obesity

অতিরিক্ত ওজন, সঙ্গে হাঁটুর ব্যথা? অল্প পরিশ্রমের এ সব ব্যায়ামেই বাজিমাত!

চিকিৎসক যে ভাবেই হোক ওজন কমানোর পরামর্শ দেন। এই ‘যে ভাবেই হোক’ খুঁজতে গিয়েই মাথায় হাত। কী ভাবে করবেন সমাধান?

Advertisement

চিণ্ময় রায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ মে ২০১৯ ১২:৩৮
Share:

ওজন বাড়লে শরীরের ভার পড়ে হাঁটুতেই, ব্যথা জানান দেয় সে কথাই।

আজকাল হাতে হাতে স্মার্ট ফোন। আর ঘরে ঘরে হাঁটুতে ব্যথা। আগে চল্লিশ পেরলে টান ধরত হাঁটুতে আর এখন ত্রিশ সিঁড়ি ভাঙতে বললে মানুষ লিফট খোঁজেন। হাঁটুর ব্যথা আসলে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই অস্টিওআর্থ্রাইটিস। বয়স বাড়লে হাঁটুর হিঞ্জ জয়েণ্টের কার্টিলেজের ক্ষয় হয় আর তলার হাড়ও ক্ষয়ে যায়। এতে অনেকের হাঁটু ফুলেও যায়।

Advertisement

এটা বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হতে পারে আবার নিয়মিত টানা হাঁটা বা দৌড়ের ফলেও হয়। টানা হাঁটা বা দৌড়ের কারণে যে ব্যথাটা হয়, সেটা জয়েন্ট ওভারইউজের কারণে। সুতরাং চল্লিশের পর টানা হাঁটা বা দৌড় থেকে সাবধান।

এক্স-রে করে হাঁটুর অবস্থা দেখে চিকিৎসক ফিজিওথেরাপিস্টের দরজা দেখান। আর ৯০ শতাংশ মানুষের ওজন হয় বেশি। এতে হাঁটুকে অনেক বেশি বোঝা বইতে হয়। তাই চিকিৎসক যে ভাবেই হোক ওজন কমানোর পরামর্শ দেন। এই ‘যে ভাবেই হোক’ খুঁজতে গিয়েই মাথায় হাত।

Advertisement

আরও পড়ুন: এই ভুলগুলোর জন্যই আক্রান্ত হতে পারেন মারণ রোগে! সাবধান!

গড়পড়তা জিমে গেলে ট্রেডমিলে হাঁটা বা দৌড়ের নিদান দেন ট্রেনাররা। এতে হাঁটুর ব্যথা বেড়ে আরও বিপত্তি। ফলে পরিকল্পনা অমুযায়ী কাজ হয় না। আসলে ব্যথা নিয়ে ওজন কমানো কিন্তু একটা চ্যালেঞ্জ। এ বিষয়ে সম্যক জ্ঞান না থাকলে মুশকিল আসানের বদলে বিষয়টা জটিল হবে।

এ বিষয়ে প্রথম শর্তই হল ব্যথা বেশি থাকলে প্রথমে শুধুই ব্যথা কমানোর ব্যায়াম করতে হবে। ভুলে যান ওজনের বিষয়। ব্যথা ৪০ শতাংশ কমলে তখন ব্যথা আর ওজন কমানোর ব্যায়াম করুন।বাথা বেশি হলে চিকিৎসকের পরামশ ওষুধ খান। বরফ দেওয়ায় বাধা না থাকলে দিনে ৩ বার ২০ মিনিট করে বরফ দিন।

তবে ব্যথা বেশি থাকলে কী করবেন, আর ব্যথা ও ওজন দুই-ই কমানোর জন্য কী করতে হবে সেটা ঠিক মতো বুঝতে হবে বইকি!

টারমিনাল নি এক্সটেনশন: গোল রাবারের একটা ব্যান্ড জোগাড় করুন (ছবির মতো)। অত্যন্ত সস্তা। কোনও একটা আঙটা বা গ্রিলে ব্যান্ডটা লাগিয়ে একটা পা ওতে গলিয়ে দিন। ঠিক হাঁটুর কাছে। এবারে অন্য পা-টা পিছনে নিন। যে পায়ে ব্যান্ড লাগানো, সেই হাঁটু ভাঁজ করুন আর সোজা করুন। দু’পায়ে ১২ বার করে। এতে থাইয়ের পেশির জোর বাড়ে।

এক পায়ে দুলিটারের জলভর্তি বোতল তোলা-নামানো: দু’পায়ের হাঁটুর অংশে ব্যান্ডটা লাগিয়ে পা ফাঁক করে দাঁড়ান। এ বার এক পায়ে ভর রেখে দু’লিটারের বোতলটা মাথার উপরে তুলুন আর নামান। ডান-বাঁ দু’পায়ে ৬ বার করে মোট ১২ বার। ব্যথা থাকলে শুধুই এক পায়ে ১০ সেকেন্ড করে দাঁড়ানোর অভ্যাস করুন। দু’পায়েই ৬ বার করে। হাঁটুর ভারসাম্য রাখার ক্ষমতা বাড়ে এতে।

আরও পড়ুন: গরমে যখন তখন স্নান ডেকে আনছে ভাইরাল ফ্লু, কী ভাবে রুখবেন?

ব্রিজ: বিছানা বা মাটিতে চিত হয়ে শুয়ে পড়ুন। ব্যান্ডটা দুই হাঁটুর কাছে লাগিয়ে পা ভাঁজ করুন। ব্যথা থাকলে কোমর তুলে ব্যান্ডের টান বজায় রেখে কোমর ২০-৩০ সেকেন্ড শূন্যে ধরে থাকুন। ব্যথা কম থাকলে ব্রিজটা তুলুন আর মাটিতে নামান। মোট ১২ বার। হামস্ট্রিংয়ের জোরে বাড়ে এতে।

ব্যান্ড সাইড ওয়াক: গোড়ালির কাছে ছোট করে ব্যান্ডটা আটকান। এ বার ডান দিকে পাশাপাশি ১২ পা হাঁটুন, দু’পায়ের মাঝে বড় ফাঁক রেখে। এ বার বাঁ দিকে ১২ পা। দেখবেন ব্যান্ড থেকে তৈরি হওয়া বাধার বিপক্ষে হাঁটতে বেশ কষ্ট হচ্ছে। ব্যথা বেশি থাকলে বিছানাতে পাশাপাশি শুয়ে ওই একই জায়গাতে ব্যান্ডে লাগিয়ে পাশাপাশি পা তুলুন। বাম-ডান দু’দিকেই ১২ বার করে।

ব্যান্ড ব্যাক ওয়াক: ওই সাইড ওয়াকের মত ব্যান্ড লাগিয়ে পিছন দিকে এক পা এক পা করে ব্যাকওয়াক করুন। দু’পায়েই ১২ বার করে। ব্যাথা বেশি থাকলে বিছানায় উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ুন। ব্যান্ডটা আংটায় আটকে দুই হাঁটু একসঙ্গে কোমরের দিকে ভাঁজ করুন। মোট ১২ বার। থাইয়ের পিছনের পেশির জর বারে।

সিটেড জ্যাক: ব্যথা থাকুক বা না থাকুক সবাই করতে পারেন। একটা টুলে বসে একই সঙ্গে দু’পা ফাঁক করুন আর দু’হাতে এক লিটারের জল ভর্তি বোতল মাথার উপর তুলুন। মোট ২০ বার। ক্যালোরি ঝরে এতে।

ব্যথা বেশির দলে পড়লে এক একটা ব্যায়াম তিন বার করে করবেন। মাঝে মাঝে খানিক বিরাম থাকবে। ব্যথা আর ওজন দুই-ই কমানোর জন্য সবগুলো ব্যায়াম একটার পর একটা করুন বিশ্রাম না নিয়ে। পদ্ধতির নাম সার্কিট। মোট ৬ টা ব্যায়াম নিয়ে তৈরি হয় এক একটা সার্কিট। এক একটা সার্কিটের পর ২ মিনিট বিশ্রাম নিন। একসঙ্গে তিন-চারটে সার্কিট করুন। এতে ঘাম ঝরবে, ক্যালোরি বার্ন হবে আবার ব্যথা কমানোর কাজও একসঙ্গে হবে।

(ছবি সৌজন্য: প্রতিবেদক)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন