ছবি: এএফপি।
মাত্র চার দিন। তার মধ্যেই যেন পৃথিবী পাল্টে গিয়েছে ফোক্সভাগেনের। বড়সড় ধাক্কা গাড়ি তৈরিতে জার্মান ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের গর্বেও।
গত শুক্রবারই মার্কিন মুলুকে সামনে এসেছে জার্মান গাড়ি বহুজাতিকটির দূষণ কেলেঙ্কারি। জানা গিয়েছে, সেখানে কার্বন নির্গমনের মাত্রা পরীক্ষায় যাতে ধরা না-পড়ে, তার জন্য কারচুপি করেছে ফোক্সভাগেন। ডিজেল গাড়ি তৈরির সময়ই তাতে বসিয়ে রেখেছে এমন সফটওয়্যার, যাতে তা চলার সময় আসলে যা দূষণ হচ্ছে, সেটি কমিয়ে দেখানো যায়। পরীক্ষা করতে গেলেই চালু হয়ে যায় ওই সফটওয়্যার। আর তার ফলে দূষণের মাত্রা নেমে আসে আসলের তুলনায় অনেক নীচে।
তার পর থেকেই আমেরিকা, ইউরোপ, এমনকী এশিয়াতেও একের পর এক দেশে তদন্তের মুখে পড়তে হচ্ছে জার্মান গাড়ি নির্মাতাটিকে। পরিস্থিতি এতটাই সঙ্গিন যে, এই দূষণ কেলেঙ্কারির ধাক্কা সামলাতে চলতি ত্রৈমাসিকে ৭৩০ কোটি ডলার (প্রায় ৪৭,৪৫০ কোটি টাকা) সরিয়ে রাখার কথা জানাতে বাধ্য হয়েছে ফোক্সভাগেন। স্বীকার করে নিয়েছে, ১.১ কোটি ডিজেল গাড়িতে দূষণ আইন ফাঁকি দেওয়ার ওই প্রযুক্তি ব্যবহার করেছে তারা। এক বার নয়, পর পর দু’দিন ক্ষমা চাইতে হয়েছে ফোক্সভাগেন সিইও মার্টিন উইন্টারকর্নকে। তাঁর চাকরি খোয়ানো নাকি স্রেফ সময়ের অপেক্ষা।
মুখ বাঁচাতে মরিয়া উইন্টারকর্ন জানিয়েছেন, বাইরের সংস্থাকে দিয়ে নিরপেক্ষ তদন্ত করানো হচ্ছে। কিন্তু তাতেও চিঁড়ে ভেজেনি। বরং ফ্রাঙ্কফুর্ট স্টক এক্সচেঞ্জে সোম এবং মঙ্গলবার দু’দিনে যথাক্রমে ১৭% এবং ১৮% পড়েছে সংস্থার শেয়ার দর। মুছে গিয়েছে শেয়ারমূল্যের ভিত্তিতে হিসাব করা সংস্থার দামের এক তৃতীয়াংশ। অনেকে বলছেন, শুধু ফোক্সভাগেন নয়, আগামী দিনে এই ঘটনা কালো ছোপ ফেলতে পারে ‘মেড ইন জার্মানি’র মর্যাদার উপরেই। অবস্থা বেগতিক বুঝে মাঠে নেমেছেন খোদ জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা মের্কেল। ইতিমধ্যেই সংস্থার কর্তাদের সঙ্গে কথাবার্তা বলেছেন তিনি। দ্রুত সত্যিটা সবার সামনে আসবে বলেও তাঁর আশা।
জার্মানির জাতীয় আয়ের ৪৫ শতাংশই আসে রফতানি থেকে। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা গাড়ি শিল্পের। ফলে ফোক্সভাগেনের দূষণ কেলেঙ্কারি যে তাতে দীর্ঘমেয়াদি ধাক্কা দিতে পারে, সেই আশঙ্কার কথা শোনা গিয়েছে অর্থমন্ত্রী সিগমার গ্যাব্রিয়েলের গলায়। আগামী দিনে এর জেরে মুনাফাও অনেক কমতে পারে বলে শঙ্কা সংস্থারই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy