Advertisement
২০ জানুয়ারি ২০২৫
পদ্ধতি নিয়ে অবস্থান বদল কেন্দ্রের

চার টুকরোয় ভেঙে বিক্রি এয়ার ইন্ডিয়া

২৮ জুন মন্ত্রিসভার আর্থিক বিষয়ক কমিটি এআই বিলগ্নিকরণে নীতিগত ভাবে সায় দেওয়ার পর থেকেই আগ্রহী ক্রেতা হিসেবে ভেসে উঠেছে বিভিন্ন সংস্থার নাম।

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০১৮ ০১:৩৯
Share: Save:

কিছু দিন আগেই কেন্দ্র জানিয়েছিল, ভেঙে নয়, পুরো এয়ার ইন্ডিয়াকে (এআই) বরং এক সঙ্গে বিক্রি করতে চায় তারা। অথচ একটি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বিমান প্রতিমন্ত্রী জয়ন্ত সিন্হার দাবি, আগে চার ভাগে ভেঙে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাটিকে বিলগ্নিকরণের রাস্তায় হাঁটার পরিকল্পনা করছেন তাঁরা। একে এআই নিয়ে রাজনৈতিক বিরোধিতা এখনও যথেষ্ট। তার উপর এখন মন্ত্রীর মুখে এমন অবস্থান বদলের কথা শুনে অনেকেরই প্রশ্ন, তবে কি সংস্থার জন্য আগ্রহী ক্রেতা পেতে হিমসিম খাচ্ছে মোদী সরকার?

সিন্‌হা জানান, বিলগ্নিকরণের জন্য এআই-কে ভেঙে চার টুকরো করা হবে। বিমান পরিবহণ ব্যবসা (মূলত আন্তর্জাতিক), ঘরোয়া উড়ান পরিষেবা, বিমানবন্দরের মাটিতে দেওয়া পরিষেবা (গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং) এবং রক্ষণাবেক্ষণ সমেত ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ। এর প্রত্যেকটির অন্তত ৫১% অংশীদারি বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়ার রাস্তা খুলে দেওয়া হবে।

সিন্‌হার আশা, চার ভাগের মধ্যে প্রথম অংশটি (এয়ার ইন্ডিয়া ও তাদের সস্তার পরিষেবা এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেস) বিক্রি চলতি বছরের মধ্যেই সেরে ফেলা যাবে। কিন্তু অনেকেরই প্রশ্ন, তবে কি ঘাড়ে বিপুল দেনার বোঝা চেপে থাকা এআইয়ের জন্য ক্রেতা পেতে হিমসিম খাচ্ছে মোদী সরকার? নইলে আগে পুরো সংস্থা এক সঙ্গে বিক্রির কথা বলেও কেন এখন উল্টো সুর? বিশেষত ষেখানে কিছু দিন আগেই ক্রেতা পাওয়ার পথ মসৃণ করতে সংস্থাটিতে ৪৯% পর্যন্ত বিদেশি লগ্নির রাস্তা খুলেছে তারা।

২৮ জুন মন্ত্রিসভার আর্থিক বিষয়ক কমিটি এআই বিলগ্নিকরণে নীতিগত ভাবে সায় দেওয়ার পর থেকেই আগ্রহী ক্রেতা হিসেবে ভেসে উঠেছে বিভিন্ন সংস্থার নাম। কেন্দ্র জানিয়েছে, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাটির বিমান পরিবহণ পরিষেবা নিতে আগ্রহপত্র দিয়েছে ইন্ডিগো। শোনা যাচ্ছে টাটা গোষ্ঠীর কথাও। এআইয়ের ‘জন্ম’ই যাদের আঁতুড়ে। সম্প্রতি বিস্তারার সিইও আবার জানিয়েছেন, এআইয়ের বিষয়ে খোলা মন নিয়ে এগোচ্ছে তাদের দুই অংশীদার টাটা গোষ্ঠী ও সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্স। বিমানবন্দরের মাটিতে দেওয়া পরিষেবা হাতে নিতে আগ্রহীদের মধ্যে শোনা গিয়েছে বার্ড গোষ্ঠী, সেলেবি-র মতো সংস্থার নাম।

সংশ্লিষ্ট মহলের অনেকেই বলছেন, এয়ার ইন্ডিয়ার ব্র্যান্ড পরিচিতি নিয়ে প্রশ্ন নেই। বহু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ‘স্লট’ তাদের পকেটে। কিন্তু তেমনই দেশে পরিষেবার হাল তেমন ভাল নয়। ঘাড়ে চেপে ৫০ হাজার কোটির দেনাও। তাই এক সঙ্গে পুরো সংস্থার ক্রেতা পেতে কেন্দ্র মুশকিলে পড়ার কারণেই এই সিদ্ধান্ত বলে তাঁদের অভিমত।

রুগ্‌ণ

• দেশের ভিতরে বিমান চালাত ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্স। বাইরে এয়ার ইন্ডিয়া। ২০০৭ সালে মিশল দুই সংস্থা। নাম এয়ার ইন্ডিয়া-ই

• লোকসানের বোঝা আরও বিপুল তখন থেকেই। এখন দেনা ৫০ হাজার কোটি টাকারও বেশি

• বছরে সুদই ৪ থেকে ৫ হাজার কোটি

• ২০১২ সালে বাঁচিয়ে রাখতে ৩০ হাজার কোটির ত্রাণ প্রকল্প

বিলগ্নিকরণ

• করদাতাদের টাকায় লোকসানে এয়ার ইন্ডিয়া চালাতে নারাজ কেন্দ্রীয় সরকার

• গত ২৮ জুন এয়ার ইন্ডিয়া বিলগ্নিকরণে নীতিগত ভাবে সায় দেয় কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার আর্থিক বিষয়ক কমিটি

• হালে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে ৪৯% পর্যন্ত বিদেশি লগ্নিতেও

• আগ্রহী ক্রেতা হিসেবে শোনা গিয়েছে ইন্ডিগো, টাটাদের নাম

• বিমানবন্দরের মাটিতে দেওয়া পরিষেবা হাতে নিতে আগ্রহী হিসেবে ভাসছে বার্ড গোষ্ঠী, সেলেবি-র মতো সংস্থার নামও

খটকা এখনও

• এয়ার ইন্ডিয়া বিলগ্নিকরণ নিয়ে রাজনৈতিক বিরোধিতা এখনও যথেষ্ট

• সংসদীয় কমিটি চায় আগে চেষ্টা হোক তাকে ঘুরিয়ে দাঁড় করানোর

• বিকল্প রাস্তা খোলা রাখার কথা বলেছেন খোদ বিমানমন্ত্রীও

• আগে কেন্দ্র বলেছিল, পুরো সংস্থা এক সঙ্গে বিক্রির কথা। অথচ চার ভাগের কথা বলা হচ্ছে এখন

• প্রশ্ন, তবে কি এত কিছুর পরেও কঠিন হচ্ছে আগ্রহী ক্রেতা পাওয়া?

অন্য বিষয়গুলি:

Air India Aircraft Aviation Minister Split
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy