের উরুম-আল-কুবরা শহরে গত কাল রাতের একটি বিমান হামলায় উড়ে গিয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জের অন্তত ১৮টি ত্রাণবোঝাই ট্রাক। ত্রাণকর্মী ও চালক মিলিয়ে নিহত ১২। সব মিলিয়ে ৩১টি ট্রাক ছিল কনভয়ে। অল্পবিস্তর ক্ষতি হয়েছে প্রায় সব ক’টিরই। রাষ্ট্রপুঞ্জের দাবি, তুরস্ক-সিরিয়া সীমান্তে দীর্ঘদিন আটকে থাকার পর, সোমবার রাতে ওই কনভয়টি সবে বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত আলেপ্পোর কাছাকাছি এসে পৌঁছয়। ট্রাক খালি করে এলাকার প্রায় ৭৮ হাজার মানুষের জন্য বস্তা-বস্তা গম, শুকনো খাবার, শীতের পোশাক আর ওষুধপত্র তখন ঢোকানো হচ্ছিল গুদামঘরে। হঠাৎই তাল কাটল বিমান হানায়।

সিরিয়া, নাকি রাশিয়া— হামলার নেপথ্যে কারা? আজ দিনভর তা স্পষ্ট না হলেও বিষয়টি নিয়ে কড়া বার্তা দিয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জ। সংশ্লিষ্ট ত্রাণ বিষয়ক প্রধান স্টিফেন ও’ব্রায়েন বলেন, ‘‘এই হামলা যদি ইচ্ছাকৃত হয়, নিশ্চিত ভাবেই তা যুদ্ধাপরাধের সামিল।’’ অভিযোগের আঙুল উঠছে মার্কিন সেনার দিকেও। কারণ গত শনিবার, (যুদ্ধবিরতি চলাকালীন) তাদেরই বিমান হামলায় দেইর আল জৌর শহরে অন্তত ৬২ জন সিরীয় সেনার মৃত্যু হয়। সেই হামলা ‘অনিচ্ছাকৃত’ বলে আমেরিকা দুঃখপ্রকাশ করলেও বরফ গলেনি। বরং তার জের মিটতে না মিটতেই ভেস্তে গিয়েছে যুদ্ধবিরতি।

স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, সোমবার থেকেই আলেপ্পো ও তার আশপাশের এলাকায় ব্যাপক বোমাবাজি শুরু হয়েছে। হতাহতের সংখ্যা ক্রমশই বাড়ছে। গত পাঁচ বছরের গৃহযুদ্ধে দেশ জুড়ে প্রাণ গিয়েছে অন্তত ৩ লক্ষের। সপ্তাহখানেকের যুদ্ধবিরতি মিটতেই তাই ফের সিঁদুরে মেঘ দেখছে আন্তর্জাতিক কূটনীতিক মহলের একটা বড় অংশ। যুদ্ধের মাটিতে দাঁড়িয়ে এখনও যাঁরা ত্রাণের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন, তাঁরা বলছেন— ‘‘কিছু একটা করুন। যুদ্ধের মানে না জেনেও না খেয়ে মরতে বসেছে বাচ্চাগুলো। গত দু’দিন ধরে ভাল করে সূর্য ওঠার আগেই যুদ্ধবিমান উড়ছে আকাশে। এর থেকে বুঝি রেহাই নেই নিরীহ নাগরিকদের।’’

সাম্প্রতিক এই যুদ্ধবিরতি চুক্তি না টিকলে যে দেশটাকে বাঁচানো যাবে না, মার্কিন বিদেশসচিব জন কেরি তা আগেই বলেছিলেন। রাষ্ট্রপুঞ্জের কনভয়ে হামলার পরে ফের সেই আশঙ্কার কথাই
জানিয়েছে ওয়াশিংটন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, ‘‘সিরিয়ার এখন যা পরিস্থিতি, তাতে রাশিয়ার ভূমিকাটাই সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ওরা যে ঠিক কাদের পাশে দাঁড়াতে চায় সেটাই তো স্পষ্ট নয়।’’ পাল্টা তোপ দেগেছে রাশিয়াও। তাদের অভিযোগ, সিরিয়ার যুদ্ধবিরতিকে প্রশ্নচিহ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছিল মার্কিন বাহিনীই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

UN Syria
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE