—প্রতীকী ছবি।
বিয়ের পর স্বামীর সঙ্গে অ্যালবাম দেখতে বসেছিলেন নববধূ। নিজেদের বিয়ের ছবি খুঁটিয়ে দেখছিলেন তাঁরা। হঠাৎ নববধূর চোখ আটকে যায় এক তরুণকে দেখে। বিয়ের দু’-তিনটি ছবিতে সেই তরুণকে দেখা গিয়েছে। কিন্তু তরুণী তাঁকে চেনেন না। তাঁর দূরসম্পর্কের কোনও আত্মীয়ও নন সেই তরুণ। তরুণী ভাবলেন যে, সেই তরুণ হয়তো তাঁর শ্বশুরবাড়ির তরফের কেউ। কিন্তু পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন যে, তাঁর শ্বশুরবাড়ির কোনও সদস্যই সেই তরুণকে চিনতে পারছেন না।
তা হলে কে সেই অচেনা তরুণ? কেনই বা সেই তরুণ তাঁদের বিয়ের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন? মনের মধ্যে এ সব প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছিল তরুণীর। তাই সেই ‘অনাহূত’ অতিথিকে খুঁজে বার করার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন তিনি। তরুণের সন্ধানও মিলল। তবে তরুণীর বিয়ের চার চারটি বছর পার হয়ে যাওয়ার পর। গত চার বছর ধরে ‘তল্লাশি’ চালিয়ে অপরিচিত তরুণের সন্ধান পেলেন তরুণী। সেই তরুণের পরিচয় জানতে পেরে আর হাসি ধরে রাখতে পারলেন না তরুণী।
ছবি: সংগৃহীত।
সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, ২০২১ সালের নভেম্বর মাসে স্কটল্যান্ডের আয়রশায়ারের প্রেস্টউইক এলাকার কার্লটন হোটেলে বিয়ে করেছিলেন মিশেল। তাঁর স্বামীর নাম জন ওয়াইলি। বিয়ের পর নবদম্পতির কাছে তাঁদের বিয়ের অ্যালবাম পৌঁছে দিয়েছিলেন আলোকচিত্রশিল্পী। বিয়ের ছবির খুঁটিনাটি দেখছিলেন জন এবং মিশেল। হঠাৎ এক অচেনা তরুণের দিকে নজর পড়ে মিশেলের। দু’-তিনটি ছবিতে সেই তরুণকে দেখা গিয়েছে। কিন্তু মিশেল কোনও ভাবেই সেই তরুণকে চিনতে পারছেন না। তাঁর কোনও আত্মীয়ও নন সেই তরুণ।
মিশেল তখন ভাবলেন যে, শ্বশুরবাড়ির তরফে কোনও আত্মীয় হতে পারেন সেই তরুণ। সে কথা ভেবে জনকে সেই তরুণের কথা জিজ্ঞাসা করলেন মিশেল। কিন্তু জনও সেই তরুণকে চিনতে পারলেন না। পরে মিশেল তাঁর বিয়ের অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকল অতিথির কাছে অপরিচিত তরুণ সম্পর্কে খোঁজখবর নিতে শুরু করলেন।
তরুণকে কেউই চিনতে পারলেন না। তবে মিশেল জানতে পারলেন যে, তিনি এবং জন যখন শপথগ্রহণ করেছিলেন তার কিছু ক্ষণ পর সেই অচেনা তরুণ তাড়াহুড়ো করে বেরিয়ে যান। মিশেলের মনে সন্দেহ বাড়ে। তিনি সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন যে, ‘অনাহূত’ অতিথির রহস্য তিনি উদ্ঘাটন করেই ছাড়বেন।
মিশেলের মাথায় এক বুদ্ধি খেলে গেল। তিনি ভাবলেন যে, সমাজমাধ্যমে এমন কোনও ব্যক্তিকে খুঁজে বার করতে হবে যাঁর অনুগামীর সংখ্যা প্রচুর। সেই ব্যক্তি যদি নিজের সমাজমাধ্যমের পাতায় মিশেলের বিয়ের ছবি পোস্ট করে সেই অচেনা তরুণের পরিচয় জানতে চান, তা হলে সুরাহা হলেও হতে পারে। সেই প্রত্যাশা নিয়ে ডাজ়া নামের এক তরুণের সঙ্গে যোগাযোগ করেন মিশেল। পেশায় নেটপ্রভাবী ডাজ়া।
সমাজমাধ্যমে তাঁর অনুগামীর সংখ্যাও অনেক। মিশেলের অনুরোধে ডাজ়া তাঁর সমাজমাধ্যমের পাতায় জন এবং মিশেলের বিয়ের ছবি পোস্ট করেন এবং সেই অচেনা তরুণের পরিচয় জানতে চান। তার পরেই ম্যাজিকের মতো কাজ হয়। সেই তরুণ নিজেই ধরা দেন। মিশেলের বিয়েতে তিনি কেন গিয়েছিলেন সে কারণও জানান তিনি। তবে সেই তরুণের খোঁজ মিলল মিশেলের বিয়ের চার বছর পর।
তরুণের নাম অ্যান্ড্রিউ হেলিম্যান। পেশায় চিত্রশিল্পী তিনি। অ্যান্ড্রিউ জানান যে, চার বছর আগে তাঁর এক বন্ধু বিয়ের অনুষ্ঠানে তাঁর সঙ্গী হিসাবে যাওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। অ্যান্ড্রিউয়ের বন্ধু শুধু জানিয়েছিলেন যে, পাত্রীর নাম মিশেলা। এমনকি, অ্যান্ড্রিউকে ভুল ঠিকানাও দিয়েছিলেন তিনি। আসলে, মিশেলার বিয়ের অনুষ্ঠান অন্য জায়গায় হওয়ার কথা ছিল।
বন্ধুর দেওয়া ঠিকানা মেনেই সেখানে পৌঁছে গিয়েছিলেন অ্যান্ড্রিউ। তাঁর বন্ধুকে ছাড়া আর কাউকে চেনার কথা ছিল না অ্যান্ড্রিউয়ের। তাই মনে সন্দেহও জাগেনি তাঁর। সেখানে পৌঁছে বন্ধুর দেখা না পেয়ে ভারী অবাক হয়ে যান অ্যান্ড্রিউ। সেই মুহূর্তেই পাত্রীর প্রবেশ ঘটে। পাত্রীর নাম ঘোষণা করা হলে অ্যান্ড্রিউয়ের মাথায় বাজ পড়ে। এ তো মিশেলা নন, পাত্রীর নাম তো মিশেল! তখনই অ্যান্ড্রিউ বুঝতে পারেন যে, তিনি ভুল ঠিকানায় চলে গিয়েছেন। মিশেল এবং জনের শপথগ্রহণের পর আর বেশি ক্ষণ সেখানে থাকেননি অ্যান্ড্রিউ। ২০ মিনিট পর বিয়েবাড়ি থেকে চলে যান তিনি।