Advertisement
E-Paper

করের টাকায় আর কত দিন, এআই নিয়ে প্রশ্ন মন্ত্রীরই

মন্ত্রীর স্বীকারোক্তি, হিসেবের খাতার যা করুণ হাল, তাতে বেচতে চাইলেও এখন ক্রেতা পাওয়া মুশকিল হবে এয়ার ইন্ডিয়ার জন্য। একই সঙ্গে তাঁর প্রশ্ন, করদাতাদের টাকায় এ ভাবে কত দিন ভর্তুকি দেওয়া সম্ভব?

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১০ জুন ২০১৬ ০৩:০৮

বিক্রির কথা বলেননি। কিন্তু তেমনই করের টাকায় ভর্তুকি জুগিয়ে এয়ার ইন্ডিয়াকে (এআই) অনন্তকাল বাঁচিয়ে রাখা যাবে না বলেও স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন বিমানমন্ত্রী অশোক গজপতি রাজু।

ঘাড়ে বিপুল লোকসানের বোঝা। তার উপর ৫০ হাজার কোটি টাকা দেনার পাহাড়। বছরে শুধু সুদই গুনতে হচ্ছে চার হাজার কোটি টাকা। এ হেন ধুঁকতে থাকা রাষ্ট্রায়ত্ত বিমান পরিবহণ সংস্থাটিকে বাঁচিয়ে রাখতে কোষাগার থেকে ভর্তুকি গুনতে হয়েছে অনেক বার। ঘুরিয়ে দাঁড় করানোর চেষ্টা হিসেবে ২০১২ সালেও ঘোষণা করতে হয়েছে ৩০ হাজার কোটি টাকার ত্রাণ প্রকল্প। যার মধ্যে ২২ হাজার কোটি ইতিমধ্যেই পেয়েছে সংস্থা। কিন্তু চাঙ্গা হওয়ার লক্ষণ তেমন চোখে পড়েনি। এই এয়ার ইন্ডিয়ার ভবিষ্যৎ নিয়ে রাজু যে উদ্বিগ্ন, বৃহস্পতিবার তা স্পষ্ট তাঁর কথাতেই।

মন্ত্রীর স্বীকারোক্তি, হিসেবের খাতার যা করুণ হাল, তাতে বেচতে চাইলেও এখন ক্রেতা পাওয়া মুশকিল হবে এয়ার ইন্ডিয়ার জন্য। একই সঙ্গে তাঁর প্রশ্ন, করদাতাদের টাকায় এ ভাবে কত দিন ভর্তুকি দেওয়া সম্ভব?

বছর কয়েক আগে ইউপিএ জমানায় এয়ার ইন্ডিয়ার দায়িত্ব নিতে উৎসাহ দেখিয়েছিল টাটা গোষ্ঠী। তখন বিমান পরিবহম মন্ত্রক রাজি হয়নি। অথচ সেই জমানাতেই ৩০ হাজার কোটি ভর্তুকি গুনে সংস্থা চাঙ্গা করার চেষ্টা শুরু হয়। তখন ফের প্রশ্ন ওঠে, করের টাকায় কেন এ ভাবে বাঁচানো হবে এয়ার ইন্ডিয়াকে?

২০০৭ সালে মিশে যায় ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্স এবং এয়ার ইন্ডিয়া। তার আগে কোনও রকমে সামান্য লোকসানে সংস্থা দু’টি চলছিল। কিন্তু একত্রীকরণের পরে শুরু হয় বিশাল লোকসান। একের পর এক বেসরকারি সংস্থার বিমান দেশের আকাশে উড়তে শুরু করার পরে প্রতিযোগিতার বাজারে মুখ থুবড়ে পড়ে এয়ার ইন্ডিয়া। অভিযোগ, সেই সময় এয়ার ইন্ডিয়া দেশের ভিতর ও বাইরে যে সব লাভজনক রুটে উড়ান চালাচ্ছিল, বেসরকারি সংস্থাকে সুবিধা করে দিতে তার মধ্যে বেশ কয়েকটি থেকে তা তুলে নেওয়া হয়। ফলে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাটির লোকসান বাড়তে থাকে। সঙ্গে যোগ হয় বিশ্ব বাজারে বিমান জ্বালানির দাম আকাশছোঁয়া হওয়ার সমস্যা।

তার উপর এয়ার ইন্ডিয়ার ব্যয়ও তুলনায় অনেক বেশি। বিশাল-বিশাল বাড়িতে বিলাসবহুল অফিস। প্রয়োজনের তুলনায় বেশি কর্মী। অলাভজনক রুট। এই অবস্থায় খরচ ছাঁটাইয়ের প্রস্তাব দেয় কেন্দ্র। তৈরি হয় কমিটি। কর্মী কমিয়ে, লাভজনক রুটে উড়ান চালিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা শুরু হয়। বিদেশে কার্যত বন্ধ করে দেওয়া হয় বহু অফিস। কিন্তু তাতে সমস্যা কিছুটা কমলেও, এখনও পুরো মেটেনি। এরই মাঝে এ দিন বিমানমন্ত্রীর সতর্কবার্তা, আর্থিক ভাবে ঘুরে দাঁড়ানোর পরিকল্পনা কার্যকর না করলে আগামী দিনে বিপদ বাড়বে এয়ার ইন্ডিয়ার।

ঘুরে দাঁড়ানোর পরিকল্পনা হিসেবে চার বছরে ১০০টি নতুন বিমান কেনার কথা জানিয়েছে এয়ার ইন্ডিয়া। তাতে প্রশ্ন উঠছে, যে মডেল সামনে রেখে ভারতের আকাশে ইন্ডিগোর মতো সংস্থা এত সফল, তা আঁকড়ে ধরার চেষ্টা কেন করছে না রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাটি? বিশেষজ্ঞদের মতে, সে জন্য কড়া হাতে খরচ কমানো জরুরি।

এ দিন মন্ত্রী বলেন, ‘‘আশা করি, এক দিন সমস্ত দেনা শোধ করে নিয়মিত লাভের মুখ দেখবে তারা। কিন্তু সে জন্য সংস্থার ভিতর থেকেই ব্যবস্থা নিতে হবে। সরকারের দিকে তাকিয়ে থাকা চলবে না।’’ সচিব আর এন চৌবেরও আশা, ২০১৮-’১৯ সালে লাভের মুখ দেখবে সংস্থা। যা না হলে ফের সেই ভর্তুকির দিকেই তাকিয়ে থাকতে হবে তাকে।

Air India public money Civil Aviation Minister
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy