Advertisement
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

আমার অধিকার

ধন্যবাদ। বিষয়-আশয়ে ৩১ ডিসেম্বর মেয়েদের অধিকার নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশের পরে আপনাদের অসংখ্য চিঠি পেয়েছি। যেখানে অধিকার ছিনিয়ে নেওয়ার একলা লড়াইয়ের জেদ আছে। রয়েছে সম্পর্কের টানাপড়েন। আর অবশ্যই আইনের কর্কশ জটিলতা। জিজ্ঞাসা অনেক। জায়গা অল্প। তাই আইনি খুঁটিনাটি নিয়ে কিছু বাছাই প্রশ্নের উত্তর আজ এখানে। আশা এই যে, তা কাজে লাগবে সকলেরইমাথা উঁচু করে বাঁচতে চাইলে যে পায়ের নীচের জমি মজবুত হওয়া দরকার সেটা বলে দেওয়ার অপেক্ষা রাখে না। আর সে জন্য প্রতিটি মেয়েকে প্রথমেই বুঝে নিতে হয় নিজের আর্থিক অধিকারগুলো।

জয়ন্ত নারায়ণ চট্টোপাধ্যায়

জয়ন্ত নারায়ণ চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০১৬ ০৪:২৫
Share: Save:

মাথা উঁচু করে বাঁচতে চাইলে যে পায়ের নীচের জমি মজবুত হওয়া দরকার সেটা বলে দেওয়ার অপেক্ষা রাখে না। আর সে জন্য প্রতিটি মেয়েকে প্রথমেই বুঝে নিতে হয় নিজের আর্থিক অধিকারগুলো। যে-কারণে গতবার মেয়েদের অধিকার নিয়ে লেখায় অবিবাহিত ও একা, বিবাহিত এবং স্বামী হারানো— যে কোনও পরিস্থিতিতে একটি মেয়ে বাবা কিংবা স্বামীর সম্পত্তির কতটা হকদার, সেটাই তুলে ধরা হয়েছিল (বিশদে জানতে ৩১ ডিসেম্বরের বিষয় আশয় দেখতে পারেন। পাবেন www.anandabazar.com ওয়েবসাইটেও)।

কিন্তু এত কিছু বলেও বহু বিষয় যে না-বলাই রয়ে যায় সেটা আপনাদের উপচে পড়া চিঠি পেয়ে আরও একবার বুঝেছি আমরা। দেখেছি, যতটা ভাবছি, তার থেকেও কত বেশি যন্ত্রণা বয়ে আনে বাস্তবের রূঢ় ছবি। তাই এ বার সেই ছবি ধরে ধরেই সমাধানের পথ খুঁজেছি আমি। চেষ্টা করেছি অন্তত কিছুটা ভরসা জোগাতে।

গত নভেম্বর আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল ‘২০০৫-এর আগে পিতৃবিয়োগ হলে সম্পত্তি পাবে না মেয়েরা’ শীর্ষক একটি খবর। সেখানে লেখা হয়েছিল— ‘‘সুপ্রিম কোর্টের রায়ে এক ধাক্কায় বহু ভারতীয় মহিলার পৈতৃক সম্পত্তির উপর থেকে অধিকার চলে গেল। এই রায় অনুযায়ী, ২০০৫ সালের আগে যদি বাবার মৃত্যু হয়, তা হলে সম্পত্তিতে আইনত অধিকার থাকছে শুধু পুত্র সন্তানের।’’ অথচ গত ৩১ ডিসেম্বরের বিষয় আশয়ে ‘মেয়েদের অধিকার’ শিরোনামে যে প্রবন্ধ বেরিয়েছে, তাতে এ নিয়ে কোনও কথা নেই। বিষয়টি বিস্তারিত জানালে ভাল হয়।

বিকাশ কুমার রায়, বাসবী রায়, শুভ্রা, প্রিয়লাল অধিকারী, রাজদীপা চৌবে, আবীর চন্দ, রিকি পাণ্ডে, তপতী গুপ্ত

গত ডিসেম্বরের লেখায় আমি এই বিষয়টির উল্লেখ করিনি, কারণ সুপ্রিম কোর্টের দেওয়া ওই রায়টি শুধুমাত্র মিতাক্ষরা আইন দ্বারা শাসিত একান্নবর্তী হিন্দু পরিবারগুলির (হিন্দু আনডিভাইডেড ফ্যামিলি) ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। ২০০৫-এ হিন্দু উত্তরাধিকার আইনে একটি সংশোধনী আসে। যার সুবিধা নিতে গেলে দেখতে হবে যে, সংশোধনীটির তারিখে ওই অবিভক্ত পরিবারের সহ-উত্তরাধিকারী (কোপারসিনর) জীবিত ছিলেন।

যে সমস্ত হিন্দু মূলত জন্মসূত্রে বাঙালি ও বাংলার আশেপাশের অঞ্চলের অধিবাসী, তাঁরা ‘দায়ভাগ হিন্দু’ হিসেবে চিহ্নিত। সুপ্রিম কোর্টের সাম্প্রতিক রায়ের ফলে এই হিন্দুরা প্রভাবিত হবেন না। কারণ রায়টি মূলত মিতাক্ষরা হিন্দুদের জন্য।

যাঁরা বিশদে জানতে চেয়েছেন, এ বার তাঁদের জন্য মিতাক্ষরা ও দায়ভাগ হিন্দুদের বিষয়টি একটু বুঝিয়ে বলছি।

হিন্দু আইনের দু’টি মূল ধারা। মিতাক্ষরা ও দায়ভাগ বা বঙ্গ ধারা।

মিতাক্ষরা ধারায় ৪টি উপশাখা (সাবস্কুল) আছে। বারাণসী, মিথিলা, মহারাষ্ট্র এবং দ্রাবিড় বা মাদ্রাজ। যাজ্ঞবল্ক স্মৃতির উপর বিজ্ঞানেশ্বরের ধারাভাষ্যই মিতাক্ষরা নামে পরিচিত। অন্য দিকে, জীমূতবাহনের ধারাভাষ্য পরিচিত দায়ভাগ নামে। দায়ভাগ বাংলা ও অসম-সহ বাংলার আশপাশের কিছু অঞ্চলে সীমাবদ্ধ।

মিতাক্ষরা ধারায় উত্তরাধিকার বিচার হয় ব্যক্তির আত্মীয়তার নৈকট্যের উপর। আর দায়ভাগ ধারা নৈকট্যের উপর গুরুত্ব দেয় না। বরং এখানে তার বিচার হয় ধর্মীয় নৈকট্য বা পিণ্ডদান করার অধিকার অনুযায়ী।

মিতাক্ষরা আত্মীয়ের নৈকট্যকে গুরুত্ব দিলেও, এই আইনে মহিলাদের উত্তরাধিকার থেকে বাদ দেওয়া হয় এবং প্রাধান্য দেওয়া হয় পুরুষের মাধ্যমে প্রাপ্ত উত্তরাধিকারীদেরই। মিতাক্ষরা আইন এক অভিনব ব্যবস্থা পুত্রদের জন্মগত অধিকারের ব্যাপারে। এতে একটি পরিবারে যে-মুহূর্তে একজন পুত্র জন্মগ্রহণ করে, সেই মুহূর্তে ওই একান্নবর্তী পরিবারের সম্পত্তিতে তার অধিকার জন্মায় এবং সে যে-কোনও সময়ে ওই সম্পত্তি থেকে নিজের অংশ আলাদা করে নিতে পারে। সুতরাং জন্মানোর পরেই পিতার সঙ্গে পুত্রের এবং প্রতিটি পুত্রের সমানাধিকার জন্মায় সম্পত্তিতে। এবং ‘সারভাইভারশিপ’ (যাঁরা বেঁচে থাকবেন) অনুযায়ী উত্তরাধিকার নির্ধারিত হয়।

কিন্তু দায়ভাগ মতানুযায়ী, সম্পত্তিতে পুত্রের কোনও জন্মগত অধিকার থাকে না। যতদিন পিতা জীবিত আছেন, ততদিন তিনিই সে সবের মালিক। তা সে সম্পত্তি পৈতৃকই হোক বা স্ব-আয়ত্ত করা। কোনও ব্যক্তি জীবদ্দশায় নিজের সম্পত্তি ইচ্ছানুসারে বিলি-বণ্টন করতে পারেন। এটা হতে পারে ইচ্ছাপত্রের মাধ্যমে। তবে এই ইচ্ছাপত্র কার্যকর হবে তাঁর মৃত্যুর পরে। একে বলে ‘টেস্টামেন্টারি ডিসপোজিশন’। যদি কোনও ব্যক্তি তাঁর মৃত্যুর পরে সম্পত্তি কে পাবেন ঠিক না-করেই মারা যান, তা হলে আইন তা স্থির করবে। মনে রাখতে হবে, সম্পত্তির মালিকের মৃত্যুর পরে কাউকে না কাউকে মালিক হতেই হবে। আর কে সেই মালিক সেটাও চিহ্নিত করা প্রয়োজন।

মিতাক্ষরা মত অনুযায়ী জয়েন্ট ফ্যামিলির সম্পত্তি বা অবিভক্ত হিন্দু পরিবারের সম্পত্তি ভাগ হবে ‘সারভাইভারশিপ’ অনুযায়ী।

আধুনিক আইনে যখন এক হিন্দু পুরুষ মারা যান মিতাক্ষরা ‘কোপারসিনারি’ বা সহ-উত্তরাধিকার সম্পত্তিতে স্বত্ব রেখে, তখন তাঁর সেই স্বত্বের উত্তরাধিকার এই আইন অনুযায়ী নির্দিষ্ট হবে না। বরং হবে ‘সারভাইভারশিপ’ অনুযায়ী। কিন্তু এই নিয়ম শর্তসাপেক্ষ। শর্তটি হল, যদি এই মিতাক্ষরা সহ-উত্তরাধিকারী তাঁর কোনও মহিলা আত্মীয় রেখে মারা যান বা মহিলা আত্মীয়ের মাধ্যমে উত্তরাধিকার দাবি করা পুরুষ আত্মীয় রেখে মারা যান, তা হলে এই অবিভক্ত স্বত্ব সারভাইভারশিপ সূত্রে প্রাপ্য না-হয়ে বর্তমান আইনের উত্তরাধিকার সূত্রে হবে। যদি এই সহ-উত্তরাধিকারীর মৃত্যুর আগেই পার্টিশন হয়ে থাকে, তা হলে অবশ্য এই শর্ত কার্যকরী হবে না। ১৯৫৬ সালের এই আইন দু’টি ভাগে বিভক্ত—১) টেস্টামেন্টারি সাকসেশন (ইচ্ছাপত্র বা উইল দ্বারা সম্প্রতি বিলি-বণ্টনের ব্যবস্থাপনা) ২) ইনটেসটেট সাকসেশন (এই ধরনের কোনও ব্যবস্থা না রেখে মারা যাওয়া)।

কোনও হিন্দু পুরুষ মারা গেলে বর্তমান আইন অনুযায়ী নিম্নলিখিত ব্যক্তিরা তাঁর সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হবেন—

১) মা ২) বিধবা স্ত্রী ৩) কন্যা ৪) পুত্র ৫) মৃত পুত্রের স্ত্রী ৬) মৃত পুত্রের সন্তান (পুত্র ও কন্যা) ৭) মৃত পুত্রের মৃত পুত্রের বিধবা স্ত্রী ৮) মৃত পুত্রের মৃত পুত্রের কন্যা ৯) মৃত পুত্রের মৃত পুত্রের পুত্র ১০) মৃত কন্যার কন্যা ১১) মৃত কন্যার পুত্র।

প্রতিটি কন্যা ও পুত্র এবং স্ত্রী ও মা, সকলের মধ্যে সমান ভাবে সম্পত্তি ভাগ হবে। পুত্রের অবর্তমানে তার অংশ সমান ভাগে ভাগ করা যাবে তাঁর স্ত্রী ও সন্তানদের মধ্যে।

ধরা যাক, সম্পত্তির মালিক যখন মারা গেলেন তখন উপরে উল্লিখিত কোনও ব্যক্তি বর্তমানে নেই। তখন শুধুমাত্র মৃত ব্যক্তির পিতা ওই মৃত ব্যক্তির সম্পত্তির উত্তরাধিকার হবেন।

পিতাও যদি না-থাকেন, সেই মৃত ব্যক্তির সম্পত্তির
উত্তরাধিকারী হবেন—

১) পুত্রের কন্যার পুত্র। ২) পুত্রের কন্যার কন্যা, ৩) ভাই, ৯) বোন।

যাঁদের কথা বললাম, তাঁদেরও অবর্তমানে উত্তরাধিকারী হবেন—

১) মেয়ের ছেলের ছেলে। ২) মেয়ের ছেলের মেয়ে। ৩) মেয়ের মেয়ের ছেলে। ৪) মেয়ের মেয়ের মেয়ে।

ওপরে যাঁদের কথা বললাম, তাঁদেরও অবর্তমানে—

১) ভাইয়ের ছেলে (ভ্রাতুষ্পুত্র), ২) ভাইয়ের মেয়ে (ভ্রাতুষ্কন্যা), ৩) ভাগ্নে (দিদি বা বোনের ছেলে), ৪) ভাগ্নি (মেয়ে) উত্তরাধিকারী হবেন।

ওই ব্যক্তিদেরও অবর্তমানে, উত্তরাধিকারী হবেন—

১) ঠাকুরদা, ২) ঠাকুরমা।

ওই ব্যক্তিদের অবর্তমানে উত্তরাধিকারী হবেন—

১) বাবার বিধবা স্ত্রী (সৎ মা) বা বিমাতা। ২) ভাইয়ের বিধবা স্ত্রী।

আবার তাঁদেরও অবর্তমানে উত্তরাধিকারী হবেন—

১) বাবার ভাই (কাকা) অথবা
২) বাবার বোন (পিসি)।

আবার তাঁদেরও অবর্তমানে উত্তরাধিকারী হবেন—

১) মায়ের বাবা অথবা ২) মায়ের মা (মাতামোহী)।

আবার তাঁদেরও অবর্তমানে—

১) মায়ের ভাই (মামা) অথবা
২) মায়ের বোন (মাসি)।

২০০৫ সালে হিন্দু উত্তরাধিকার আইনে বড় ধরনের সংশোধনী আনা হয়। যার লক্ষ্যই ছিল মিতাক্ষরা নীতি অনুযায়ী শাসিত সহ-উত্তরাধিকার সম্পত্তিতে নারী ও পুরুষের সমান অধিকার প্রতিষ্ঠিত করা।

সুতরাং সর্বোচ্চ আদালতের রায় অনুযায়ী, ২০০৫ সালের ৯ই সেপ্টেম্বর থেকে মিতাক্ষরা আইন দ্বারা শাসিত একান্নবর্তী হিন্দু পরিবারে সহ-উত্তরাধিকারী ব্যক্তির কন্যা জন্মমুহূর্ত থেকেই সহ-উত্তরাধিকারিণী হবেন তাঁর নিজের অধিকারে। পুত্র-সন্তান হলে ওই সহ-উত্তরাধিকার সম্পত্তিতে তিনি যা পেতেন, সেই সমস্ত অধিকারই জন্মাবে তাঁর। এবং তিনি সেই সকল দায়ভার বহন করবেন, যা সেই সম্পত্তির ক্ষেত্রে একজন পুত্র করে থাকেন। কিন্তু এ ক্ষেত্রে একটি শর্ত আছে। তা হল, ২০ ডিসেম্বর ২০০৪ তারিখের আগে হওয়া কোনও পার্টিশন বা উইলকৃত বিলি-বণ্টন ব্যবস্থাকে নাকচ করবে না এই সংশোধন। ওই নিয়ম অনুযায়ী যখন হিন্দু নারী সহ-উত্তরাধিকারিণী হন, তখন তিনি ওই সম্পত্তির বিলি-বণ্টন করতে পারেন উইলের মাধ্যমে।

২০০৫ সালের ৯ সেপ্টেম্বরের পরে যদি কোনও হিন্দু ব্যক্তি মারা যান, তা হলে মিতাক্ষরা আইন দ্বারা শাসিত অবিভক্ত হিন্দু পরিবারে সম্পত্তিতে তাঁর স্বত্ব সারভাইভারশিপ অনুযায়ী বর্তাবে কিংবা বর্তাবে হিন্দু উত্তরাধিকার (সংশোধনী) আইন ২০০৫ অনুযায়ী, মানে ‘টেস্টামেন্টারি’ বা ‘ইনটেস্টেট সাকসেশন’ অনুসারে।

এ বারে আর একটি কথা বলি, সুপ্রিম কোর্টের অতি সাম্প্রতিক রায়ে বলা হয়েছে যে, এই সংশোধনের কোনও ‘রেট্রোস্পেকটিভ এফেক্ট’ হবে না। অর্থাৎ মিতাক্ষরা মহিলাদের জন্য উত্তরাধিকার সংশোধনীর তারিখ থেকেই কার্যকর হবে।

আমি অবিবাহিতা, ৮০% শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী (হুইলচেয়ার নির্ভর)। চাকরি করি। পরিবারে আমি , মা, বাবা, দাদা ও বৌদি, এই পাঁচ জন। মা গৃহবধূ। আমি, মা ও বাবা একই বাড়িতে থাকি। দাদা বৌদিকে নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে থাকেন। আমার

সমস্যা হল—

বাবা আমাদের খরচ বহন করতে চান না। নিজের খরচ খুব বেশি বলে মায়ের পুরোটা চালাতে পারি না আমি। বাবার বক্তব্য, আমাকে সংসারে টাকা দিয়ে থাকতে হবে। দাদাও তাই চান। ওঁদের চাহিদা মেনে সংসারে বাড়তি টাকা দেওয়া আমার পক্ষে অসম্ভব। দাদা মায়ের হাতে মাসে কিছু টাকা দেওয়া ছাড়া সংসারে আর কোনও দায়িত্ব পালন করেন না। দাদার মতে, বিয়ের পরে মা-বোনকে দেখার দায়িত্ব তাঁর নয়। বর্তমানে আমি নিজের খরচ ও মায়ের কিছু খরচ বহন করি। বাবা বাড়ির বিদ্যুৎ ও মায়ের ওষুধের টাকা দেন। তবে সেটুকু ভরণপোষণ দিতেও উনি অত্যন্ত দুর্ব্যবহার করেন। বাইরের লোকজনের সামনেই মাকে অত্যন্ত বাজে কথা বলেন।

এই ভাবে প্রতি দিন আমি আর মা তীব্র মানসিক যন্ত্রণার মধ্যে দিয়ে দিন কাটাচ্ছি। মায়ের বয়স হয়েছে। সংসারের সমস্ত কাজের চাপ এবং এই মানসিক যন্ত্রণায় অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। আমার প্রশ্ন—

১) পরিবারের এই অবস্থার কি প্রতিকার সম্ভব?

২) মা কি ভরণপোষণের খরচ বাবার থেকে দাবি করতে পারেন?

৩) বাড়ি বাবার তৈরি। তা দাদার নামে লিখে দিলে বা দান করলে কি আইনি পদক্ষেপ করতে পারি?

৪) বাবা আমাদের বাড়ি থেকে বার করে দিতে চাইলে কী করব?

৫) বাবা সরকারি চাকরি করতেন। এখন পেনশন পান। পেনশনে মা, বাবার যৌথ নাম থাকলেও মাকে কিছু দেন না। হাঁটাচলা সীমিত হওয়ায় আমার পক্ষে আদালতের দ্বারস্থ হওয়া অসুবিধাজনক। কী করব?

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক

আপনার কষ্টের দিনযাপনের ছবি খুব স্পষ্ট হয়ে উঠে এসেছে আমাদের সামনে। তীব্র মানসিক যন্ত্রণাটা অনুভব করতে পারছি। তবে এটা শুধু আপনার সমস্যা নয়, সারা পশ্চিমবঙ্গের বহু পরিবারেই এ ছবি দেখা যায়।

বরং এত প্রতিকূল অবস্থার মধ্যেও যে ভাবে চাকরি করছেন, নিজের খরচ নিজে চালাচ্ছেন, মায়ের মানসিক সহায় হচ্ছেন, সামান্য হলেও আর্থিক সাহায্য করতে পারছেন তাঁকে, এটাই তো বিশাল ব্যাপার। শারীরিক ভাবে বহু সুস্থ-স্বাভাবিক মানুষের কাছেই যা চোখ খুলে দেওয়ার মতো। আপনার এই মানসিক দৃঢ়তাকে সাধুবাদ জানাই।

অনেক খুঁজে পেতে আপনার পরিবারের একটি ইতিবাচক দিক বার করেছি। সেটি হল, মোটামুটি সবাই মিলে কিন্তু এখনও পরিবারকে চালানোর চেষ্টা করে যাচ্ছেন। আপনি নিজের বিপুল খরচ চালান। তা সত্ত্বেও মা-কে কিছু টাকা দেন। আপনার দাদা মনে করেন, নিজের বিয়ের পর মা-বোনকে দেখার দায়িত্ব তাঁর নয়। তবুও মাসে মাসে মায়ের হাতে কিছু টাকা দিয়ে যাচ্ছেন। আবার টাকা দিলে তিনি আপনাকে সংসারে রাখতেও রাজি। বাবারও মত একই। খুব খারাপ ব্যবহার করলেও বাড়ির বিদ্যুৎ ও মায়ের ওষুধের খরচ দিচ্ছেন তিনি।

অর্থাৎ আমি বলতে চাইছি, একসঙ্গে বসে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের পথ হয়তো এখনও খোলা থাকতে পারে। একবার চেষ্টা করে দেখুন। আসলে একটি পরিবারে সব রকম পরিস্থিতির আইনি প্রতিকার সম্ভব না-ও হতে পারে। যেমন, দাদার শ্বশুরবাড়িতে থাকা, মায়ের সঙ্গে বাবার দুর্ব্যবহার, সংসারে বাবা ও দাদার তেমন আর্থিক সহায়তা না-করা। এই সবের জন্য চট করে আইনি পথে না-গেলেও চলে। সকলে মিলে কথা বলে উপায় বার করা যায়।

যদিও এটা ঠিক, দাদা ও বাবা, উভয়ের থেকেই উপযুক্ত ‘খরপোষ’ পাওয়ার আইনি অধিকার আছে আপনার মায়ের। অধিকার রয়েছে সংসারে সম্মানের সঙ্গে মাথা উঁচু করে বাঁচারও। তবে মা-বাবার বয়স হয়েছে। এ বয়সে মা কি বাবার বিরুদ্ধে মামলা করবেন? চাইলে সেটা করা যায়। কিন্তু করার আগে দশ বার ভাবুন।

তবে বাইরের লোকের সামনে হেনস্থা বন্ধ করতে আপনার মা ‘গার্হস্থ্য হিংসা নিবারণী আইন’-এ আদালতের দ্বারস্থ হতে পারেন। এতে একই সঙ্গে তিনটি সুবিধা পেতে পারেন তিনি।

১) আর্থিক সুবিধা বা ‘মনিটারি রিলিফ’ অর্থাৎ খোরপোষ।

২) ‘রেসিডেন্সি অর্ডার’ অর্থাৎ বাসস্থানজনিত সমস্যা থাকলে তার সমাধান হতে পারে।

৩) ‘প্রোটেকশন অর্ডার’ অর্থাৎ সুরক্ষা। আপনাদের এলাকার জন্য নির্দিষ্ট ‘প্রোটেকশন অফিসার’-ই মায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবেন।

তবে আবার বলছি, বাবারও বয়স হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করবার আগে মা যেন বারবার ভাবেন।

হ্যাঁ, আপনার মা তাঁর স্বামীর থেকে প্রাপ্য ভরণপোষণের জন্য খরচ দাবি করতে পারেন। ‘গার্হস্থ্য হিংসা নিবারণী আইন’-এর অধীনে আর্থিক সুরাহা দাবি করতে পারেন। আর ফৌজদারি কার্যবিধিতে ১২৫ নং ধারায় খোরপোষ দাবি করতে পারেন।

বাড়িটি যখন বাবার নামে, তখন তিনি চাইলে সেটি দাদার নামে দানপত্র করে দিতেই পারেন। আদালতে দানপত্র চ্যালেঞ্জ করাও কঠিন। তবে তিনি উইল করে দাদাকে বাড়ি দিয়ে গেলে বাবার মৃত্যুর পরে সেই উইল চ্যালেঞ্জ করতে পারবেন আপনি।

বাবা আপনাদের বাড়ি থেকে বার করে দিতে চাইবেন, এটা ভাবতেই পারছি না। তবে, সত্যিই সেটা করতে চাইলে আদালতের দ্বারস্থ হতে হবে।

তিনি সরকারি চাকুরে ছিলেন ও পেনশন পান বলেই মা খোরপোষ চেয়ে মামলা করলে সহজে তা পাবেন।

আমি বিধবা। কোনও ছেলে নেই। দাদারা আমাকে বাবার সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করেছে। ফলে এ বিষয়ে সাহায্য করার মতো কেউ নেই পাশে। কী করা উচিত?

দীপা ঘোষ, কটক

একজন মহিলা নানা ভাবে সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হতে পারেন। আপনি কী ভাবে হয়েছেন বলেননি। বাবার মৃত্যুর পরে বিবাহিতা দিদি বা বোনের অনুপস্থিতিতে অনেক সমেয়ই ভাইয়েরা কৌশলে পৈতৃক সম্পত্তি হাতিয়ে নেন।

কিন্তু কী ভাবে তা করা হয়েছে জানাতে হবে। ভাইয়েরা সম্পত্তি হাতানোর পর সেটা কি নথিবদ্ধ করেছেন? জানতে হবে, যে পদ্ধতিতে তাঁরা তা হস্তগত করেছেন সেই পদ্ধতিটি আদালতে চ্যালেঞ্জ করা যাবে কি না। বাবাকে দিয়ে জোর করে উইল করিয়ে সম্পত্তি নিয়ে থাকলে অনেক সময়ই সেই উইল চ্যালে়ঞ্জ করার রাস্তা থাকে। আবার তাঁরা যদি বাবাকে দিয়ে জোর জবরদস্তি দানপত্র দলিল বা ওই রকম কিছু লিখিয়ে নিয়ে থাকেন, তা হলেও আদালতে যাওয়ার পথ আছে কি না দেখতে হবে। তবে অনেক সময়ই দেখা যায়, মেয়ের বিয়ের পরে বাবা-মা বসতবাড়ি ছেলেদের দিয়ে দেন। ফলে কোনও কারণে মেয়ে বাপের বাড়িতে ফিরে আসতে বাধ্য হলে গোল বাধে। শ্বশুরবাড়িতে ফেরা যায় না। আবার বাপের বাড়িতেও ঠাঁই হয় না। ফলে পায়ের নীচের মাটি হারিয়ে চূড়ান্ত বিপদে পড়েন তাঁরা।

এই পরিস্থিতিতে আপনার এলাকার লিগাল এইড বা আইনি পরামর্শদাতার সঙ্গে যোগাযোগ করুন। প্রতিটি জেলাতেই জেলা জজের আদালতে আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের অফিস থাকে। সেখানে যোগাযোগ করে নিখরচায় আইনি পদক্ষেপের সুযোগ পেতে পারেন।

বাবা মারা গিয়েছেন ১৯৯০ সালে। মা বেঁচে। আমরা দুই বোন, পাঁচ ভাই। এই অবস্থায় আমি কি বাবার সম্পত্তির অংশীদার? বাবা উইল করে যাননি।

গীতশ্রী বিশ্বাস

অনেক মহিলার মনেই এই প্রশ্নটা জাগছে যে, সুপ্রিম কোর্টের সাম্প্রতিক রায়ের পরে ২০০৫ সালের আগে যে সব মহিলারা পিতৃহারা হয়েছেন, তাঁরা বাপের বাড়ির সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হবেন কি না। এর উত্তর আমি প্রথমেই দিয়েছি একবার। তবু আপনার প্রশ্নের পরিপ্রেক্ষিতে আরও একবার বলছি।

হিন্দুদের দু’টি ভাগ— দায়ভাগ ও মিতাক্ষরা। যাঁরা মূলত জন্মসূত্রে পশ্চিমবঙ্গ বা তার আশপাশের অঞ্চলের অধিবাসী, তাঁরা দায়ভাগ হিন্দু হিসেবে চিহ্নিত। এই হিন্দু মেয়েরা পুরোমাত্রায় বাপের বাড়ির সম্পত্তির অংশীদার। কাজেই আপনার বাবা উইল করে যাননি বলে ওনার রেখে যাওয়া সম্পত্তির সমান অংশীদার মা-সহ সব ভাইবোনেরা। অর্থাৎ আপনি নিজে ওই সম্পত্তির ১/৮ অংশের ভাগীদার। অতএব আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সম্পত্তি ভাগ করে নিন। আর তা না হলে আদালতের দরজা তো খোলাই রয়েছে।

বাবা ও মা মারা গিয়েছেন। আমার দুই দাদা ও পাঁচ দিদি। এর মধ্যে দুই দিদিও আর নেই। স্বামীর চাকরিসূত্রে দেশের বিভিন্ন অংশে থেকেছি। বছর সাতেক আগে উনি অবসর নেওয়ায় কলকাতা ফিরেছি। কিন্তু থাকার জন্য বাড়ি করে উঠতে পারিনি। এই অবস্থায় এক দাদা বাবার জমিতেই বাড়ি তৈরির প্রস্তাব দেন। তিনি বরোদায় থাকেন। দাদার বক্তব্য ছিল, কলকাতায় আর ফেরার ইচ্ছে নেই ওঁর। ভবিষ্যতে খুব তাড়াতাড়ি আমার নামে তা একটি দানপত্র করে দেবেন বলে কথাও দেন।

কিন্তু, পরে জানতে পারি, বহু দিন আগেই (১৯৯৬ সালের ২৩ নভেম্বর) ওই জমি আর/আর দফতরে দুই দাদার নামে নথিভুক্ত করা হয়ে গিয়েছে। অথচ সম্মতি নেওয়া দূর, আমাকে এ ব্যাপারে কিছু জানানোও হয়নি। এখন দাদারা বলছেন, আমাকে সম্পত্তির ভাগ দিতে চান না তাঁরা। আমি নিঃসন্তান। এখন তেমন রোজগারও নেই। খুবই অসুবিধায় রয়েছি। কী ভাবে জমিতে আমার ভাগ আদায় করব?

শুভ্রা পাল

আধুনিক আইন অনুযায়ী পৈতৃক সম্পত্তিতে বিবাহিতা মহিলাদেরও সমান অধিকার। ফলে ওই সম্পত্তিতে আপনাদের সব বোনেদেরই অধিকার থাকার কথা। কিন্তু এখানে অন্য একটি আইনি ভাঁজ রয়েছে। আপনার লেখা পড়ে বুঝলাম, যেখানে আপনারা বাবা, মায়ের সঙ্গে ছোটবেলা কাটিয়েছেন সেই সম্পত্তি আপনার বাবার কেনা নয়, দখলি। এবং সেটি রিফিউজি রিহ্যাবিলিটেশন দফতর বা উদ্বাস্তু পুনর্বাসন দফতরের অধীন। এ রকম ক্ষেত্রে সরকার দানপত্রদাতা হিসেবে দানপত্র গ্রহীতাকে সম্পত্তি দিয়ে থাকেন। জীবদ্দশায় আপনার বাবাকে তেমন দানপত্র গ্রহীতা হিসেবে দলিল দিয়ে উঠতে পারেনি সরকার।

আপনি হয়তো দাদার কথা শুনে ওই জমিতে বাড়ি তৈরি করে ফেলেছেন। কিন্তু বাবা, মা মারা যাওয়ার পরই সম্পত্তিটি দুই দাদা উদ্বাস্তু পুনর্বাসন দফতরের কাছ থেকে নিজেদের নামে করে নিয়েছেন। এই ব্যাপারটি উচিত কি অনুচিত, আইনি কি বেআইনি, সেটা নির্ধারণ করতে পারে একমাত্র আদালত, যদি আপনি বিচার চেয়ে সেখানে যান।

তবে ব্যাপারটা দাঁড়াচ্ছে এ রকম, আপনি দাদাদের নামাঙ্কিত জমিতে নিজের খরচে বাড়ি তৈরি করেছেন। উদ্বাস্তু পুনর্বাসন দফতর তাঁদের নামে ওই দলিল দিয়েছেন ১৯৯৬ সালে। আর ২০০৯ সালে আপনার স্বামী চাকরি থেকে অবসর নিয়ে কলকাতায় চলে আসার পরে বাড়ি তৈরি হয়।

তবে হ্যাঁ, আপনার দাদা চাইলে জমিটি আপনাকে হস্তান্তর করতে পারেন। সাধারণ ভাবে এই ধরনের জমিগুলির ক্ষেত্রে যে দলিল তৈরি হয়, সেখানে ১০ বছরের একটা নিষেধাজ্ঞা থাকে জমি হস্তান্তরের ক্ষেত্রে। এখানে জমিটি সংশ্লিষ্ট দফতরের থেকে দানপত্র হওয়ার পর ১০ বছর কেটে গিয়েছে। দাদা চাইলে এখন দানপত্র করে তা আপনাকে দিয়ে
দিতেই পারেন।

তবে আমি বলব অন্য কথা। ভুল বুঝিয়ে অর্থাৎ প্রতারণা করে ওই জমিতে আপনাকে দিয়ে বাড়ি তৈরি করা হয়েছে অসৎ উদ্দেশ্যে— এই অভিযোগে আদালতে মামলাও করা যেতে পারে।

আবার এটাও ঠিক, আপনাদের সন্তানাদি নেই। স্বামীও অবসর নিয়েছেন। অর্থাৎ দুজনেরই বয়স হয়েছে। অন্য দিকে, দাদা কিন্তু তাঁর নামের জমিটিতে আপনাকে বাড়ি করে থাকতেও দিয়েছেন। তিনি আপনাকে দিয়ে বাড়ি তৈরি করিয়ে এ বার আপনাকে জমি থেকে উৎখাত করতে চাইছেন, এমন অভিযোগ আপনি করেননি। তাই সব শেষে বলব, ভাই-বোনে দখলি সম্পত্তিটুকু নিয়ে মামলা-মোকদ্দমায় না জড়িয়ে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা মিটিয়ে নিলেই মানসিক ভাবে শান্তি পাবেন।

মায়ের বাপের বাড়িতে সাত কাঠা জমি রয়েছে দাদু ও দিদার নামে। তাঁরা বেঁচে নেই। ওই বাড়িতে এখন মামারা থাকেন। আমার প্রশ্ন— ১) দাদু-দিদার সম্পত্তিতে কি মায়ের অধিকার আছে? ২) বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে চাইলেও মামারা শুনছেন না। কী করব? ৩) আইনি পদক্ষেপ নেব কি? কী ভাবে এগোবো? ৪) আইনি পথে যেতে গেলে কত খরচ হতে পারে? আর্থিক সমস্যার মধ্যে রয়েছি। সাধ্যের মধ্যেই এই রাস্তায় হাঁটা সম্ভব?

বৈশালী মুখোপাধ্যায়

আপনার দাদু-দিদা সম্পত্তির ভাগ-বাটোয়ারা করে না-গেলে তাঁদের নামের ওই বাড়িতে আপনার মায়ের অংশ রয়েছে। তবে হ্যাঁ, সম্পত্তি ভাগের ব্যাপারে মামাদের সঙ্গে কথা বলতে গেলে তাঁরা যে আগ্রহ দেখাবেন না, সেটাই স্বাভাবিক। কারণ, সাত কাঠা জমি-সহ গোটা বাড়িটাই তাঁদের দখলে। এত বছর বাদে আপনাদের সেটার অংশ দাবি করা তাঁরা পছন্দ করছেন না। প্রথমে আপনার মা আইনজীবীর মাধ্যমে মামাবাড়িতে আইনি নোটিস দিতে পারেন বাড়ির ভাগ চেয়ে। দেখুন কী উত্তর আসে। সেই উত্তরে সন্তুষ্ট না হলে দেওয়ানি মামলার আশ্রয় নিতে পারেন। মামলা চালানোর খরচ বলা সম্ভব নয়। তবে জেনে রাখুন, প্রতিটি জেলাতেই জেলা জজের আদালতে আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের দফতর থাকে। সেখানে যোগাযোগ করে নিখরচায় সমস্ত আইনি পদক্ষেপ করার সুযোগ পেতে পারেন।

মায়েরা পাঁচ বোন, তিন ভাই। দাদু, দিদা ও বড় দুই মামা মারা গিয়েছেন। মামাবাড়ির পারিবারিক সম্পত্তির পুরোটারই দখল নিয়েছেন ছোটমামা। এর মধ্যে একটি কালিবাড়ি, বাড়ি-সহ আরও অনেক কিছু আছে। বোনেরা কিছুই পায়নি। মা এর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন। গত ১২ বছর ধরে সেই আইনি লড়াই চলছে। বর্তমানে আমার মা, মাসি সকলেই অত্যন্ত আর্থিক দুরবস্থার মধ্যে রয়েছে।

কী করব?

সুতপা মুখোপাধ্যায়

এটা বুঝলাম, আপনার ছোটমামা সমস্ত সম্পত্তি দখল করে নিয়েছেন। কিন্তু অন্য দুই মামার পরিবার ওই সম্পত্তিতে রয়েছেন কি না তা পরিষ্কার হল না। আপনার মা দেওয়ানি মামলার মাধ্যমে ওই সম্পত্তি দাবি করেছেন। কিন্তু বুঝতে পারছি না ঠিক কী অবস্থায় রয়েছে মামলাটি। অন্যান্য ভাইবোন, অর্থাৎ যাঁরা বঞ্চিত হয়েছেন তাঁদের সঙ্গে মিলেই সম্ভবত উনি সম্পত্তির ভাগ চেয়েছেন। কিন্তু প্রশ্ন হল, এত বছর লাগছে কেন? আপনি মামলার সমস্ত অর্ডারের সার্টিফায়েড কপি তুলুন। সেগুলো নিয়ে একজন আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শ করুন। বোঝার চেষ্টা করুন, কেন মামলায় দেরি হচ্ছে। প্রয়োজন মনে করলে দ্রুত সমাধান চেয়ে হাইকোর্টের শরণাপন্ন হতে পারেন।

পরামর্শদাতা কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী

জমিই হোক বা সঞ্চয়। আপনার যে কোনও বিষয়-সমস্যা নিয়ে বিশেষজ্ঞের পরামর্শের জন্য লিখুন। ঠিকানা ও ফোন নম্বর জানাতে ভুলবেন না। ‘বিষয়’, ব্যবসা বিভাগ, আনন্দবাজার পত্রিকা, ৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা, পিন-৭০০০০১।
ই-মেল: bishoy@abp.in

অন্য বিষয়গুলি:

legal layyer
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy