সব বিতর্কের অবসানে নতুন নির্বাচন কমিশনের সন্ধান বাংলাদেশে। সচেতন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। সব দলের মত নিয়ে গড়া হচ্ছে নতুন কমিশন। প্রত্যেক দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলাদা ভাবে কথা বলেছেন রাষ্ট্রপতি। আলোচনায় যাঁদের যা জানানোর জানিয়েছেন অকপটে। কোনও রাখঢাক নেই। পরে যেন আর কথা না ওঠে।
১৮ ডিসেম্বর প্রথম বৈঠকে ছিল প্রধান বিরোধী দল বিএনপি। অতীতে নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছিল তারাই। পরে বুঝেছে সেটা ঠিক হয়নি। রাজনৈতিক উত্তেজনা ছড়াতে নির্বাচন কমিশনকে টার্গেট করাটা ঠিক নয়। গণতন্ত্রের অন্যতম স্তম্ভ নির্বাচন কমিশন। তাকে টানাটানি মানে গণতন্ত্রের ভিতে আঘাত। কমিশন গঠনে রাষ্ট্রপতির উদার প্রক্রিয়াকে স্বাগত জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া। তাঁর দলের প্রতিনিধিরা কথা বলেছেন রাষ্ট্রপতির সঙ্গে। অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে মূল্যবান পরামর্শও দিয়েছেন। তাঁদের কথা মন দিয়ে শুনেছেন রাষ্ট্রপতি। ২০১৪-তে সংসদীয় নির্বাচনে অংশ নেয়নি বিএনপি। সেটা যে ঠিক হয়নি বুঝতে পেরেছে। প্রধান বিরোধী দল হিসেবে নির্বাচন থেকে দূরে থাকা মানে গণতন্ত্রের ক্ষতি। বরাবরই তো তারা বিরোধী দল ছিল না। এই নির্বাচন প্রক্রিয়াতেই ক্ষমতা দখল করেছে দু’বার। বেগম খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন সেই দু’বারই। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তো সব নির্বাচনে জেতেননি।
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতু নির্মাণে চিনের স্প্যান
নির্বাচনের এটাই নিয়ম। এক দল জিতবে অন্য দল হারবে। বিশ্বের সব গণতান্ত্রিক দেশেই তাই হয়। নির্বাচনে যারা হারে তারা সংসদীয় ব্যবস্থার মধ্যে দিয়েই লড়াই, বিরোধিতা জারি রাখে। সংসদীয় ব্যবস্থার মূলে আঘাত করে নয়।
বাংলাদেশের সংবিধানে ১১৮ অনুচ্ছেদে রাষ্ট্রপতিকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার আর চার জন কমিশনার নিয়োগের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে পরামর্শ করে নির্বাচন কমিশন গঠনই রীতি। ২০১২-তে তখনকার রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান স্বীকৃত রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে আলোচনার পর সার্চ কমিটি করে কমিশন গঠন করেন। কথা হয় বিএনপি-র সঙ্গেও। পরে তা সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত হয়। কাজি রকিবউদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে সেই নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ ৮ ফেব্রুয়ারি। তার আগেই নতুন নির্বাচন কমিশন তৈরি হয়ে যাবে।
১৮ নভেম্বর সুষ্ঠু, অবাধ নির্বাচনের দাবিতে ১৩ দফা প্রস্তাব উত্থাপন করেছিলেন বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া। ঐকমত্য না হওয়া পর্যন্ত আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দেন তিনি।
নির্বাচনী আইন সংস্কারের প্রস্তাব হুসেইন মহম্মদ এরশাদের জাতীয় পার্টির। তারা মনে করে চলতি নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় জনসাধারণের মতামতের যথার্থ প্রতিফলন হয় না। যাতে হয় সেই ব্যবস্থা করতে হবে, এটাই প্রস্তাব জাতীয় পার্টির।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন বাংলাদেশে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দূত পিয়েরে মায়াউদোঁ। বাংলাদেশে গণতন্ত্রের অগ্রগতিতে ইইউ খুশি, জানিয়েছেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy