দুর্গাপুজো শেষ, বিজয়ার শুভেচ্ছা জানানোর পর্ব শুরু। এই সময়ে আত্মীয়-বন্ধুদের আপ্যায়নে মিষ্টিমুখ করানো বাঙালির এক চিরন্তন সংস্কৃতি। এ বছর দোকান থেকে মিষ্টি না কিনে, নিজের হাতে বাড়িতেই তৈরি করুন ঐতিহ্যবাহী ও সুস্বাদু 'গজা'। খুব কম উপকরণে, সহজেই তৈরি করা যায় এই মুচমুচে মিষ্টি। কী ভাবে বানাবেন? দেখে নিন ধাপে ধাপে।
বাড়িতেই মিষ্টি গজা তৈরি করার জন্য চাই - ময়দা: ২ কাপ (২৫০ গ্রাম), ঘি বা তেল (ময়ান দেওয়ার জন্য): ৪ টেবিল চামচ, বেকিং সোডা: ১/৪ চা চামচ (ঐচ্ছিক), জল: পরিমাণ মতো (ঠান্ডা জল হলে ভাল)। এ ছাড়াও চিনির সিরা বা রস তৈরির জন্য লাগবে - চিনি: ২ কাপ, জল: ১ কাপ, ছোট এলাচ গুঁড়ো: ১/২ চা চামচ (গন্ধ ও স্বাদের জন্য)।
প্রথমেই একটি পাত্রে ময়দা এবং বেকিং সোডা নিয়ে ভাল ভাবে মেশান। এ বার এতে ৪ টেবিল চামচ ঘি বা তেল দিয়ে আলতো হাতে মিশিয়ে নিন। এমন ভাবে মেশাতে হবে যেন মিশ্রণটি হাতে নিয়ে মুঠো করলে দলা পাকিয়ে যায়। এটিই গজা মুচমুচে হওয়ার মূল রহস্য।
এর পরে ময়ানের সঙ্গে সামান্য জল মিশিয়ে একটি শক্ত মণ্ড তৈরি করুন। খেয়াল রাখবেন, তা যেন নরম না হয়। ময়দার মণ্ড শক্ত হলে গজা তেলে ছাড়ার পরে ভেঙে যাবে না এবং গজার ভিতরে স্তর তৈরি হবে। মণ্ড তৈরি হলে ভিজে কাপড় দিয়ে ঢেকে অন্তত ৩০ মিনিটের জন্য রেখে দিন।
৩০ মিনিট পর ময়দার মণ্ডটিকে আরও এক বার ভাল করে মেখে নিন। এবার তাকে মোটা করে লুচির মতো বেলে নিন। এ বার এই বেলা রুটিটিকে চার বা ছয় ভাঁজ করুন। ভাঁজ করা অংশটি আবার বেলে নিন। এভাবে কমপক্ষে ৩ বার ভাঁজ করে বেলার প্রক্রিয়াটি পুনরাবৃত্তি করুন। এই পদ্ধতিতেই গজার ভেতরে নিখুঁত স্তর তৈরি হবে।
৩ বার ভাঁজ করার পরে মণ্ডটিকে প্রায় আধ ইঞ্চি পুরু একটি বড় রুটির মতো বেলে নিন। এ বার ছুরি দিয়ে লম্বা লম্বা বা ছোট চৌকো আকৃতিতে গজা কেটে নিন। গজাগুলি খুব বেশি পাতলা করে কাটবেন না, কারণ তেলে ভাজার সময়ে এরা কিছুটা ফুলবে।
এ বার অন্য একটি পাত্রে চিনি ও জল নিয়ে মাঝারি আঁচে বসান ও সিরা তৈরি করুন। চিনি গলে যাওয়ার পরে সিরাটি ফুটতে দিন। সিরা ঘন ও চটচটে হলে এলাচ গুঁড়ো মিশিয়ে আঁচ বন্ধ করে দিন। গজার সিরা এমন হওয়া উচিত যাতে তা ঝরে না গিয়ে গজার গায়ে জমে থাকে।
অন্য দিকে, একটি কড়ায় ডুবো তেলে গজা ভাজার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে তেল নিয়ে একেবারে কম আঁচে বসান। তেল হালকা গরম হলে গজার টুকরোগুলি সাবধানে তেলে ছেড়ে দিন। মনে রাখবেন, তেল খুব গরম হলে গজা বাইরের দিক থেকে তাড়াতাড়ি লাল হয়ে যাবে, কিন্তু ভিতরে কাঁচা থাকবে।
গজাগুলিকে কম আঁচে ধীরে ধীরে ভাজতে থাকুন। গজাগুলি যখন হালকা ফুলে উঠবে এবং তেলের উপরে ভেসে উঠবে, তখন সাবধানে সেগুলিকে উল্টে দিন। সোনালি হওয়া পর্যন্ত ভাজতে থাকুন। মুচমুচে করার জন্য ধৈর্য ধরে কম আঁচে ভাজা খুবই জরুরি। গজা সোনালি হলে তেল থেকে তুলে কিচেন টিস্যুর উপরে রাখুন।
তেল থেকে তোলা গরম গজাগুলিকে দ্রুত উষ্ণ চিনির সিরায় (চাশনিতে) ডুবিয়ে দিন। একটি চামচ দিয়ে গজাগুলিকে সিরায় কিছুক্ষণ উল্টে পাল্টে দিন, যাতে সিরার আবরণ ভাল ভাবে গজার গায়ে লেগে যায়। প্রায় ৫ থেকে ৭ মিনিট সিরায় ডুবিয়ে রাখার পরে গজাগুলি তুলে একটি প্লেটে রাখুন।
সিরা থেকে তোলার পর গজাগুলিকে একটি শুকনো প্লেটে কয়েক ঘণ্টা বা সারা রাত রেখে দিন। এতে চিনির সিরা শুকিয়ে গজার গায়ে সাদা চিনির আস্তরণ তৈরি হবে, যা দেখতে এবং খেতে ভাল লাগবে। সম্পূর্ণ শুকনো গজাগুলি এয়ারটাইট কন্টেনারে ভরে রাখুন। ঘরে তৈরি এই গজা প্রায় ১৫-২০ দিন পর্যন্ত মুচমুচে থাকবে। বিজয়ার দিনে আত্মীয়-বন্ধুরা এলে গরম কফি বা চা-এর সঙ্গে এই মুচমুচে গজা পরিবেশন করে 'শুভ বিজয়া'র শুভেচ্ছা বিনিময় করুন। (‘আনন্দ উৎসব ২০২৫’-এর সাফল্যের নেপথ্যে রয়েছেন একাধিক সহযোগী। প্রেজ়েন্টিং পার্টনার ‘মারুতি সুজ়ুকি অ্যারেনা’। অন্যান্য সহযোগীরা হলেন ওয়েডিং পার্টনার ‘এবিপি ওয়ানস্টপ ওয়েডিং’, ফ্যাশন পার্টনার ‘কসমো বাজ়ার’, নলেজ পার্টনার ‘টেকনো ইন্ডিয়া ইউনিভার্সিটি’, ব্যাঙ্কিং পার্টনার ‘ইউনিয়ন ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া’, কমফোর্ট পার্টনার ‘কার্লন’।) (এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।)