সাখাওয়াত হোসেন। ছবি: বাংলা ট্রিবিউন।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত যশোরের প্রাক্তন সাংসদ এবং জাতীয় পার্টির নেতা সাখাওয়াত হোসেনকে প্রাণদণ্ড দিল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। আমৃত্যু কারাদণ্ডের সাজা দেওয়া হল তার সাত সহযোগীকে। তাঁদের বিরুদ্ধে আনা খুন, ধর্ষণ ও লুঠপাটের পাঁচটি অভিযোগই ট্রাইবুনালে প্রমাণিত হয়েছে। সাখাওয়াত ছাড়া বাকি সাত আসামি হলেন বিল্লাল হোসেন বিশ্বাস, ইব্রাহিম হোসাইন, শেখ মদম্মদ মজিবুর রহমান, এমএ আজিজ সরদার, আব্দুল আজিজ সরদার, কাজি ওহিদুল ইসলাম এবং মহম্মদ আব্দুল খালেক।
বিচারপতি আনোয়ারুল হকের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চ রায় শোনানোর সময় ট্রাইব্যুনালে সাখাওয়াত ও বিল্লাল উপস্থিত ছিলেন। বাকি ছ’জনকে পলাতক দেখিয়ে এ মামলার বিচার কাজ চলে। এ মামলার আর এক আসামি লুৎফর মোড়ল কারাবন্দি থাকা অবস্থায় অসুস্থ হয়ে মারা যান। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের এটি ২৬তম রায়। এর আগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল জামাত নেতা মতিউর রহমান নিজামি, আলি আহসান মহম্মদ মুজাহিদ, কাদের মোল্লা, কামারুজ্জামান, বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে প্রাণদণ্ডের সাজা দিয়েছে। সাজা তা ইতিমধ্যেই কার্যকর করা হয়েছে। তা ছাড়া জামাতের প্রাক্তন নেতা আমির গোলাম আজম, দেলোয়ার হোসেন সাইদি-সহ আরও কয়েজন আমৃত্যু কারাদণ্ডের সাজা খাটছেন।
শাহবাগ থানার ওসি আবু বকর সিদ্দিকি জানিয়েছেন, রায় ঘোষণার আগে আজ বুধবার সকালে সাখাওয়াত ও বিল্লালকে গাজিপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে প্রিজন ভ্যানে করে ট্রাইবুনালে আনা হয়। এ রায় ঘিরে বরাবরের মতোই ট্রাইবুনাল এলাকার নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছিল। সুপ্রিম কোর্টের সবগুলি প্রবেশ পথে বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়।
২০১২ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি সাখাওয়াত-সহ ১২ জনের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগের তদন্ত শুরু করে প্রসিকিউশনের তদন্ত দল। প্রসিকিউশনের আবেদনে ২০১৪ সালের ২৬ নভেম্বর ট্রাইবুনাল সাখাওয়াতের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। ২৯ নভেম্বর ঢাকার উত্তরখান থেকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।
বর্তমানে জাতীয় পার্টিতে থাকা সাখাওয়াত এক সময় ছিলেন জামাত নেতা। ১৯৯১ সালে জামাতে ইসলামির টিকিটে যশোর-৬ আসন থেকে তিনি সাংসদ নির্বাচিত হন। তবে মেয়াদপূর্তির আগেই জামাত ছেড়ে তিনি বিএনপিতে যোগ দেন। মাওলানা সাখাওয়াত নামে বেশি পরিচিত এই রাজনীতিবিদ বিভিন্ন সময়ে এলডিপি ও পিডিপিতেও ঘুরে এসেছেন। গত সংসদ নির্বাচনে যশোর-৬ আসন থেকে তিনি জাতীয় পার্টির মনোনয়ন পেয়েছিলেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy