বাংলাদেশের ওষুধ পাকিস্তানে। সরাসরি নেওয়ার লজ্জা, অভিমান থেকে বাঁচাচ্ছে ইউনিসেফ। বাংলাদেশের ওষুধ নিয়ে তারা দিচ্ছে পাকিস্তানকে। যা শর্ত অনুসারে বিনামূল্যে পৌঁছচ্ছে দুঃস্থ মানুষের ঘরে। স্বস্তির নিঃশ্বাস পাকিস্তানের অসহায় অসুস্থদের।
স্বাস্থ্যে অরক্ষিত দেশে নজর বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার। নারী-শিশুদের ভোগান্তি দূর করার প্রয়াস। পুষ্টিকর খাদ্য, ওষুধের অভাবে সুস্থ থাকাটা যেন অসম্ভব হয়ে না দাঁড়ায়। ইউনিসেফ যাদের থেকে ওষুধ কেনে সেই তালিকায় আছে বাংলাদেশ, ভারত, মালয়েশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, সুইৎজারল্যান্ড। সরবরাহ ১২টি দেশে। বেশিটাই পাকিস্তানে। বাকি ১১ দেশ হচ্ছে মায়ানমার, মালয়েশিয়া, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, জাম্বিয়া, ইয়েমেন, রোয়ান্ডা, উগান্ডা, বুরুন্ডি, আইভরি কোস্ট বা কোট ডি'আইভরি এবং পূর্ব টিমোর বা টিমোর লেসতে।
পূর্বমধ্য আফ্রিকার জাম্বিয়া অর্থনৈতিক দুর্বলতায় জবুথবু। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ পূর্ব টিমোরের দুঃখের দিনও শেষ হয়নি। স্বাধীনতা পেয়েছে ২০০২-এর ১৯ মে। ৪৫০ বছরের পর্তুগিজ আর ২৪ বছরের ইন্দোনেশীয় শাসনে শুকিয়ে কাঠ। দারিদ্র দাবিয়ে রেখেছে ৮৫ শতাংশ মানুষকে। শ্রমিকদের মজুরি দিনে ৫৫ মার্কিন সেন্টের কম। কফি ছাড়া রফতানি করার কিছু নেই। অধিকাংশ এলাকা বিদ্যুৎ শূন্য। শিক্ষা-স্বাস্থ্য পরিষেবা নাগালের বাইরে। বাংলাদেশের ওষুধ তাদের কাছে বিরাট সান্ত্বনা। পশ্চিম এশিয়ার ইয়েমেন অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য লড়াই করে ক্লান্ত। আল কায়দার শাখা সংগঠন আলসার-আল-শারিয়া, হাইথিস বিস্তীর্ণ এলাকা দখল করে আছে। রাষ্ট্রপতি আবদ হাদি হালে পানি পাচ্ছেন না। তুলনামূলক ভাবে কিছুটা ভাল অবস্থা পশ্চিম আফ্রিকার আইভরি কোস্টের। ১৯৮৬তে ফরাসি উচ্চারণে দেশটির নাম হয় কোট ডি আইভরি। হাতির দাঁতের বাণিজ্যে সুনাম থাকায় আইভরি শব্দটা দেশের নামে জড়িয়ে। বর্তমানে অর্থনীতি দাঁড়িয়ে কোকো রফতানির উপর। বিদেশি বিনিয়োগ কিছুটা বেড়েছে। পূর্ব আফ্রিকার উগান্ডা নামটা প্রাচীন বৃগান্ডা সাম্রাজ্যের দেওয়া। বরফ ঢাকা পাহাড়, ঘন অরণ্য, বিশাল হ্রদ, মরুভূমিতে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য অসীম। অর্থনীতি সীমাবদ্ধ। কচ্ছপের মতো নড়তেই চায় না। পূর্বমধ্য আফ্রিকার রোয়ান্ডায় বহুদলীয় রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের পর শান্তি ফিরলেও অর্থনীতি উঠে দাঁড়াতে পারছে না। দক্ষিণ পূর্ব আফ্রিকার বুরুন্ডির অবস্থা সত্যিই শোচনীয়। দরিদ্র ঘনবসতিপূর্ণ দেশটিতে মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা ভয়ঙ্কর উপজাতি যুদ্ধ। কিছুতেই থামে না। সামান্য বিরতির পর নতুন করে শুরু। ক্ষুধার্ত শিশুর কান্নায় বাতাস ভারি। তাদের ভরসা বাংলাদেশ থেকে পাঠানো ভিটামিন আর মিনারেল ঠাসা মাইক্রোনিউট্রেট পাউডার 'ইঙ্গাবৃরু'। ছ'মাস থেকে পাঁচ বছরের শিশুদের বাঁচার রসদ। মাতৃদুগ্ধের বিকল্প হিসেবে ঘরে ঘরে আদৃত।
বাংলাদেশ থেকে ওআরএস আর জিঙ্ক কোপ্যাক যায় নেপাল, শ্রীলঙ্কা, মায়ানমারে। যা স্যালাইনের কাজ করে। বাংলাদেশের হরমোন ক্যাপসুল এই ১২টি দেশ ছাড়াও যাচ্ছে আরও ১২৩টি দেশে। মালয়েশিয়া সরাসরি বাংলাদেশ থেকে ৪ কোটি ২০ লাখ হরমোন ক্যাপসুল নিয়ে ১৪১টি হাসপাতালে নারীদের বিতরণ করেছে। দীর্ঘ পরীক্ষা নিরীক্ষার পর ইউনিসেফ বাংলাদেশের ওষুধ গ্রহণ করার পর অন্যান্য দেশও বাংলাদেশের মুখাপেক্ষী হচ্ছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে রাষ্ট্র প্রধানের জন্য কেনা হবে একজিকিউটিভ বিমান
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy