Advertisement
০৫ মে ২০২৪

মৃত শিশুদের ভিডিও নিয়েই প্রশ্ন আসাদের

তাঁর দেশে রাসায়নিক হামলা নিয়ে গোটা বিশ্বে তোলপাড় চলছে। গত সপ্তাহে সিরিয়ায় সেই বিধ্বংসী হামলার পরে সরাসরি প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদকে মুখ খুলতে শোনা যায়নি। গত কাল দামাস্কাসে বসে সংবাদসংস্থাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আসাদ বলে দিলেন, ‘‘অভিযোগের পুরোটাই মিথ্যে।’’

ওয়াশিংটন
সংবাদ সংস্থা  শেষ আপডেট: ১৪ এপ্রিল ২০১৭ ০৩:১৭
Share: Save:

তাঁর দেশে রাসায়নিক হামলা নিয়ে গোটা বিশ্বে তোলপাড় চলছে। গত সপ্তাহে সিরিয়ায় সেই বিধ্বংসী হামলার পরে সরাসরি প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদকে মুখ খুলতে শোনা যায়নি। গত কাল দামাস্কাসে বসে সংবাদসংস্থাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আসাদ বলে দিলেন, ‘‘অভিযোগের পুরোটাই মিথ্যে।’’

তিন বছর আগেই তাঁরা রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার বন্ধ করে দিয়েছেন বলে দাবি সিরিয়ার প্রেসিডেন্টের। তাঁর পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘ওই হামলায় নিহত শিশুদের কি সত্যিই সিরিয়ায় প্রাণ গিয়েছিল? শিশুরা কি আদৌ মারা গিয়েছিল?’’ পুরো ঘটনাটাই সাজানো বলে মনে করছেন তিনি।

এ দিন প্রত্যাশামতোই আসাদের পাশে দাঁড়িয়ে সিরিয়ায় হামলার তদন্ত-প্রস্তাবে ভেটো দিয়েছে নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য এবং আসাদের বন্ধু দেশ রাশিয়া। সিরিয়া প্রশ্নে এই নিয়ে মোট ৮ বার ভেটোর ক্ষমতা প্রয়োগ করল রাশিয়া।

রাসায়নিক হামলা নিয়ে প্রকৃত তথ্য জানার জন্য নিরাপত্তা পরিষদে তদন্তের দাবি তুলেছিল ব্রিটেন, আমেরিকা ও ফ্রান্স। তাদের প্রস্তাবে সিরিয়ার বাহিনীর ৪ এপ্রিলের গ্যাস হামলাকে ‘ভয়াবহ’ আখ্যা দেওয়া হয়। বলা হয়, সিরিয়া যেন ওই দিনের সব উড়ানের তথ্য দিয়ে ও অন্য ভাবে তদন্তে সহযোগিতা করে। কিন্তু এতে প্রথম থেকেই রাশিয়া ভেটো দেবে জানিয়েছিল। ফলে রাসায়নিক হানার পরে আসাদ তীব্র সমালোচনার মুখে পড়লেও শক্তিশালী বন্ধু রাশিয়ার ধারাবাহিক সমর্থনে সাময়িক স্বস্তিতে।

তবে সিরিয়া প্রসঙ্গ ঘিরে রাশিয়া এবং আমেরিকার মধ্যে চাপ বাড়ছে উত্তরোত্তর। গত কাল রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। আজ একই পথে হাঁটলেন তাঁর এক সময়ের ‘বন্ধু’ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও। পুতিনকে বলতে শোনা গিয়েছিল, ‘‘জানুয়ারিতে ট্রাম্প দায়িত্বে আসার পরে আমেরিকার সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি হয়েছে। কাজের ক্ষেত্রে, বিশেষ করে সামরিক দিক দিয়ে দু’দেশের মধ্যে বিশ্বাস বাড়া তো দূর, বরং কমে গিয়েছে।’’ আর এ দিন ট্রাম্পের মন্তব্য, ‘‘রাশিয়ার সঙ্গে আমরা এখন সম্পর্কের দিক থেকে একেবারেই তলানিতে পৌঁছে গিয়েছি।’’ হোয়াইট হাউসে এক সাংবাদিক বৈঠকে ট্রাম্প এ কথা বলেন। কূটনীতিকদের মতে, প্রচার-পর্ব থেকেই যে রাশিয়ার সঙ্গে সুসম্পর্কের ইঙ্গিত দিয়ে এসেছেন ট্রাম্প, সিরিয়ায় রাসায়নিক হামলার ঘটনা তার সমীকরণ অনেকটাই বদলে দিয়েছে। ট্রাম্প এ দিন আসাদকে ‘কসাই’ বলতেও ছাড়েননি। আমেরিকা মনে করছে, প্রেসিডেন্টের এই অবস্থানে ভরসা পাবেন মিত্র দেশের নেতারাও। ট্রাম্পের সঙ্গে পুতিনের ‘সুসম্পর্ক’ নিয়ে যাঁরা উদ্বিগ্ন ছিলেন। তবে নেতিবাচক কথার পাশাপাশি ট্রাম্পের বক্তব্য, ‘‘পুতিন কী করেন, তা আরও কিছু দিন দেখতে হবে। যদি তাঁর সঙ্গে আমাদের মতের মিল হয়, ভাল। তবে সেটা হতেও পারে, না-ও পারে।’’

এর মধ্যে সিরিয়ার বুকে মার্কিন হানা বিতর্কে নয়া মাত্রা যোগ করেছে। আজ পেন্টাগন জানিয়েছে, গত মঙ্গলবার আমেরিকার নেতৃত্বে সামরিক জোট যে হামলা চালায়, তাতে ভুলবশত সিরিয়ার তাবকায় বিদ্রোহীদের (সিরীয় গণতান্ত্রিক বাহিনী) ১৮ জন প্রাণ হারিয়েছেন। পেন্টাগনের বিবৃতি অনুযায়ী, ‘‘জোট শক্তির অনুরোধে সিরিয়ার ওই অংশে হামলা চালানো হয়েছিল। তাদের দাবি ছিল, ওখানে আইএসের ঘাঁটি রয়েছে। কিন্তু সেখানে প্রকৃতপক্ষে সিরীয় গণতান্ত্রিক বাহিনীর শিবির ছিল।’’

বুধবার গভীর রাতে আবার আইএস-এর বিষাক্ত গ্যাস ডিপোয় মার্কিন জোট শক্তির হামলায় কয়েকশো মানুষের প্রাণ গিয়েছে বলে সরকারি টিভি চ্যানেলে দাবি করে সিরিয়া সেনা। মার্কিন জোট শক্তি অবশ্য এ দাবি উড়িয়ে দিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bashar al-Assad Syria
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE