Advertisement
০২ মে ২০২৪
Bangaladesh

অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ এবং ইদ উৎসব

অসাম্প্রদায়িকতা এবং ধর্মীয় উৎসব ইদের মধ্যে কোনও ধারণাগত প্রাসঙ্গিকতা নেই। অবশ্য বাংলাদেশের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা ভিন্ন রকম হয়ে গিয়েছে। একটি প্রাসঙ্গিকতা তৈরি হয়ে গিয়েছে।

খন্দকার মুনীরুজ্জামান
ঢাকা শেষ আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ২২:৩৫
Share: Save:

অসাম্প্রদায়িকতা এবং ধর্মীয় উৎসব ইদের মধ্যে কোনও ধারণাগত প্রাসঙ্গিকতা নেই। অবশ্য বাংলাদেশের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা ভিন্ন রকম হয়ে গিয়েছে। একটি প্রাসঙ্গিকতা তৈরি হয়ে গিয়েছে। তৈরি করে দিয়েছে ইসলামি জঙ্গিবাদ, মৌলবাদ এবং সাম্প্রদায়িকতা। বাংলাদেশের মানুষ, যারা ইসলাম ধর্মে বিশ্বাস করেন, তারা দুঃস্বপ্নেও কখনও ভাবেনি যে, তাদের ইসলামি জঙ্গি হামলার মুখে ঈদ উদ্‌যাপন করতে হবে। না ভাবলেও ঠিক সেটাই ঘটেছে বাংলাদেশে, চলতি বছরের ১ জুলাই এর পর থেকে।

অথচ এই দেশের মানুষই পাকিস্তান আমলের প্রথম চব্বিশ বছর লড়াই করে পাকিস্তানের দ্বিজাতি তত্ব এবং সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রের ধারণা ভুল প্রমাণিত করেছে। ১৯৭১ সালে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ করে পাকিস্তানের সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র ভেঙ্গে সেকুলার এবং অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছে। ১৯৭২ সালে প্রণীত সংবিধানে যেমন সেকুলারিজম, বাঙালী জাতীয়তাবাদ, গনতন্ত্র এবং সমাজতন্ত্রকে রাষ্ট্রের ভিত্তি করেছিল তেমনি ধর্ম ভিত্তিক রাজনীতি এবং রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করেছিল। সম্ভবত তুরস্ক ছিল প্রথম মুসলিম প্রধান সেকুলার রাষ্ট্র। বাংলাদেশ ছিল দ্বিতীয়। তুরস্ক আজ আর সেকুলার বা অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র নেই। ২০০২ সালে এরদোগানের ইসলাম পন্থী দলটি নিবার্চনে জয়ী হওয়ার পর থেকে তুরস্ক অসাম্প্রদায়িকতার পথ থেকে সরে গিয়েছে। অন্য দু’টি মুসলিম প্রধান দেশ আলজিরিয়া এবং মিশরেও সেকুলার রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার চেষ্টা হয়েছিল। আলজিয়িয়ার ধর্ম নিরপেক্ষতা টেকেনি প্রধানত সেটা সেনা নির্ভর ছিল বলে। তুরস্কের অবস্থাও সেরকম। মিশরে রাজনীতিতে সেনা বাহিনীর ব্যাপক প্রভাব থাকলেও সেই দেশে গোড়া থেকেই উগ্র ইসলামী মৌলবাদী ‘মুসলিম ব্রাদারহুড’ তৎপর ছিল জাতীয়তাবাদী নেতা জামাল আব্দুল নাসেরের আগে থেকেই। নাসের মুসলিম ব্রাদারহুডকে নিষিদ্ধ করে রেখেছিল বরাবর।

বাংলাদেশের বাস্তবতা ভিন্ন। তুরস্ক, মিশর বা আলজিরিয়ার মতো অসাম্প্রদায়িকতার ধারণা এই দেশের ওপর থেকে চাপিয়ে দেওয়া হয়নি। বাংলাদেশের মানুষের গণতন্ত্র এবং অধিকারের লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে এ দেশের মানুষ রাজনীতির ক্ষেত্রে ধর্ম ভিত্তিক জাতীয়তা বা পাকিস্তানের দ্বিজাতি তত্ব পরিত্যাগ করে ভাষা ও সংস্কৃতি ভিত্তিক জাতীয়তাবাদ অর্থাৎ সেকুলার জাতীয়তাবাদে সংগঠিত হতে শুরু করে। বলা যায় যে দিন থেকে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, সে দিন থেকেই বাংলাদেশের মানুষ যাদের অধিকাংশই ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসী তাদের মোহ ভঙ্গ হতে শুরু করেছিল। বিশেষ করে ভাষার উপর আঘতটি যখন এল ১৯৪৮ সালে, তখন থেকেই পূর্ব পাকিস্তানের মুসলমানদের পাকিস্তান সম্পর্কে মোহ ভঙ্গ হতে শুরু করে। এরপর ২৪ বছরের আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে সেটা প্রত্যয়ে পরিণত হয়। এই প্রত্যয়ের রাজনৈতিক রূপটি ছিল ১৯৭২ সালে স্বাধীন বাংলাদেশের সংবিধান আর সংগ্রামটি ছিল মুক্তিযুদ্ধ। বাংলাদেশের সেকুলারিজম এবং অসাম্প্রদায়িক প্রত্যয়ের সঙ্গে এ দেশের মানুষের আশা আকাঙ্খা সরাসরি যুক্ত হতে পেরেছিল দীর্ঘ দুই দশকেরও বেশি সময়ের প্রায় বিরামহীন রাজনৈতিক লড়াইয়ের ফলে।

মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে পাকিস্তানের ধর্মভিত্তিক রাজনীতি, মৌলবাদ এবং দ্বিজাতি তত্ত্ব চূড়ান্ত ভাবে ছিন্ন করতে সক্ষম হলেও পাকিস্তান কিন্তু বাংলাদেশকে অর্থাৎ অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশকে ধ্বংস করে ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্র ‘পাকিস্তানী বাংলাদেশ’ প্রতিষ্ঠার অশুভ চেষ্টা থেকে কখনই বিরত থাকেনি। ষড়যন্ত্রের প্রথম আঘাতটি আসে ১৯৭৫ সালের ১৫ অগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করে পাকিস্তানপন্থীদের ক্ষমতা দখলের মধ্য দিয়ে। ইতিহাসের চাকা পেছনে ঘোরাবার চেষ্টা শুরু হয় তখন থেকে। বাংলাদেশকে আবার দ্বিজাতি তত্ত্বের মুঠোয় ফিরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা শুরু হয়। মুজিব হত্যার পর ক্ষমতা দখল করে খন্দকার মোশতাক, মোশতাককে হটিয়ে জেনারেল জিয়াউর রহমান এই সামরিক শাসক বাংলাদেশ জাতীয়তাবদী দল বা বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা। মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী তথা বাংলাদেশ বিরোধী ইসলাম ভিত্তিক মৌলবাদী দল জামায়াতে ইসলামের, মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী অতি বাম এবং প্রধানত পাকিস্তানপন্থী সামরিক-বেসামরিক আমলাদের নিয়ে বিএনপি গঠন করেন সামরিক শাসক জিয়াউর রহমান, এই দলটির আজকের প্রধান হচ্ছেন প্রয়াত জিয়াউর রহমানের পত্নী বেগম খালেদা জিয়া। পাঁচ বছর পর আরেকটি সামরিক অভ্যুত্থানে জিয়াউর রহমানকে হত্যা করা হলে, ক্ষমতায় আসেন জেনারেল এরশাদ। এই তিন শাসক মিলে ধারাবাহিক ভাবে বাংলাদেশের রাজনীতিকে পাকিস্তানীকরণ করেছেন।

প্রথম আঘাতটি আসে সংবিধানের উপর। খন্দকার মোশতাক ক্ষমতা নিয়েই দেশে একটি মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী আবহ তৈরি করে। জিয়াউর রহমান ক্ষমতা নিয়েই মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত সেকুলার সংবিধান পাল্টে ফেলেন। সংবিধান থেকে বাঙালী রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতির মধ্যে তিন নীতিই কেটে দেন জিয়াউর রহমান। ধর্ম নিরেপক্ষতা এবং বাঙালী জাতীয়তাবাদ খারিজ করেন, সমাজতন্ত্র পাল্টে সামাজিক ন্যায়বিচার লেখা হয়। সংবিধানের মাথায় আরবি নোক্তার মতো ‘বিসমিল্লাহ’ বসানো হয়। জিয়াউর রহমান বাতিল করেন সংবিধানের ১২ নম্বর ধারা, যে ধারায় বলা ছিল সেকুলারিজমের আদর্শ প্রতিষ্ঠিত হবে বাংলাদেশে
ক. সকল ধরনের সাম্প্রদায়িকতার অবসান করে।
খ. কোন বিশেষ ধর্মের প্রতি রাষ্ট্রের পক্ষপাতিত্ব (যেটা পাকিস্তান আমলে ছিল) অবসান করে।
গ. রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ধর্মের ব্যবহার অবসান করে
ঘ. ধর্ম বিশ্বাসের কারণে কোন নাগরিকের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ বা নিগ্রহের অবসান ঘটিয়ে।

এই সবই পাকিস্তান আমলে ছিল বাংলাদেশে। ১৯৭২ এর সংবিধান এগুলো অবসান করেছিল, জিয়াউর রহমান ১২ ধারা বাতিল করে রাষ্ট্র ব্যবস্থায় পাকিস্তানী সাম্প্রদায়িকতা ফিরিয়ে আনলেন। সংবিধানের ৩৮ ধারাও বতিল করলেন জিয়াউর রহমান। ৩৮ ধারায় বলা ছিল, সকল নাগরিকের সংগঠন করবার অধিকার থাকবে, কিন্তু সাম্প্রদায়িক কোন সংগঠন বা কোন ধর্ম ভিত্তিক কোন সংগঠন করবার অধিকার থাকবে না। বাংলাদেশের সংবিধানের ১২ এবং ৩৮ ধারা বাতিল করে রাজনীতিতে সাম্প্রদায়িকতা এবং ধর্ম বা দ্বিজাতি তত্বের অন্য কথায় পাকিস্তানী ধারা ফিরিয়ে আনলেন জিয়াউর রহমান। সামরিক শাসক এরশাদ আরেক ধাপ এগিয়ে সংবিধানে রাষ্ট্রধর্মের বিধান অন্তর্ভুক্ত করে ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম করলেন।

জিয়াউর রহমানের সংবিধানের পাকিস্তানীকরণের ফলে মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা বিরোধী মৌলবাদী-সাম্প্রদায়িক দল জামায়াতে ইসলাম, মুসলিম লিগ, নেজামে ইসলাম এর মতো ধমর্ভিত্তিক দলগুলো প্রকাশ্যে ইসলাম ধর্মভিত্তিক রাজনীতি করবার সুযোগ পায়।

এটা ভাবার কোনও সুযোগ নেই যে, জিয়াউর রহমান বা এরশাদ স্বতস্ফূর্ত ভাবে অসাম্প্রদায়িক ও সেকুলার বাংলাদেশকে ধর্ম ভত্তিক সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র বানিয়ে ফেলার চেষ্টা করেছে। এই পুরো পরিকল্পনাটাই পাকিস্তানের ষড়যন্ত্র আরও পরিস্কার ভাবে বলা যেতে পারে পাকিস্তানী সেনা গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর। এক সময় জিয়াউর রহমান ছিলেন আইএসআই-এর কমর্কর্তা। রাজনীতিটা ছিল পরিস্কার ভারতের পূর্ব সীমান্তে আরেকটি পাকিস্তান প্রতিষ্ঠা করা। জিয়াউর রহমান এবং এরশাদের সরকারের সময় আইএসআই-এর এজেন্টরা বাংলাদেশে কাজ করেছে। ১৯৯১ এবং ২০০১ সালে বেগম খালেদা জিয়া সরকার গঠন করবার পর আইএসআই-এর উদ্যোগে বাংলাদেশে বিপুল পরিমাণে অস্ত্র ও গোলা বারুদ আনা হয় অবৈধ পথে, লক্ষ্য ছিল ভারতের উত্তর-পূর্ব রাজ্যের বিদ্রোহীরা। দুই একটি কনসাইনমেন্ট ধরা পড়বার পর আইএসআইএর অপারেশন জনসম্মুখে চলে আসে।

খালেদা জিয়ার সরকারের আমলে আরেকটি ঘটনাকে বাংলাদেশ বিরোধী তৎপরতার মাইলফলক বলা যেতে পারে। ২০০১ সালে খালেদা জিয়া সরকার গঠন করে প্রথম বারের মতো বাংলাদেশ বিরোধী দল জামায়াতে ইসলামীকে মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভূক্ত করেন। এই সময়ই ১০ ট্রাক অস্ত্র ধরা পরে চট্টগ্রামের একটি কারখানার জেটিতে। জামায়াত নেতা মতিউর রহমান নিজামী ছিলেন শিল্পমন্ত্রী। এই সময়ই দেশের উত্তরাঞ্চলে তৈরি জামায়াতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ বা জেএমবি নামের ইসলামী জঙ্গি সংগঠন। তৎপরতা শুরু করে হরকাতুল জিহাদ নামের আরকটি জঙ্গি সংগঠন। ২০০৫ সালের ১৭ অগস্ট একটি জেলা বাদে ৬৩ জেলায় একযোগে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আত্মপ্রকাশ করে জেএমবি, ঘোষণা দেয় জনগণের তৈরি আইন নয় আল্লাহর আইনে দেশ চালাতে হবে। এমন একটি দেশ প্রতিষ্ঠার জন্যই তাদের জিহাদ। বিএনপি-জামায়াত সরকার এই পরিস্থিতিতেও দেশে ইসলামী জঙ্গির অস্তিত্ব অস্বীকার করে।

আরও পড়ুন: ইদের টানা ছুটিতে চেনা ঢাকা এখন অচেনা

১৯৭৫ সালের পর থেকে বাংলাদেশের রাষ্ট্র, সমাজ ও রাজনীতির পাকিস্তানীকরণের এই দীর্ঘ তৎপরতার ফলে এই দেশে ধর্মীয় সাম্প্রদায়িকতা ফিরে আসার বাতারণ যেমন তৈরি হয়, তেমনি উগ্র মৌলবাদের অবাধ তৎপরতার ফলে ইসলামী জঙ্গিবাদের উত্থান হওয়ার পথ সুগম হয়।

আজকের বাংলাদেশে আমরা যে জঙ্গিবাদ দেখছি এই পরিস্থিতি হচ্ছে বাংলাদেশকে অসাম্প্রদায়িকতার পথ থেকে সরিয়ে ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ষড়ডন্ত্রের পরিণতি। সেই কারণেই আজকের বাংলাদেশের ইসলাম ধর্মাবলম্বীদেরকেই ইসলামী জঙ্গিবাদের হুমকির মুখে ঈদ উদ্‌যাপন করতে হচ্ছে। ১ জুলাই হোলি আর্টিজানের হামলার কয়েকদিন পরই বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ঈদের জমায়াত শোলাকিয়ার ময়দানে হামলার চেষ্টা করেছিল ইসলামী জঙ্গিরা। পুলিশী তৎপরতায় সেটা বানচাল হলেও একজন পুলিশ এবং একজন গৃহবধু সহ চারজনকে জীবন দিতে হয়েছিল সেই ব্যর্থ হামলায়। সেটা ছিল রমজানের ইদ। এ বার ঈদুল আজহার দু’দিন আগে ঢাকার আজিমপুরে এক জঙ্গি আস্তায় পুলিশের অভিযানের সময় একজন অপারেটার গলা কেটে আত্মহত্যা করেছে, ধরা পড়েছে তিনজন নারী জঙ্গি, আহত হয়েছে পাঁচ পুলিশ। সুতরাং জঙ্গি হামলার চেষ্টা এবারও উড়িয়ে দেওয়ার কোন সুযোগ নেই।

আজকের বাংলাদেশে আবারও লড়াইটা হচ্ছে ধর্মীয় সাম্প্রদায়িকতা, মৌলবাদ এবং জঙ্গিদের বিরুদ্ধে। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের এই ধারার বিরুদ্ধে যেমন জাতি ঐক্যবদ্ধ হতে পেরেছিল অসাম্প্রদায়িক-সেক্যুলার বাংলাদেশের আকাঙ্খা থেকে, আজকের জঙ্গিবাদের বিপদের মধ্যে বাংলাদেশ আবারওএকটি রাজনৈতিক ঐক্যর পথে এগোচ্ছে। এই ঐক্যই হবে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের লড়াই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Eid Celebration Bangladesh
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE