Follow us on

Download the latest Anandabazar app

© 2021 ABP Pvt. Ltd.

Advertisement

১৯ এপ্রিল ২০২৪ ই-পেপার

Spring Diseases: বসন্তের হাওয়া সুখের পাশাপাশি ডেকে আনে নানা অসুখও, কী খাবেন এ সময়ে

যতই মন ভাল করা আবহাওয়া হোক, রোগে পড়ারও এই হল সময়৷ নতুন পাতায়, ফুলে যত সেজে উঠছে প্রকৃতি, তত বাতাসে ভেসে আসছে রোগ-ব্যাধির উপকরণ৷

সুজাতা মুখোপাধ্যায়
কলকাতা ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১২:১১

বসন্তে সুস্থ থাকতে কী খাবেন

দিনে হালকা ঠান্ডা, ফুরফুরে বাতাস৷ রাতে পাতলা চাদরের ওম৷ কিন্তু যতই মন ভাল করা আবহাওয়া হোক, রোগে পড়ারও এই হল সময়৷ নতুন পাতায়, ফুলে যত সেজে উঠছে প্রকৃতি, তত বাতাসে ভেসে আসছে পরাগ ও অ্যালার্জির অন্যান্য উপকরণ৷ অ্যালার্জির ধাত থাকলে আর কথা নেই৷ হাঁচির পর হাঁচি, নাক দিয়ে জল পড়া, কাশি, গলা চুলকুনি, চোখ চুলকুনি হচ্ছে কথায় কথায়৷


জীবাণুদেরও পোয়াবারো৷ রাইনোভাইরাসের দাপটে হাঁচি-সর্দি-কাশি-জ্বরের মেলা বসেছে ঘরে ঘরে৷ ম্যালেরিয়া, জল বসন্ত, হাম বা মাম্পসের মতো অসুখ-বিসুখেরা আসছে গুটি গুটি৷ বারোমেসে পেটের গোলমাল তো আছে, ভালমন্দ খাওয়ার সুবাদে বাড়ছে তারাও৷

তো কী করণীয়? প্রিয় এই ঋতু কি তবে অসুখ-বিসুখেই কেটে যাবে! না কি সহজ কোনও সমাধান আছে?

Advertisement

প্রকৃতিতে আছে সমাধান

প্রকৃতিতে যেমন রোগ আছে, আছে তার সমাধানও৷ যে ঋতুর যে রোগ, সেই ঋতুর শাক-সব্জি-ফলেই তার সমাধান৷ বাজারি খাবারের বদলে মরসুমের খাবার খেলে তাই সুস্থ থাকে শরীর৷

দাম দিয়ে অসময়ের সব্জি-ফল না খেলে মরসুমি শাক-সব্জি-ফলই খান৷

দাম দিয়ে অসময়ের সব্জি-ফল না খেলে মরসুমি শাক-সব্জি-ফলই খান৷


ছেলেবেলার কথা ভাবুন, যখন সকাল শুরু হত নিমপাতা ও কাঁচা হলুদ দিয়ে৷ খালিপেটে ৪-৫টি নিমপাতা চিবিয়ে খেতে হত৷ মুখের তেতো কাটাতে তার পর কাঁচা হলুদ, গোলমরিচ ও আখের গুড়৷ কারণ এরা সব জীবাণুনাশক৷ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে হাঁচি-কাশি-জ্বরজারি, পেটের গোলমাল ঠেকাতে সিদ্ধহস্ত৷ তাই দিন শুরু হত তাদের দিয়ে৷ নিমের নিম্বিন, নিম্বোলাইড থেকে শুরু করে ১৩০টি উপাদান, হলুদের কারকিউমিন, গোলমরিচের পিপারিন, সব মিলেমিশে সারা দিনের লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত করে দিত শরীরকে৷

কাঁচা নিমপাতা খেতে না পারলে ভাতের পাতে খান নিম-বেগুনের তরকারি৷ নিমের সঙ্গে যুক্ত হবে বেগুনের গুণ৷ তাতে এক দিকে যেমন জীবাণুনাশ হবে, শরীরে প্রদাহের প্রবণতা কমে বশে থাকবে অসুখ-বিসুখ৷ প্রোটিন, ভিটামিন ও মিনারেলের গুণে সমৃদ্ধ হবে শরীর৷ কম ক্যালোরি ও বেশি ফাইবার থাকায় বশে থাকবে ওজনও৷

কাঁচা নিমপাতা খেতে না পারলে ভাতের পাতে খান নিম-বেগুনের তরকারি৷

কাঁচা নিমপাতা খেতে না পারলে ভাতের পাতে খান নিম-বেগুনের তরকারি৷


তার পাশাপাশি খান সজনে ডাঁটা ও ফুল৷ শরীর পাবে প্রোটিন, ভিটামিন, ক্যালশিয়াম, অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট৷ প্রদাহের প্রবণতা কমবে৷ বাড়বে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা৷ রক্তচাপ, ডায়াবিটিস, হাঁপানি ইত্যাদির প্রকোপ কমাতেও এই সব্জিটি অনন্য৷ কাজেই ডালে, ঝোলে, শুক্তোয় সজনে ডাঁটা দিন৷ সজনে ফুল দিয়ে তরকারি বানান বা কম তেলে বড়া ভেজে খান৷

সঙ্গে খাবেন এই ঋতুর সব রকম শাক ও সব্জি৷ পালং, মেথিশাক, মূলো শাক, ধনে পাতা, পেঁয়াজকলি, বাঁধাকপি, ফুলকপি, মুলো, মটরশুঁটি, বিট, গাজর, ব্রকোলি, ক্যাপশিকাম, টমেটো, নতুন আলু, শিম, বিনস, কুমড়ো, পটল— একেক দিন একেক রকম৷ সম্ভব হলে মিলিয়ে মিশিয়ে৷ সেদ্ধ করে, ডালে দিয়ে, তরকারি বানিয়ে, স্যালাড বা স্যুপ হিসেবে৷ এতে এক দিকে যেমন সব রকম ভিটামিন, মিনারেল, ফাইটোকেমিক্যালের দৌলতে ঋতু পরিবর্তনের অসুখ-বিসুখ কম হবে, পর্যাপ্ত ফাইবার পাবেন বলে পেটের গোলমাল কম থাকবে, ওজন কমবে, কমবে উচ্চ রক্তচাপ-সুগার-কোলেস্টেরলের প্রকোপ৷

ফল খান মূল খাবার খাওয়ার পর

অম্বলের ধাত না থাকলে যে কোনও সময়ে ফল খাওয়া যায়৷ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে অসুখ-বিসুখ দূরে থাকে৷ অনেকে খালি পেটেও খান৷ তবে এ সময় ভিটামিন সি-এ ঠাঁসা যে সমস্ত ফল পাওয়া যায়, যেমন, আঙুর, পেয়ারা, পেঁপে, কমলা, সবেদা, স্ট্রবেরি, আনারস, বেদানা ইত্যাদি, তা ভরা পেটে খাওয়াই ভাল৷ কারণ ভিটামিন সি-এর উপস্থিতিতে খাবারের আয়রন বেশি ভাল ভাবে শোষিত হয়৷ রক্তাল্পতার আশঙ্কা কমে৷

প্রকৃতিতে যেমন রোগ আছে, আছে তার সমাধানও৷

প্রকৃতিতে যেমন রোগ আছে, আছে তার সমাধানও৷


ভাতের পাতে লেবু খেলেও এক উপকার৷ ডালের সঙ্গে, স্যালাডে মিশিয়ে বা ধনেপাতার চাটনিতে মিশিয়ে লেবু খান৷ নিয়মিত ফল খেতে না পারলে এটুকুতেও কিছুটা কাজ হবে৷

ফল খান দিনে

রাতে ফল না খেয়ে খান দিনে৷ কারণ ফলে প্রচুর প্রাকৃতিক চিনি থাকে, যা এমনিতে উপকারী হলেও ওজন বাড়াতে পারে৷ বিকেলের মধ্যে ফল খেয়ে নিলে নানা কাজেকর্মে সেই চিনি খরচ হয়ে যায়, চর্বি হিসেবে জমতে পারে না৷ কিন্তু রাতে খেলে ও তার পরই শুয়ে পড়লে এই চিনির দৌলতে ওজন বেড়ে যেতে পারে৷

তবে একটা কথা খেয়াল রাখবেন, ঋতু পরিবর্তনে যদি সুস্থ থাকতে চান, বেশি দাম দিয়ে অসময়ের সব্জি-ফল না খেলে মরসুমি শাক-সব্জি-ফলই খান৷ এতে পুষ্টিও বেশি হবে৷

Advertisement