Advertisement
E-Paper

সন্তান নীতির চাপে শিশু পাচার চক্র আন্তর্জালে

জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে আনতে এসেছিল সন্তান নীতি। আর আইনের সঙ্গে সঙ্গে তৈরি হয়েছে নিয়মের ফাঁকও। যে ফাঁক গলে চিনে রমরমিয়ে বাড়ছে অন-লাইন শিশু পাচার। সরকারি তদন্তেই উঠে এসেছে সে তথ্য। সম্প্রতি এক সন্তান নীতি লঘু করায় বহু বাবা-মা দ্বিতীয় সন্তানের জন্ম দিচ্ছেন। কিন্তু তারও বেশি ছেলেমেয়ে হলে মোটা অঙ্কের জরিমানা দিতে হবে সরকারকে।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০১৪ ০২:১৮

জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে আনতে এসেছিল সন্তান নীতি। আর আইনের সঙ্গে সঙ্গে তৈরি হয়েছে নিয়মের ফাঁকও। যে ফাঁক গলে চিনে রমরমিয়ে বাড়ছে অন-লাইন শিশু পাচার। সরকারি তদন্তেই উঠে এসেছে সে তথ্য।

সম্প্রতি এক সন্তান নীতি লঘু করায় বহু বাবা-মা দ্বিতীয় সন্তানের জন্ম দিচ্ছেন। কিন্তু তারও বেশি ছেলেমেয়ে হলে মোটা অঙ্কের জরিমানা দিতে হবে সরকারকে। সেই সঙ্গে শাস্তি। তদন্ত রিপোর্টে দাবি, সেই জরিমানা কিংবা গর্ভপাত এড়াতে বহু বাবা-মা সন্তানের জন্মের আগেই দত্তক নিতে পারে, এমন পরিবারের সন্ধান করছেন। রাস্তায় ফেলে দেওয়ার থেকেও ভাল ব্যবস্থা। এই পরিস্থিতিকে অস্ত্র করে ইন্টারনেটে গজিয়ে উঠেছে বহু ওয়েবসাইট। যারা দত্তক নেওয়ার নাম করে তৈরি করেছে বড়সড় শিশুপাচার চক্র।

এমনই এক ঠিকানা ‘এ হোম হোয়্যার ড্রিমস কাম ট্রু’-র খোঁজ পান লু লিবিং। তাঁর দুই সন্তান। একটির বয়স আড়াই বছর, অন্যটির ১০ মাস। স্ত্রী পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। লু জানালেন, তৃতীয় সন্তানটি হলে তাঁকে পরিবার পরিকল্পনা আইনে ৫০ হাজার থেকে ৮০ হাজার ইউয়ান জরিমানা দিতে হবে। যা লু-র মাসিক বেতনের প্রায় দশ গুণ। তা ছাড়া যে আসতে চলেছে, তাঁকে স্কুলে পাঠানো, খাওয়ানো-পরানোও তাঁর পক্ষে অসম্ভব, জানালেন লু নিজেই। তাই দত্তক দেওয়ার কথা মাথায় আসে। পথও ছিল হাতের কাছেই। ইন্টারনেটে সামান্য খোঁজ করতেই ঠিকানাটা পেয়ে যান।

লু-এর মতো বাবার সংখ্যা নেহাত কম নয়। ওই ওয়েবসাইটের তরফেই জানানো হয়েছে, ২০০৭ সাল থেকে ২০১২-র মধ্যে ৩৭,৮৪১ শিশুকে দত্তক নেওয়া হয়েছে তাদের মাধ্যমে। প্রশাসনিক কর্তাব্যক্তিরা বলছেন, দত্তক নেওয়ার নাম করে যা আদপে শিশু বেচাকেনা। শুধুমাত্র গত মাসেই ৩৮০টি বাচ্চাকে উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে শিশু পাচার চক্রে জড়িত ১০৯৪ জনকে।

এক অফিসারের মতে, এ ভাবে পাচার চক্রগুলোকে ইন্ধন দিচ্ছে দেশের এক সন্তান নীতি, গ্রামীণ দারিদ্র, ও সন্তানহীন বাবা-মা। আবার এমন ঘটনাও আছে যে, পুত্রসন্তানের আশায় একের পর এক মেয়ে হয়েছে। আর সেই মেয়েদের ওয়েবসাইটে বেচে দিয়েছেন বাবা-মা। তার সহজ পথ করে দিয়েছে আন্তর্জাল দুনিয়া। লু যেমন ওই ওয়েবসাইটে তাঁর ইচ্ছের কথা জানাতে ইতিমধ্যেই ৪০ জন যোগাযোগ করেছেন।

গ্রেফতার করা হয়েছে ওই হোমের মালিক ঝৌ দাইফু-কে। পাচার চক্রের কথা পুরোপুরি অস্বীকার করেছেন ঝৌ। যদিও এটা মেনে নিয়েছেন যে, বহু ক্ষেত্রেই পাচারকারীরা তাদের ওয়েবসাইট থেকে বাচ্চা ‘দত্তক’ নেন।

আবার এমন বাবা-মাও আছেন, যাঁরা রীতিমতো অর্থের বিনিময়ে সন্তানকে তাদের সংস্থার হাতে তুলে দেন। ৩০ হাজার না ৫০ হাজার ইউয়ান, দর কষাকষি করেন। এদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হবে কি না, জানাতে পারেনি প্রশাসন। আপাতত ওয়েবসাইট তুলতেই উঠে পড়ে লেগেছে তারা। লু যদিও চিন্তায়, পুলিশ-সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার পর তাঁদের সন্তানকে আর কেউ দত্তক নেবে কি না!

children policy beijing
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy