Advertisement
০৪ মে ২০২৪
International news

অবজ্ঞার লাইন বদল, বাংলাদেশে রেল লাইন পাতছে চিন

চেনায় অসংগতি চিনের। বাংলাদেশকে ভুলেই ছিল। ভেবেছিল, পাকিস্তানকে মাথায় নিয়ে নাচলেই চলবে। দক্ষিণ এশিয়ায় বাজিমাত হবে। উৎপাত ভারতে। ভুল ভেঙেছে। সার্কের সব দেশ বাংলাদেশের পাশে। পাকিস্তান কার্যত একঘরে।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

অমিত বসু
ঢাকা শেষ আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ১৫:৩৯
Share: Save:

চেনায় অসংগতি চিনের। বাংলাদেশকে ভুলেই ছিল। ভেবেছিল, পাকিস্তানকে মাথায় নিয়ে নাচলেই চলবে। দক্ষিণ এশিয়ায় বাজিমাত হবে। উৎপাত ভারতে। ভুল ভেঙেছে। সার্কের সব দেশ বাংলাদেশের পাশে। পাকিস্তান কার্যত একঘরে। উন্নয়নে বাংলাদেশের থেকে অনেক পিছিয়ে পড়েছে। বাংলাদেশকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে সঙ্গী জাপান। ঢাকার মেট্রো রেল নির্মাণে জাপানি প্রকৌশলীদের অভিজ্ঞ হাত। সঙ্গে অর্থনৈতিক সহযোগিতা। ১ জুলাই ঢাকার গুলশনে জঙ্গি হাঙ্গামায় জাপানি নাগরিকদের মৃত্যুতে মর্মাহত হলেও, জাপান বাংলাদেশের পাশ থেকে সরে যায় নি। বাংলাদেশের প্রতি জাপানের অতিরিক্ত সহমর্মিতা উদ্বেগ বাড়িয়েছে চিনের। জাপানের সঙ্গে চিনের সম্পর্ক মোটেও ভাল নয়। দক্ষিণ চিন সাগরে বিতর্কিত দ্বীপের দখল নিয়ে বিরোধ তুঙ্গে। জাপান সংবিধান সংশোধন করে, প্রতিরক্ষা বাজেট বাড়িয়ে চিনকে শিক্ষা দিতে চাইছে। এ অবস্থায় বাংলাদেশকে দূরে রাখাটা কূটনৈতিক ভুল। ঢাকার মেট্রোতে জাপান কেরামতি দেখাচ্ছে দেখাক। চিনও কম যায় না। পদ্মা সেতুতে রেল লাইন তারাই বসাবে। কাজটা সামান্য নয়। জাপান চমকাতে বাধ্য।

পদ্মা সেতুতে রেল লাইন বসাতে আর্থিক সাহায্যের হাত বাড়িয়েছে চিন। তারা দেবে ২৫ হাজার কোটি টাকা। কাজটা করবে চায়না রেলওয়ে গ্রুপ লিমিটেড। চিনের এক্সিম ব্যাঙ্কের সঙ্গে ঋণ চুক্তিও স্বাক্ষরিত হবে দ্রুত। কাজ শুরু ডিসেম্বরে। পদ্মা সেতুর রেল লাইনে গোটা বাংলাদেশের সংযোগ। দীর্ঘ ১৬৯ কিলোমিটার লাইন পাতবে চিন। লাইন নির্মাণ চার ধাপে। ২০১৮তে তৈরি হয়ে যাবে ৬.১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতু। সেতু খুললেই চলবে ট্রেন, প্রথম ধাপে ঢাকা-ভাঙ্গা। ধাপে ধাপে শুরু হবে ঢাকা-গেন্ডারিয়া, গেন্ডারিয়া-মাওয়া, মাওয়া-ভাঙ্গা জংশন, ভাঙ্গা জংশন-যশোর।

আরও পড়ুন: পাবনায় মিষ্টি বিক্রেতাকে হত্যার হুমকি চিঠি জেএমবি-র নামে

ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, শরিয়তপুর, মাদারিপুর, ফরিদপুর জেলায় জমি অধিগ্রহণের কাজ চলছে। ২০২২-এ পুরো প্রকল্প শেষ করা যাবে। লম্বা লাইন হলেই চলে না। যাত্রীদের ওঠানামার জন্য স্টেশনও দরকার। ১৪টি নতুন রেল স্টেশন হবে কেরানিগঞ্জ, নিমতলা, শ্রীনগর, মাওয়া, জাজিরা, শিবচর, ভাঙ্গা জংশন, নগরকান্দা, মুকসুদপুর, মহেশপুর, লোহাগড়া, নড়াইল, জামদিয়া, পদ্মবিলায়। একই সঙ্গে চলবে ঢাকা, গেন্ডারিয়া, ভাল্লা, কাশিয়ানি, রূপদিয়া, সিঙ্গিয়া রেলস্টেশনে সংস্কারের কাজ। ২০টি স্টেশনে থাকবে আধুনিক সিগন্যালিং ব্যবস্থা। ২৫ টন এক্সেল লোড বইতে পারবে নতুন লাইন। রেলপথ আর সড়কের বিভাজনে থাকবে ‘আন্ডার পাস’। এমব্যাঙ্কমেন্টের উচ্চতা দাঁড়াবে সাত মিটার। থাকবে অপটিক্যাল ফাইবারের টেলিযোগাযোগ।

পদ্মা সেতু নির্মাণের কাজ দ্রুত এগোচ্ছে। সেতু না হলে রেল লাইন হবে কী করে। সেতুর ভায়াডাক্টের মানে সেতুর ঢালে পাইল স্থাপন চলছে। জাজিরা প্রান্তের ২২ নম্বর ভায়াডাক্ট পিলারের ১০টি পাইল দ্রুত শেষ করার পরিকল্পনা। ৭৫ মিটার গভীরে এগুলো স্থাপন করা হবে। এতে হ্যামারের প্রয়োজন হবে না। সবই কংক্রিটের পাইল। মাটি পরীক্ষার পরই এই ব্যবস্থা। নতুন রেল লাইনে প্রশস্ত হবে অর্থনৈতিক উন্নয়নের রাস্তা। ধরে নেওয়া হয়েছে, জিডিপি অন্তত এক শতাংশ বাড়ছেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

railway bangladesh railway china
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE