সৈয়দ শামসুল হক। (২৭/১২/১৯৩৫—২৭/০৯/২০১৬)
লড়াই করেই ক্যানসার আর মৃত্যুর কাছে হার মানলেন তিনি। জবাব দিয়ে দিয়েছিলেন লন্ডনের ডাক্তাররা। এ মাসের গোড়াতেই ফিরে আসেন ঢাকায়। তার পর এক মাসও কাটল না। অসংখ্য অনুরাগী পাঠককে বিষাদে ডুবিয়ে আজ, মঙ্গলবার, বিকেল সাড়ে ৫টা নাগাদ ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮১।
ফুসফুসে কর্কট রোগের ছোবল বসেছিল অনেক দিন আগেই। গত ১৫ এপ্রিল উন্নত চিকিৎসার জন্য লেখক গিয়েছিলেন লন্ডনের হাসপাতালে। সঙ্গে গিয়েছিলেন স্ত্রীও। কিন্তু লাভ হয়নি খুব একটা। সেখানেও চিকিত্সকরা জানিয়ে দেন, আর কিছু করার নেই। তিন মাস পর তাই ফিরে আসেন দেশে। আসার আগে বাংলাদেশের শিল্প সাহিত্যের আর এক দিকপাল নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চুকে লন্ডনের হিথরো বিমানবন্দরে জানিয়ে এসেছিলেন, ‘নূতন নাটক লিখছি... নাম শেষ যোদ্ধা’। সে লেখা শেষ হয়েছিল কি না জানা যায়নি। কিন্তু শেষ হয়ে গেল বাংলা সাহিত্যের একটা অধ্যায়।
অসুস্থ লেখকের সঙ্গে হাসপাতালে দেখা করতে গিযেছিলেন শেখ হাসিনা।
বাংলাদেশে ফেরার পর চিকিৎসাধীন ছিলেন ইউনাইটেড হাসপাতালে। অবস্থার অবনতি হওয়ায় গতকাল, সোমবার, তাঁকে আইসিইউ-তে নেওয়া হয়। সেখান থেকেই আজ বেরিয়ে এলেন নিথর অবস্থায়।
সব্যসাচী লেখকের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
‘নুরলদীনের সারাজীবন’, ‘বৃষ্টি ও বিদ্রোহীগণ’, ‘বৈশাখে রচিত পঙতিমালা’র লেখকের শরীরের মৃত্যুর খবরে শোকাহত হয়ে পড়েছে গোটা বাংলাদেশ। শোকস্তব্ধ পশ্চিমবঙ্গে বসবাসকারী তাঁর গুণমুগ্ধরাও।
দেশে ফেরার পথে হিথরো বিমানবন্দরে সৈয়দ শামসুল হক। ছবি: অনুজিত সরকার।
১৯৩৫ সালের ২৭ ডিসেম্বর কুড়িগ্রামে জন্মগ্রহন করেন সৈয়দ শামসুল হক। কবিতা, উপন্যাস, নাটক, ছোটগল্প-সহ সাহিত্যের প্রায় সমস্ত শাখায় সাবলীল পদচারণার জন্য তাঁকে 'সব্যসাচী লেখক' বলা হয়। তিনি মাত্র ২৯ বছর বয়সে বাংলা একাডেমী পুরস্কার পান। তিনিই সবচেয়ে কম বয়সে এ পুরস্কার লাভ করেছেন।
বাবা সৈয়দ সিদ্দিক হুসাইন ও মা হালিমা খাতুনের আট সন্তানের প্রথম সন্তান তিনি। শিক্ষাজীবন শুরু হয় কুড়িগ্রাম মাইনর স্কুলে। সেখানে ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করেন। এর পর ভর্তি হন কুড়িগ্রাম হাই ইংলিশ স্কুলে। ১৯৫০ সালে গণিতে লেটার মার্কস নিয়ে সৈয়দ শামসুল হক ম্যাট্রিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।
১৯৫২ সালে জগন্নাথ কলেজে মানবিক শাখায় ভর্তি হন। কলেজ পাশের পর ১৯৫৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে ভর্তি হন। তবে ১৯৫৬ সালে সেখান থেকে পড়াশোনা অসমাপ্ত রেখেই বেরিয়ে আসেন। এর কিছু দিন পর তাঁর প্রথম উপন্যাস "দেয়ালের দেশ" প্রকাশিত হয়।
আরও খবর
র্যাব অভিযানে বিপুল অস্ত্র উদ্ধার চট্টগ্রামে
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy