Advertisement
০১ এপ্রিল ২০২৩
ক্ষুব্ধ ছোট শিল্প, ব্যাঙ্ক কর্মীরা

নিষ্ফলা নোটবন্দি, মাথার ঘাম পায়ে ফেলে শেষে মিলল এই!

এখন ৯৯.৩% বাতিল নোট ঘরে ফেরার রিপোর্ট সামনে আসার পরে তাঁদের অনেকেরই আক্ষেপ, ‘‘তবে কি ভস্মে ঘি ঢাললাম আমরা?’’

চাপে: গ্রাহকদের বোঝাতে ব্যস্ত ব্যাঙ্ক কর্মী। ফাইল চিত্র

চাপে: গ্রাহকদের বোঝাতে ব্যস্ত ব্যাঙ্ক কর্মী। ফাইল চিত্র

প্রজ্ঞানন্দ চৌধুরী
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৪:১৬
Share: Save:

দিনে অন্তত ১২-১৪ ঘণ্টা নাগাড়ে কাজ। দমবন্ধ করা টেনশন। প্রায় সারাক্ষণ মুখের সামনে হুমড়ি খেয়ে পড়া গ্রাহক। নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে গিয়ে প্রায় নাওয়া-খাওয়া ভোলার জোগাড় হয়েছিল ব্যাঙ্কের কর্মীদের। বাতিল হয়েছিল ছুটি। এখন ৯৯.৩% বাতিল নোট ঘরে ফেরার রিপোর্ট সামনে আসার পরে তাঁদের অনেকেরই আক্ষেপ, ‘‘তবে কি ভস্মে ঘি ঢাললাম আমরা?’’

Advertisement

এক ব্যাঙ্ক কর্মী যেমন সরাসরি বলছেন, ‘‘তখন মনে হয়েছিল দেশের কাজ করছি। লড়াইয়ে নেমেছি দুর্নীতির সঙ্গে। আমাদের বলাও হয়েছিল সে রকম। তাই কিচ্ছুটি না বলে তখন দিনে ১২-১৪ ঘণ্টা কাজ করেছি। ছুটি বাতিল মেনে নিয়েছি। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে, যেন ঠকানো হল আমাদের। পুরো পরিশ্রম জলে।’’

২০১৬ সালের ৮ নভেম্বর নোট বাতিলের কথা ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তার পরেই ১২ নভেম্বর ছিল মাসের দ্বিতীয় শনিবার। তাই সে দিন ও পরের দিন রবিবার ব্যাঙ্কে ছুটি থাকার কথা ছিল। কিন্তু তা বাতিল হয়। সেই শুরু। তার পরে মাস দেড়েক দিন-রাত গুলিয়ে যাওয়ার জোগাড়। অত্যধিক চাপে অসুস্থও হয়ে পড়েন কেউ কেউ। তাই তাঁদের প্রশ্ন, ‘‘এত করে শেষে এই!’’

অল ইন্ডিয়া ব্যাঙ্ক এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রাজেন নাগর বলেন, ‘‘বলা হয়েছিল কালো টাকা উদ্ধারের জন্যই এই পদক্ষেপ। অনেকে দিনরাত কাজ করেছিলেন। এখন প্রশ্ন, কালো টাকা তা হলে গেল কোথায়? কী দাম রইল পরিশ্রমের? অতিরিক্ত সময়ের টাকাও পুরোটা পাওয়া যায়নি।’’

Advertisement

অল ইন্ডিয়া ব্যাঙ্ক অফিসার্স কনফেডারেশনের রাজ্য সম্পাদক সঞ্জয় দাসের আবার অভিযোগ, ‘‘নোটবন্দির পরে শুধু নতুন নোট ছাপতে ১৬ হাজার কোটি টাকা খরচ হয়েছে। সারা দেশে ২ লক্ষ এটিএমকে নতুন নোটের উপযুক্ত করতে (ক্যালিব্রেশন) খরচ হয়েছে আরও কয়েক হাজার কোটি। গুনতে হয়েছে কর্মীদের ওভারটাইমের টাকা। সেই সঙ্গে অত নোট এক জায়গা থেকে অন্যত্র নিয়ে যাওয়ারও খরচ কম নয়। এই সমস্ত কিছুর ফল তা হলে শেষ পর্যন্ত শূন্য দাঁড়াল।’’

ব্যাঙ্ক এমপ্লয়িজ ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ বিশ্বাসের মতে, ‘‘নোটবন্দিতে শিল্পের হাল খারাপ হয়েছে। তা ইন্ধন জুগিয়েছে অনুৎপাদক সম্পদ বৃদ্ধিতে।’’ সব মিলিয়ে বেশ ক্ষুব্ধ ব্যাঙ্ক কর্মীরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.