বাংলাদেশ ব্যাঙ্ক।
বাংলাদেশ ব্যাঙ্কের চুরি যাওয়া অর্থের মধ্যে আরও তিন কোটি ডলার উদ্ধার হতে পারে বলে আশা করছে হাসিনা সরকার। সোমবার বাংলাদেশ ব্যাঙ্কের দুই কর্মকর্তা রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা জানিয়েছেন।চলতি মাসেই ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব নিউ ইয়র্ক থেকে বাংলাদেশ ব্যাঙ্কের অর্থ চুরি যায়।
বাংলাদেশ ব্যাঙ্কের ডেপুটি-গভর্নর এবং আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিটের প্রধান আবু হেনা মহম্মদ রাজি হাসান রয়টার্সকে জানিয়েছেন, আরও তিন কোটি ডলার আমরা ফেরত পাব বলে আশা করছি। এই অর্থ ফেরত আনার প্রক্রিয়া শুরু করতে বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধিদল চলতি মাসের শেষে ফিলিপিন্সে যাবে বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশ ব্যাঙ্কের এক কর্মকর্তা বলেন, “ফিলিপিন্সের সুপ্রিম কোর্টে ইতিমধ্যে প্রমাণিত হয়েছে যে, ওই আট কোটি ১০ লাখ ডলার আমাদের অর্থ। তাই আমরা আশাবাদী যে, এই অর্থ ফেরত পেতে আদালতের রায় আমাদের অনুকূলে যাবে।” যদিও ওই কর্মকর্তা সংবাদমাধ্যামের সঙ্গে কথা বলার জন্য অনুমতিপ্রাপ্ত নয়। এ কারণে তাঁর অনুরোধে ওই কর্মকর্তার পরিচয় গোপন রাখা হবে বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
চলতি সপ্তাহেই নিউ ইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক থেকে বাংলাদেশের ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি যায়। এর মাসদশেক পর ফিলিপিন্স থেকে প্রায় দেড় কোটি ডলার ফেরত পেয়েছিল বাংলাদেশ। গত শনিবার দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক ‘বাঙ্কো সেন্ট্রাল এনজি ফিলিপিনাস’ মারফত মোট এক কোটি ৫২ লাখ ২৫ হাজার মার্কিন ডলার ফেরত পাওয়ার খবর দেয় ইউএনবি নামে একটি সংবাদ সংস্থা।
বাংলাদেশ ব্যাঙ্কের ডেপুটি গভর্নর আবু হেনা রাজি হাসান শনিবার ইউএনবি-কে এই খবর জানান। তিনি বলেন, “বাংলাদেশ ব্যাঙ্কের একটি প্রতিনিধিদল ফিলিপিন্স থেকে এক কোটি ৫২ লাখ ২৫ হাজার মার্কিন ডলার গ্রহণ করেছে। এই অর্থ বাংলাদেশ ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টে নেওয়ার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন আছে।”
চলতি বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক সাইবার চক্রের হ্যাকাররা সুইফট কোড জালিয়াতির মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট থেকে ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি করে। বিপুল পরিমাণ এই অর্থের মধ্যে স্থানান্তরিত করে আট কোটি ১০ লাখ ডলার ফিলিপিন্সের রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাঙ্কে (আরসিবিসি) পাঠানো হয়। আর শ্রীলঙ্কার প্যান এশিয়ান ব্যাঙ্কে যায় ২০ মিলিয়ন ডলার।
সুইফট কোডের মাধ্যমে অভিনব এই চুরির পর পরই শ্রীলঙ্কার অর্থ ফেরত পাওয়া গেলেও ফিলিপিন্সে আসা সব অর্থ উদ্ধার করা যায়নি। আট কোটি ১০ লাখ ডলারের অধিকাংশই আরসিবিসি-র মাধ্যমে দেশটির বিভিন্ন স্থানের জুয়ার টেবিলে চলে যায়। এ ভাবেই ওই টাকা আইনগত ভাবে বৈধ হয়ে সাদা টাকায় পরিণত করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন
সন্ত্রাসের আঁতুরঘর বলে চিহ্নিত ঢাকার দেড় ডজন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
পরবর্তী কালে ফিলিপিন্সের সিনেট কমিটির শুনানিতে অর্থপাচারে জড়িত ক্যাসিনো মালিক কিম অং দেড় কোটি ডলার ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। তিন ধাপে তিনি ওই টাকা দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের কাছে জমা দেন। পরে এই অর্থ ফেরত পেতে ফিলিপিন্সের বিচার বিভাগ বাংলাদেশ ব্যাঙ্কে একটি আইনি নথি ও প্রতিবেদন লিপিবদ্ধ করার পরামর্শ দিয়েছিল।
চলতি বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর ফিলিপিন্সের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক ‘বাঙ্কো সেন্ট্রাল এনজি ফিলিপিনাসকে’ (বিএসপি) বাংলাদেশের রিজার্ভের চুরি হওয়া টাকার এক কোটি ৫২ লাখ ৫০ হাজার ডলার ফেরত দিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন দেশটির একটি আঞ্চলিক আদালত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy