Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
Adani Group

বাজারকে আশ্বস্ত করতে নিরপেক্ষ অডিটর নিয়োগ

সংস্থা যদিও ঋণ কমানোর বার্তা দিয়েছে। তাদের ঋণের প্রভাব আর্থিক শিল্পে সে ভাবে পড়বে না বলে দাবি মূল্যায়ন সংস্থা এসঅ্যান্ডপি-র। আর আদানিদের শেয়ার নিয়ে তদন্ত করার কথা জানিয়েছে সেবি।

A photograph of Gautam Adani

গৌতম আদানি। ফাইল ছবি।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৭:০৩
Share: Save:

মৌখিক আশ্বাসে কাজ হয়নি। উল্টে হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের রিপোর্ট সামনে আসার পরে টানা পড়ে চলেছে সংস্থার শেয়ার দর। এই পরিস্থিতিতে এ বার নিরপেক্ষ অডিটর নিয়োগ করে লগ্নিকারী এবং নিয়ন্ত্রকদের আস্থা ফেরানোর জন্য উদ্যোগী হল আদানি গোষ্ঠী। এ জন্য অডিট সংস্থা গ্রান্ট থর্নটনকে বেছে নিয়েছে তারা। সেই সঙ্গে মঙ্গলবার চলতি অর্থবর্ষের তৃতীয় ত্রৈমাসিকে মুনাফার কথা ঘোষণা করে আগামী দিনে ঋণ কমানোর বার্তাও দিয়েছে গোষ্ঠীর মূল সংস্থা আদানি এন্টারপ্রাইজ়েস।

আদানিদের বিরুদ্ধে কারচুপি করে শেয়ার দর বাড়ানোর অভিযোগ এনেছে হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ। গত ২৪ জানুয়ারি প্রকাশিত আমেরিকার শেয়ার সংক্রান্ত গবেষণা সংস্থাটির রিপোর্ট অনুসারে, এক দশক ধরে আদানি গোষ্ঠী তাদের সংস্থাগুলির শেয়ারের দাম কৃত্রিম ভাবে বাড়িয়ে গিয়েছে। প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান গৌতম আদানির ১২,০০০ কোটি ডলার (প্রায় ৯,৭৯,৮০০ কোটি টাকা) নিট সম্পদের ১০,০০০ কোটিই এসেছে গত তিন বছরে, দামে কারচুপির মাধ্যমে শেয়ার সম্পদ চড়িয়ে। গড় বৃদ্ধি ৮১৯%। তার উপরে বিদেশে আদানি পরিবারের মালিকানাধীন ভুয়ো সংস্থার উল্লেখ করে সেগুলির মাধ্যমে বেআইনি আর্থিক লেনদেন, কর ফাঁকি এবং বেআইনি ভাবে নথিভুক্ত সংস্থা থেকে অন্যত্র টাকা সরানোর অভিযোগও করেছে তারা।

এই খবরের পর থেকে টানা পড়ে চলেছে স্টক এক্সচেঞ্জে নথিভুক্ত আদানি গোষ্ঠীর সাতটি সংস্থার শেয়ার দর। মঙ্গলবার সেনসেক্স ৬০০ পয়েন্টের বেশি উঠলেও, আদানিদের পাঁচটি সংস্থারই দর পড়েছে গড়ে ৫%। আদানি পোর্টস এবং আদানি এন্টারপ্রাইজ়েসের ক্ষেত্রে দর বৃদ্ধি গড়ে ২%। বাজার মহলের একাংশের মতে, দ্বিতীয়টির ক্ষেত্রে ২০২১-২২ সালের অক্টোবর-ডিসেম্বরের ১১.৬৩ কোটি টাকা লোকসানের তুলনায় ২০২২-২৩ সালের একই সময়ে ৮২০ কোটি টাকারও বেশি মুনাফার খবরও খুব বেশি আস্থা জোগাতে পারেনি লগ্নিকারীদের মনে।

সংস্থা যদিও ঋণ কমানোর বার্তা দিয়েছে। তাদের ঋণের প্রভাব আর্থিক শিল্পে সে ভাবে পড়বে না বলে দাবি মূল্যায়ন সংস্থা এসঅ্যান্ডপি-র। আর আদানিদের শেয়ার নিয়ে তদন্ত করার কথা জানিয়েছে সেবি। তবে তারা যে নিয়ন্ত্রিত ভাবে ধার করা শেয়ার বিক্রি এবং পরে তা ফের বাজার থেকে কিনে আসল মালিককে ফেরানোর (শর্ট সেলিং) বিরোধী নয়, সেটাও স্পষ্ট করেছে শেয়ার বাজার নিয়ন্ত্রক।

সূত্রের খবর, এই পরিস্থিতিতে বাজারকে আরও একবার আশ্বস্ত করতে এবং রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের মতো বিভিন্ন নিয়ন্ত্রকদের সামনে নিজেদের নির্দোষ প্রমাণ করতেই নিরপেক্ষ অডিটর নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে আদানিরা। যে লক্ষ্যে ঋণ নেওয়া হয়েছে, তাতেই সেই অর্থ ব্যবহার হয়েছে কি না এবং হিসাবের খাতায় কোনও অনিয়ম হয়েছে কি না, তা-ই খতিয়ে দেখবে অডিট সংস্থাটি। সেই সঙ্গে দেখা হবে বিভিন্ন প্রকল্প কী অবস্থায় রয়েছে, সেই বিষয়গুলিও। উল্লেখ্য, সোমবারই গৌতম আদানির সংস্থার দাবি ছিল, তাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা আগের মতোই রয়েছে, ব্যবসা সম্প্রসারণের অর্থও হাতে রয়েছে। শেয়ারহোল্ডারদের রিটার্ন দিতেও সংস্থা বদ্ধপরিকর।

এ দিকে অন্য সূত্র জানাচ্ছে, আদানি এন্টারপ্রাইজ়েসে পুঁজি টানার লক্ষ্যে আবুধাবির ইন্টারন্যাশনাল হোল্ডিং-এর সঙ্গে কথা বলছে আদানি গোষ্ঠী। গত সপ্তাহ থেকে আলোচনার পরে সোমবার ফের সেখানে গিয়েছেন সংস্থার কর্তারা। তবে কত লগ্নি হতে পারে, তা নিয়ে এখনও কোনও তথ্য সামনে আসেনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE