ডিম সেদ্ধর জল দিয়ে কী কী কাজ করতে পারেন? ছবি: ফ্রিপিক।
ডিম সেদ্ধ হয়ে যাওয়ার পর, সেই জল ফেলে দেন? প্রায় সকলেই তা-ই করেন। ডিম সেদ্ধর জলের উপকারিতা অনেক। পুষ্টিগুণে ভরপুর এই জল নানা কাজে ব্যবহার করা যায়।
ডিম সেদ্ধ করার জল দিয়ে আবার কী কাজ হয়, এমনটাই ভাবছেন তো? ডিম সেদ্ধ করার সময়ে ডিমের খোসা থেকে এমন কিছু খনিজ বার হয়, যা সেই জলে মিশে যায়। তার মধ্যে একটি হল ক্যালশিয়াম। ডিমের খোলায় ৯৫ শতাংশ ক্যালশিয়াম কার্বোনেট থাকে। ডিম সেদ্ধ হওয়ার সময়ে সেই ক্যালশিয়ামই জলে মিশে যায়। পাশাপাশি, ডিমে থাকা ফসফরাস, ম্যাগনেশিয়াম, সোডিয়াম, পটাশিয়াম, জ়িঙ্ক, ম্যাঙ্গানিজ ও আয়রনের মতো খনিজও মেশে জলে। এ বার ভেবে দেখুন,সেই জল কতটা পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ হল। নানা খনিজের মিশ্রণে ভরপুর সেই জল রূপচর্চা থেকে গাছের পরিচর্যা— নানা কাজেই ব্যবহার করা যায়।
সাধারণ জলের চেয়ে বেশি পুষ্টিকর, ডিম সেদ্ধ করা জল কী কী কাজে আসবে?
ত্বক ও চুলের পরিচর্যায়
ডিম সেদ্ধ করা জল দিয়ে স্নানের আগে চুল ধুলে চুল নরম ও মসৃণ হবে। ডিমের ক্যালশিয়াম ও পটাশিয়াম চুলের গোড়া মজবুত করবে, চুল পড়া বন্ধ হবে।
খুশকির সমস্যারও সমাধান করতে পারে ডিম সেদ্ধ করা জল। এই জলের খনিজ উপাদানগুলি মাথার ত্বকের সংক্রমণও রোধ করতে পারে।
ত্বকের প্রাকৃতিক স্ক্রাবার হিসেবে কাজ করতে পারে ডিম সেদ্ধর জল। এই জল দিয়ে মুখ ধুলে ত্বকের তৈলাক্ত ভাব কমবে। ত্বকের রন্ধ্রে জমে থাকা ধুলোময়লা বেরিয়ে যাবে। খসখসে ত্বক নরম ও জেল্লাদার হয়ে উঠবে।
ডিমের জ়িঙ্ক ত্বকের তৈলগ্রন্থি থেকে সিবামের উৎপাদন নিয়ন্ত্রণে রাখবে, ফলে ব্রণ-ফুস্কুড়ি কম হবে।
গাছের পরিচর্যায়
ডিম সেদ্ধর জলের ক্যালশিয়াম গাছের বৃদ্ধির জন্য আদর্শ। গাছের গোড়ায় নিয়মিত এই জল দিলে, গাছ দ্রুত বৃদ্ধি পাবে। ফুল ও ফল ধরানোর জন্যও সার হিসেবে এই জল ব্যবহার করতে পারেন। টম্যাটো ও লঙ্কা গাছের জন্য খুবই উপকারী এই জল।
ডিম সেদ্ধর জলের পটাশিয়াম ও অন্যান্য খনিজ উপাদান খুব ভাল মানের জৈব সার হিসেবে কাজে আসতে পারে। এই জল মাটিতে দিলে, মাটির গুণমান বাড়বে। মাটির পিএইচের মাত্রা ঠিক থাকবে, ফলে যে কোনও গাছের ফলনই ভাল হবে।
বাড়িতে ফুল গাছ ফলাতে চাইলে, ডিম সেদ্ধর জল কম্পোস্ট হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। গাছের পাতায় হলদেটে ছোপ ধরলে, ফলে পচন ধরতে শুরু করলে, এই জল ব্যবহারে সুফল পেতে পারেন। গাছে পোকামাকড়ের উপদ্রব কমাতেও ডিম সেদ্ধর জল উপযোগী।
ঘর পরিষ্কারের কাজে
ঘরের মেঝে, রান্নাঘরের তাক বা সিঙ্ক পরিষ্কারের কাজে এই জল ব্যবহার করা যেতে পারে। ডিম সেদ্ধর জলের খনিজ উপাদান যে কোনও দাগ তুলে দিতে পারে। পুরনো থালাবাসন নতুনের মতো চকচকে করে তুলতেও এই জল কাজে আসতে পারে।