ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কি। ফাইল ছবি।
অর্থ ও অস্ত্রসাহায্য নিয়ে ইউক্রেনের পাশে আমেরিকা-ইউরোপ। প্রতিপক্ষ রাশিয়ার পাশে শক্তিশালী দেশ বলতে একমাত্র চিন। সেই চিনের সঙ্গেও এ বার কূটনৈতিক আলোচনায় আগ্রহ প্রকাশ করলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কি। জানালেন, চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে দেখা করে শান্তি আলোচনা নিয়ে কথা বলতে চান তিনি।
পশ্চিমি শক্তিরা ইউক্রেনের পাশে দাঁড়ালেও যুদ্ধ শেষের বার্তা দিচ্ছেন না কেউ। আমেরিকান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বরং বলেছেন, আরও কঠিন সময় আসছে। আমেরিকা, ব্রিটেন-সহ ইউরোপের প্রায় সব দেশই অস্ত্র দিয়ে সাহায্য করছে। পোল্যান্ডের পাঠানো চারটি লেপার্ড-২ ট্যাঙ্ক আজ ইউক্রেনে পৌঁছেছে। আরও দশটা ট্যাঙ্ক কিভে আসবে বলে জানিয়েছে তারা। সুইডেনও অস্ত্র পাঠাচ্ছে বলে জানিয়েছে। যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনকে ২৫০ কোটি ডলার অর্থসাহায্য দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে বিশ্ব ব্যাঙ্ক। এই অবস্থায় যুদ্ধের বর্ষপূর্তিতে একমাত্র চিনই যুদ্ধ শেষের প্রস্তাব দিয়েছে। সেই প্রস্তাবনা নিয়েই এ বার শি-র সঙ্গে আলোচনায় বসতে চান জ়েলেনস্কি।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, চিনের প্রস্তাবপত্রটি পড়ে বোঝা গিয়েছে, ওরা সত্যিই শান্তির সন্ধান করছেন। জাতীয় সার্বভৌমত্বকে সম্মান করে ওরা। চিনের প্রস্তাবপত্রে ১২টি পয়েন্ট উল্লেখ করা হয়েছে। তাতে অবশ্য কোথাও লেখা হয়নি, ইউক্রেনের মাটি থেকে রুশ সেনা প্রত্যাহার করা উচিত। বরং লেখা হয়েছে, একতরফা ভাবে একটি দেশের উপরেই নিষেধাজ্ঞা চাপানো হচ্ছে। যা এক প্রকার পরোক্ষে ইউক্রেনের মিত্র-শক্তি পশ্চিমের ভূমিকার নিন্দা করা। গত কাল জার্মানির একটি সংবাদ সংস্থা তাদের রিপোর্টে দাবি করেছে, রাশিয়াকে অস্ত্র সরবরাহ করবে চিন। অতিশক্তিশালী বিস্ফোরকবাহী ড্রোন পাঠাবে তারা। আমেরিকান বিদেশ সচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন অবশ্য এ সপ্তাহের গোড়াতেই বলেছিলেন, রাশিয়াকে অস্ত্র পাঠানোর কথা ভাবছে চিন। বেজিং অবশ্য স্বীকার করেনি। জ়েলেনস্কি আজ বলেন, ‘‘আমি সত্যিই বিশ্বাস করতে চাই, চিন রাশিয়াকে অস্ত্র সরবরাহ করবে না।’’
শি-র সঙ্গে জ়েলেনস্কির সাক্ষাৎ করতে চাওয়া, কিংবা তাঁর অন্যান্য বক্তব্য নিয়ে কোনও মতামত প্রকাশ করেনি চিন। ইতিমধ্যে চিনের শান্তি প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছে রাশিয়া। মস্কোর বিদেশ মন্ত্রক একটি বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, ‘‘বেজিংয়ের সঙ্গে আমরা একমত।’’ বেজিংয়ের প্রস্তাব নিয়ে বাইডেনকে প্রশ্ন করা হয়েছিল। তাঁর কথায়, ‘‘ওই প্রস্তাবনায় আমি এমন কিছু দেখিনি, যাতে রাশিয়া ছাড়া আর কারও উপকার হবে।’’
সম্প্রতি রাশিয়া সফরে গিয়েছিলেন চিনের শীর্ষস্থানীয় কূটনীতিক ওয়াং ই। পুতিন এবং বিদেশ মন্ত্রী সের্গেই লাভরভের সঙ্গে দেখা করেন তিনি। তার পরেই শান্তি প্রস্তাবটি পেশ করে চিন। যুদ্ধ বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রবল বিরোধিতার মধ্যে রাশিয়ার মুখ বাঁচাতে চিন হয়তো এই কাজ করছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy