চিরকাল ভারত আপন করে নিয়েছে নানা দুনিয়াদারি। বিশ্বের নানা দেশের সংস্পর্শে এসে তাদের সংস্কৃতি, আচার-ব্যবহার সবই প্রায় ‘নিজেদের’ করে তুলতে সক্ষম হয়েছি আমরা। খাবারও বাদ নেই সেই তালিকায়। কিন্তু জানেন কি, যে সব খাবার প্রায় রোজ খেয়ে থাকেন, নিপাট ‘বাঙালি খাবার’ ভেবে— তার মধ্যে অনেক কিছুই ভারতীয় নয়! ছবি: আনস্প্ল্যাশ।
বাঙালির রোজের ডাল-ভাত খাওয়ার রেওয়াজটুকুও আদতে ভারতীয় নয়! শুনতে অবাক লাগলেও এটাই সত্যি। ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায়, একাদশ শতাব্দীর শেষ ভাগে নেপালের দক্ষিণাংশ দক্ষিণ ভারতের চালুক্য সাম্রাজ্যের অধীনে আসে। তখনই তাদের খাদ্যাভ্যাস ঢুকে পড়তে থাকে ভারতে। ভাত-ডালের এই ধারণা তাই নেপালেরই। ছবি: শাটারস্টক।
শিঙাড়া! যা কিনা মাঝে মাঝেই আপনার চা-এর সঙ্গে উপযুক্ত ‘টা’ হয়ে ওঠে, তা কিন্তু ভারতীয়দের সৃষ্টি নয়। ইতিহাসবিদদের মতে, ইরান থেকেই নাকি এ দেশে আসে শিঙাড়া বা সামোসা। ইরানি ইতিহাসবিদ আবুল ফজল বেহাকি তাঁর বইতে উল্লেখ করেছিলেন 'সাম্বোসা' নামের এক খাবারের। সে খান থেকেই শিঙাড়ার উৎপত্তি বলে খাদ্য-গবেষকদের মত। ছবি: পিক্সঅ্যাবে।
বিযেবাড়ি হোক বা ঘরোয়া মিষ্টিমুখ, গোলাপজামের কদর দিব্য করে ভারতীয়রা। কিন্তু এই খাবারেরও জন্ম ভারতে নয়। বরং পারস্যের মুসলসান শাসকদের রসুই ঘর থেকেই এই খাবারের আমদানি ভারতে। তার পরই তা জনপ্রিয়তা লাভ করে। ছবি: পিক্সঅ্যাবে।
রথের মরসুমে জিলিপি নিয়ে কথা হবে না তা কি হয়? কিন্তু বাঙালি যতই ভোজনরসিক হোক না কেন, এটা মানতেই হবে সবেদা গোলার ওই লোভনীয় পদ মোটেও ভারতের নয়। বরং মধ্যপ্রাচ্যের ‘জুলবিয়া’ থেকেই এই খাবারের এমন নামকরণ। ছবি: পিক্সঅ্যাবে।
বর্ষা কালে যে খাবার ছাড়া বাঙালির ঘরে হাঁড়ি চ়ড়ে না, তার জন্মও ভারতে নয়। ঠিকই ধরেছেন, খিচুড়ির কথাই বলছি। আজ থেকে ২৫০০ বছর আগে প্রতিবেশী চিন দেশ থেকে এই খাবার ঢুকে পড়ে ভারতীয় রান্নাঘরে। রান্নার মূল পদ্ধতি এক রেখে তাতে পরে অবশ্য যোগ হয়েছে নানা ভারতীয় মশলা। নিজস্ব চিত্র।
মন-মেজাজ তাজা করতে হোক, বা ঘরোয়া অভ্যর্থনা— বাঙালি চা ছাড়া ভাবতেই পারে না। কিন্তু এই চা-ও এসেছে চিনাদের হাত ধরেই। ১৬৫০ খ্রিস্টাব্দে চিনে বাণিজ্যিকভাবে চায়ের উৎপাদন শুরু হয়। আর ভরতে সেই চাষ শুরু হয় ১৮১৮ খ্রিস্টাব্দে। ছবি: পিক্সঅ্যাবে।