Advertisement
E-Paper

দাম কমাতে আর্জি জেটলির

এ দিনের বৈঠকে ঠিক হয়েছে, দাম কমানোর ব্যাপারে নজরদারির জন্য সব রাজ্যে ১৫ দিনের মধ্যে একটি করে স্ক্রিনিং কমিটি গড়ে তোলা হবে। জিএসটি-তে করের বোঝা কমা সত্ত্বেও সাধারণ মানুষকে তার ফায়দা পৌঁছে দেওয়া না হলে, সংশ্লিষ্ট আইনে শাস্তির নিদান রয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০১৭ ০৩:৩৬
আলোচনা: বৈঠকে জেটলি ও রাজস্ব সচিব হাসমুখ আঢিয়া। পিটিআই

আলোচনা: বৈঠকে জেটলি ও রাজস্ব সচিব হাসমুখ আঢিয়া। পিটিআই

জিএসটি চালুর পরে এক মাস কেটে গিয়েছে। এক দিকে কারখানার উৎপাদন, পরিষেবা ক্ষেত্র ধাক্কা খেতে চলেছে বলে ইঙ্গিত মিলেছে সমীক্ষায়। অন্য দিকে অনেক ক্ষেত্রেই করের বোঝা কমেছে বলে দাবি কেন্দ্রের। কিন্তু সেই অনুযায়ী জিনিসপত্রের দাম কমছে না বলে অভিযোগ অনেকেরই। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে শনিবার জিএসটি পরিষদের বৈঠকে শিল্প ও ব্যবসায়ী মহলের কাছে দাম কমানোর অনুরোধ জানালেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। পাশাপাশি বস্ত্রশিল্পকে স্বস্তি দিতে সেলাই, এমব্রয়ডারির কাজে জিএসটি ১৮ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করার সিদ্ধান্ত নিল পরিষদ।

এ দিনের বৈঠকে ঠিক হয়েছে, দাম কমানোর ব্যাপারে নজরদারির জন্য সব রাজ্যে ১৫ দিনের মধ্যে একটি করে স্ক্রিনিং কমিটি গড়ে তোলা হবে। জিএসটি-তে করের বোঝা কমা সত্ত্বেও সাধারণ মানুষকে তার ফায়দা পৌঁছে দেওয়া না হলে, সংশ্লিষ্ট আইনে শাস্তির নিদান রয়েছে। সেই অনুসারে বেআইনি মুনাফা ঠেকানোর লক্ষ্যে একটি নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ গড়ে তোলা যাবে। জেটলির মন্তব্য, ‘‘আশা করি, খুব দ্রুত ওই কর্তৃপক্ষ তৈরি করতে আমাদের বাধ্য করা হবে না।’’

এমনিতেই জুলাই মাসে কল-কারখানার উৎপাদন ন’বছরের তলানিতে ঠেকেছে বলে পূর্বাভাসে জানিয়েছে নিক্কেই ইন্ডিয়া পার্চেজিং ম্যানেজার্স ইনডেক্স। তাদের সমীক্ষা অনুসারে পরিষেবা ক্ষেত্রের লেনদেনও চার বছরে সবচেয়ে নীচে। জিএসটি-র জেরেই এই ধাক্কা লেগেছে বলে আজ জেটলিকে সতর্ক করেছেন পশ্চিমবঙ্গের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। জিএসটি নিয়ে বস্ত্রশিল্পেও লাগাতার ধর্মঘট, আন্দোলন চলে। গুজরাত, তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গের মতো রাজ্যে এর প্রভাব পড়েছে।

স্বস্তি যেখানে

• বস্ত্রশিল্পের দাবি মেনে সেলাই, এমব্রয়ডারির কাজে জিএসটি ১৮% থেকে কমে ৫%।
লাভবান হবেন পশ্চিমবঙ্গের হস্তশিল্পী থেকে শুরু করে কাশ্মীরের শাল প্রস্তুতকারী
• মাটির মূর্তি তৈরিতেও কর ১৮% থেকে কমে ৫%। সুবিধা কুমোরটুলির প্রতিমাশিল্পীদের
• ট্রাক্টরের যন্ত্রাংশে করের হার ২৮% থেকে কমে ১৮%। ফসল মজুত করার পরিষেবায়ও
কর ১৮% থেকে কমে হল ১২%। সিদ্ধান্ত চাষিদের স্বার্থের কথা ভেবে
• তারামণ্ডলের টিকিটে জিএসটি ১৮% থেকে কমে ১২%
• সরকারি কাজের বরাতে করের হার ১৮% থেকে কমে হবে ১২%
• পণ্য পরিবহণে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত পণ্যে লাগবে না ই-ওয়ে বিল

এ দিকে সামনেই গুজরাতে বিধানসভা ভোট। ব্যবসায়ী মহলই বিজেপির প্রধান ভোটব্যাঙ্ক। এই চাপের মুখে আজ বস্ত্রশিল্পে সেলাই, এমব্রয়ডারির কাজে জিএসটি ১৮ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে পরিষদে। ফলে বস্ত্রশিল্পে একেবারে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সব ধাপেই ৫ শতাংশ হারে জিএসটি বসবে। এতে পশ্চিমবঙ্গের হস্তশিল্পী থেকে শুরু করে কাশ্মীরের শাল ও গালিচা প্রস্তুতকারক সকলেই লাভবান হবেন বলে অমিতবাবু জানান। মাটির মূর্তি তৈরিতেও জিএসটি ১৮ শতাংশ থেকে কমে ৫ শতাংশ হবে, যার জেরে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলবেন কুমোরটুলির প্রতিমাশিল্পীরা। চাষিদের স্বার্থের কথা ভেবে ট্রাক্টরের যন্ত্রাংশে, ফসল মজুত করার ক্ষেত্রে জিএসটি-র হার কমানো হয়েছে। পণ্য পরিবহণের ই-ওয়ে বিলের ক্ষেত্রে ঠিক হয়েছে, ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত পণ্যে কোনও বিল প্রয়োজন হবে না। এর নিয়মবিধি অবশ্য চূড়ান্ত হয়নি। কেন্দ্র চাইছিল, প্রসাধন, সুগন্ধি বা মদ তৈরিতে ব্যবহৃত ‘এক্সট্রা নিউট্রাল অ্যালকোহল’-কে জিএসটি-র আওতায় আনা। কিন্তু রাজ্যগুলির দাবিতে, অ্যালকোহলের মতো এটিও জিএসটি-র বাইরে থাকছে।

কেন্দ্র ও রাজ্যের অর্থমন্ত্রীদের প্রধান লক্ষ্য এখন করের বোঝা কমার সঙ্গে সঙ্গে দাম যাতে কমে, তা নিশ্চিত করা। অমিতবাবু বলেন, স্থির হয়েছে, কোন কোন পণ্যে করের বোঝা কমছে, সে বিষয়ে মানুষকে সচেতন করতে ব্যাপক হারে প্রচার চালানো হবে। রাজ্যের কমিটি দেখবে, কোথায় কোথায় দাম কমানো হচ্ছে না।

arun jaitley GST Finance অরুণ জেটলি জিএসটি
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy