Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
Flash Flood in Sikkim

সিকিমে হ্রদ-বিপর্যয়ের কারণ বড় ধস, বিরাট বিরাট পাথর এসে পড়ে জলে, রিপোর্ট গেল দিল্লিতে

বিপর্যয়ের পরেই দক্ষিণ লোনাক হ্রদের ভাঙনের পিছনে তিনটি সম্ভাব্য কারণ আলোচনায় উঠে এসেছিল। হিমবাহ গলে ধস, প্রবল মেঘভাঙা বৃষ্টি এবং ভূমিকম্প। ঘটনার সময় উত্তর সিকিমে জোর বৃষ্টি হয়নি।

sikkim flood

উপরে, ২৯ সেপ্টেম্বর, ধসের আগের লোনাক হ্রদ। নীচে, ৬ অক্টোবর, ধসের পরের উপগ্রহ চিত্র। ছবি: রয়টার্স।

কৌশিক চৌধুরী
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০২৩ ০৬:৩১
Share: Save:

পাহাড়ে নেমেছিল বড়সড় ধস। তাতেই সম্ভবত বিরাট বিরাট পাথর ভেঙে এসে পড়ে দক্ষিণ লোনাক হ্রদের উপরে। হ্রদের দক্ষিণ-পশ্চিম পাড় ভেঙে প্রবল বেগে জল বেরোতে শুরু করে। সরকারি সূত্রের খবর, গত কয়েক দিন ধরে নানা জায়গা থেকে তথ্য সংগ্রহ করে এবং উপগ্রহ-ছবি বিশ্লেষণ করে এই কথাই জানিয়েছে সিকিমের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি দফতর। সূত্রের খবর, একই মত হায়দরাবাদের ‘ন্যাশনাল রিমোট সেনসিং সেন্টার’ (এনআরএসসি)-এরও। সিকিম সরকারের পক্ষ থেকে এই মর্মে একটি রিপোর্টও পাঠানো হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারকে। কিন্তু পাহাড়ের উপরে ধস কেন নামল, তা এখনও কারও কাছেই স্পষ্ট নয়।

সিকিমের সরকারি সূত্রের বক্তব্য, সে ধস আচমকাই নেমে এসেছিল হ্রদের উপরে। তার ফলে, হ্রদের দক্ষিণ-পশ্চিম পাড় ভেঙে প্রবল বেগে জল বেরোতে শুরু করে। হ্রদ থেকে জল বেরনোর রাস্তাটি অস্বাভাবিক চওড়া হয়ে পড়ে। রবিবার সিকিম বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি দফতর এই তথ্য সামনে এনেছে। সিকিম প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, ‘‘দেশের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সীমান্তবর্তী এলাকা সিকিম। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণ অনুসন্ধান নিয়ে কাজ চলছে। দিল্লিতেও তথ্য জানানো হয়েছে। ইসরো বা এনআরএসসি-র উচ্চ হিমালয়ের বিভিন্ন প্রান্তের পরিস্থিতিতে নজর রাখছে।’’

বিপর্যয়ের পরেই দক্ষিণ লোনাক হ্রদের ভাঙনের পিছনে তিনটি সম্ভাব্য কারণ আলোচনায় উঠে এসেছিল। হিমবাহ গলে ধস, প্রবল মেঘভাঙা বৃষ্টি এবং ভূমিকম্প। ঘটনার সময় উত্তর সিকিমে জোর বৃষ্টি হয়নি। কেন্দ্রীয় ভূমিকম্প নিয়ামক সংস্থার তথ্য বলছে, দক্ষিণ লোনাক হ্রদ থেকে ১৫০ কিলোমিটার পরিধির মধ্যে গত দুই সপ্তাহে দু’টি মাঝারি এবং দু’টি ছোট ভূমিকম্প হয়েছে। পর পর কম্পনে হ্রদের তলদেশে বড় ফাটল হতে পারে অথবা হ্রদের কোনও অংশ ভেঙে বিশাল জলরাশি নিচে নেমে আসতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছিল। যদিও সিকিমের সরকারি সূত্রের বক্তব্য, শেষ পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে, ধস নামাতেই বিপত্তি। তা ভূমিকম্পের জেরে বা তাপমাত্রার আচমকা পরিবর্তনে হতে পারে বলে আধিকারিকেরা মনে করছেন।

ক্ষয়ক্ষতি খতিয়ে দেখে কেন্দ্রের তরফে অনুদান ঘোষণা জন্য এ দিনই সিকিমে পৌঁছন অন্তর্মন্ত্রক কেন্দ্রীয় দলের (আইএমসিটি) সদস্যেরা৷ পৌঁছেছেন ‘চিফ অব আর্মি স্টাফ’ জেনারেল মনোজ পান্ডেও। তিনি সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী প্রেম সিংহ তামাংয়ের সঙ্গে বৈঠক করেন। আর সিকিমের মুখ্যসচিব ভি বি পাঠক কেন্দ্রীয় দলের সদস্যদের নিয়ে গ্যাংটকে বৈঠক করেছেন। সেখানে সিকিম দুর্যোগ মোকাবিলা দফতরের অধিকর্তা প্রভাকর রাই বিপর্যয়ের কারণ, ঘটনাক্রম তুলে ধরেন। কেন্দ্রীয় দলের সদস‌্যেরা সিকিমের দুর্গত এলাকাগুলি দু’দিন ধরে ঘুরে দেখবেন। সিকিমের মুখ্যসচিব বলেছেন, ‘‘বিপর্যয়ের কারণ থেকে প্রভাব, সবই জানানো হচ্ছে। কেন্দ্রীয় সরকারের বরাদ্দ এই প্রতিনিধি দলের রিপোর্টের উপরে নির্ভর করবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

sikkim flood Cloud burst
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE