চলতি সময়ের ব্যস্ততা, কাজের চাপের কারণে ক্রমশই জনপ্রিয়ে হয়ে উঠেছে ইন্সট্যান্ট ও প্রি-কুকড নুডলস। প্যাকেট খুলেই মাত্র ২ মিনিটে বানিয়ে ফেলা যাবে এমন খাবারের প্রেমে পড়েছিলেন ব্যাকপ্যাক নেওয়া ভ্রমণপিপাসু থেকে শুরু করে হোস্টেলে থাকা পড়়ুয়ারা। বাচ্চার আবদার মেটাতে চটজলদি বানিয়ে দিতে নুডলসকেই সহজে বেছে নিয়েছিলেন মায়েরাও। লাঞ্চ, ডিনার, ব্রেকফাস্ট দিনের যে কোনও সময়ই ইন্সট্যান্ট নুডলসের জনপ্রিয়তা যখন তুঙ্গে, তখনই উঠতে শুরু করে নানা সতর্কবার্তা। ইন্সট্যান্ট নুডলস অস্বাস্থ্যকর। তবে কি নুডলস খাওয়া ছেড়ে দেবেন?
ভারতের বাজারে যে সব ব্র্যান্ডের নুডলস পাওয়া যায় তা সবই রিফাইন্ড ফ্লাওয়ার বা ময়দা দিয়ে তৈরি। ইন্সট্যান্ট নুডলস খুবই সুস্বাদু ও সহজলভ্য। কিন্তু ময়দার পরিমাণ খুব বেশি হওয়ার কারণে ইন্সট্যান্ট নুডলস সহজে হজম হয় না। সেই সঙ্গেই খুব বেশি সোডিয়াম, অস্বাস্থ্যকর আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে। এই সব আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে দিয়ে হার্ট অ্যাটাক ও টাইপ টু ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়। এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই সব ইন্সট্যান্ট নুডলসে অ্যাডিটিভ ও প্রিজারভেটিভ থাকে। ফলে কোনও পুষ্টিগুণ ছাড়াই এই সব নুডলস শুধুই ক্যালরির আধার। এবং বেশি খাওয়ার ফলে ওবেসিটি ডেকে আনে।
তাই ময়দা থেকে তৈরি অস্বাস্থ্যকর ইন্সট্যান্ট নুডলসের বদলে বেছে নিন স্বাস্থ্যকর স্প্যাগেটি। গমের গুঁড়ো, সুজি থেকে তৈরি হওয়ার জন্য স্প্যাগেটিতে প্রোটিনের পরিমাণ যেমন বেশি, তেমনই পুষ্টিগুণও বেশি।
ইন্সট্যান্ট নুডলস
ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে যে সব খাবার উত্পন্ন বা তৈরি হয় তার পুষ্টিগুণ বেশি। অলিভ অয়েল, ওয়াইন, পাস্তা, স্প্যাগেটি সব কিছুরই জন্ম ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে। ফলে ইন্সট্যান্ট নুডলসের তুলনায় স্প্যাগেটিতে যেমন ৩৫ শতাংশ বেশি প্রোটিন রয়েছে, তেমনই ট্রান্স ফ্যাট ও কোলেস্টেরল একেবারেই নেই। তাই ফ্যাট বা ওজন বাড়ার চিন্তা না করেই খেতে পারেন স্প্যাগেটি। স্প্যাগেটি শুধু পুষ্টিগুণেই নয়, হালকা হওয়ার জন্য হজমেও সাহায্য করে। ফলে নুডলসের মধ্যে স্বাস্থ্যকর বিকল্প স্প্যাগেটি। গম ও সুজি সরাসরি টাটকা জলে মিশিয়ে শুকিয়ে নুডলসের শেপে তৈরি করা হয় স্প্যাগেটি। ফলে কোনও রকম রিফাইনিং প্রসেস ব্যবহার করা হয় না, অ্যাডিটিভ বা প্রিজারভেটিভও যোগ করা হয় না।
আরও পড়ুন: রোগা হতে চাইলে চকোলেট ছাড়তে হবে না, খান এই কুকিজ
স্প্যাগেটি সিদ্ধ করার সময় তেলের প্রয়োজন হয় না। জল দিয়ে সিদ্ধ করার সময় বাসনের গায়ে লেগেও যায় না। তেল না থাকায় ফ্যাটের পরিমাণ এমনিতেই কমে যায়। চাইনিজ হাক্কা হোক বা সব্জি-টোম্যাটো সস দিয়েই খান, স্প্যাগেটি অনেক বেশি স্বাস্থ্যকর।
প্রতি দিনের ডায়েটে প্রোটিন ও ফাইবার থাকা অত্যন্ত জরুরি। কিন্তু শিশুদের পুষ্টিকর খাবার খাওয়াতে অনেক সময়ই মায়েরা নাজেহাল হয়ে পড়েন। এই সময়ই কাজে আসতে পারে স্প্যাগেটি। সব্জি দিয়ে স্প্যাগেটি শিশুদের প্রয়োজনীয় প্রোটিন ও ফাইবারের জোগান দিতে পারে।