E-Paper

স্বাস্থ্যকর্মীদের ডেঙ্গি সমীক্ষার কাজে বাধা, হেনস্থার অভিযোগ

আধিকারিকদের একাংশের বক্তব্য, ডেঙ্গি সমীক্ষার কাজে এ ধরনের ঘটনার প্রবণতা দেখা দিলে, প্রতিরোধের কাজে সমস্যা দেখা দেবে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ অগস্ট ২০২৩ ০৯:১৪
প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

ডেঙ্গির সমীক্ষার কাজ করতে গিয়ে প্রচণ্ড বাধার মুখে পড়তে হল শিলিগুড়ি পুরসভার কর্তব্যরত স্বাস্থ্যকর্মীদের। এ নিয়ে থানায় অভিযোগও দায়ের করেছেন ক্ষুব্ধ স্বাস্থ্যকর্মীরা। এমন হলে কাজে যাবেন না বলেও জানিয়ে দিয়েছেন তাঁরা। সোমবার পুরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ঘটনা।

কর্মীরা এলাকার পুরপ্রতিনিধি, সুপারভাইজ়ারদের জানালেও, পুর কর্তৃপক্ষের কাছে তা নিয়ে প্রথম দিকে কোনও খবর ছিল না। পরে, মঙ্গলবার খবর পেয়ে তাঁরাও নড়েচড়ে বসেন। পুলিশে অভিযোগ জানানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়। তার পরে, এ দিন অভিযোগ জানানো হয়। পুলিশ সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ওই এলাকায় গেলেও, অভিযুক্তদের কাউকে দেখা যায়নি বলে দাবি।

ডেঙ্গি সমীক্ষার কাজে যুক্ত স্বাস্থ্যকর্মী আরতি দাসের অভিযোগ, সোমবার তিনি এবং রিঙ্কু মাহাতো সমীক্ষা করতে যান ৫ নম্বর ওয়ার্ডে প্রদীপ মাহাতোর বাড়িতে। বাড়িতে পরিত্যক্ত পাত্রে জল থাকায় তাঁরা সেই জল ফেলে দেন। আরতির বক্তব্য, কোথাও জল জমে রয়েছে নজরে পড়লে, সেটা পরিষ্কার করে পাত্র উল্টো করে দেওয়া তাঁদের কাজের অঙ্গ। সে সঙ্গে নিয়ম অনুযায়ী জলের পাত্র, বাড়ির পরিস্থিতির ছবিও তুলতে হয়। কিন্তু কেন পাত্রের জল ফেলা হল, তা নিয়ে ওই বোঝাতে গেলে, পরিবারের লোকেরা মেনে নিতে চাননি। উল্টে, প্রদীপ এবং তাঁর স্ত্রী শারীরিক ভাবে সমীক্ষার কাজে যুক্ত কর্মীদের শারীরিক হেনস্থা করেন এবং গায়ে হাত দেন বলে অভিযোগ। এর পরে, ক্ষুব্ধ ওই কর্মীরা ওই এলাকা থেকে চলে আসেন।

তাঁরা সুপারভাইজ়ার এবং পুরপ্রতিনিধিকে ঘটনা জানান। এ ব্যাপারে পুরপ্রতিনিধি অনিতা মাহাতো এ দিন বলেন, ‘‘ওই বাড়িতে বরো থেকে কর্মীরা গিয়েছিলেন সমস্যার বিষয়টি নিয়ে জানতে। আমিও গিয়েছিলাম। বিষয়টি মিটিয়ে নেওয়া হয়েছে।’’

আধিকারিকদের একাংশের বক্তব্য, ডেঙ্গি সমীক্ষার কাজে এ ধরনের ঘটনার প্রবণতা দেখা দিলে, প্রতিরোধের কাজে সমস্যা দেখা দেবে। এমনিতেই অনেকে স্বাস্থ্যকর্মীদের বাড়িতে ঢুকতে দিতে চান না। সমস্যা মেটাতে পুর কর্তৃপক্ষও যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছেন না বলে আগেও স্বাস্থ্যকর্মীরা অভিযোগ করেছিলেন। অথচ, গত বছর এই ওয়ার্ডেই ডেঙ্গি মারাত্মক আকার নেয়। বিভিন্ন বাড়িতে জমা জলেই মশার লার্ভা মিলেছিল এই ৫ নম্বর ওয়ার্ডেই। ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে এই ওয়ার্ডে একাধিক ব্যক্তির মৃত্যুও ঘটেছে। তার পরেও বাসিন্দাদের একাংশের মধ্যে সচেতনতার অভাব থাকায় চিন্তিত আধিকারিকেরা।

পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের মেয়র পারিষদ দুলাল দত্ত বলেন, ‘‘বিষয়টি খোঁজ নিয়ে, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। স্বাস্থ্যকর্মীদের কাজে বাধা দিলে সমস্যা হবে। রোগ প্রতিরোধের কাজে তাঁদের সাহায্য করাই বাসিন্দাদের উচিত।’’ অভিযুক্ত প্রদীপ মাহাতোর ফোন বন্ধ থাকায় তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। পুলিশও বাড়িতে গিয়ে তাঁদের পায়নি বলে দাবি। আজ, বুধবার পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের আধিকারিকেরা এলাকায় যাবেন।

সমীক্ষার কাজে যুক্ত কর্মীদের দাবি, ‘‘কাজ করতে গিয়ে এ ভাবে হামলার শিকার হলে মুশকিল। আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।’’ পুরসভার আধিকারিকেরা এসে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে না দেখলে তাঁরা কাজে যাবেন না বলেও জানিয়েছেন। পুর কমিশনার সোনম ওয়াংদি ভুটিয়া বলেন, ‘‘পুলিশকে বলে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Dengue Siliguri

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy