Advertisement
০৫ মে ২০২৪

ব্যাঙ্ক বাছাই

নীরব-কাণ্ড সামনে আসায় গেল গেল রব। অনেকেরই প্রশ্ন, ব্যাঙ্কে টাকা সুরক্ষিত তো? কোথায় টাকা রাখছেন, তা ঠিক করার আগে একটু তলিয়ে ভাবলে হয় না? পরামর্শ দিলেন শৈবাল বিশ্বাসনীরব কাণ্ডের পরে এই প্রশ্ন ওঠার হয়তো কারণ আছে। কিন্তু শুধু তাতে তো লাভ হবে না। সেই তো ব্যাঙ্কে টাকা রাখতেই হবে।

শেষ আপডেট: ২৯ মার্চ ২০১৮ ০১:০৯
Share: Save:

টনক নড়েছে এখন। এত দিনে! রাস্তাঘাট, দোকান-বাজার, অফিস-কাছারি থেকে শুরু করে রকের আড্ডা— যেখানে যাচ্ছি, সেখানেই ধাওয়া করে আসছে একটা প্রশ্ন। ‘আচ্ছা দাদা ব্যাঙ্কে টাকা রাখা কি তবে আর নিরাপদ নয়?’

নীরব কাণ্ডের পরে এই প্রশ্ন ওঠার হয়তো কারণ আছে। কিন্তু শুধু তাতে তো লাভ হবে না। সেই তো ব্যাঙ্কে টাকা রাখতেই হবে। সেখানে যেতে হবে ঋণ পেতে। তাই রাগ আঁকড়ে না থেকে বরং ব্যাঙ্ক বাছাইয়ে যত্ন নেওয়া ভাল। যা সাধারণত আমরা নিই না।

রাগ নয়, শিক্ষা

ব্যাঙ্ক সম্পর্কে আমাদের বিভিন্ন অভিযোগ বরাবরই ছিল। কখনও তার কারণ কর্মীদের রূঢ়় ব্যবহার, তো কখনও বা কাউন্টারে লম্বা লাইন। কিন্তু গত কয়েক বছরে যেন তা বহু গুণ বেড়েছে। কাগজ খুললেই অনাদায়ী ঋণ আর ঋণ খেলাপের খবর। তার উপরে এখন নীরব কেলেঙ্কারির মতো কাণ্ড। উদ্বেগ কিংবা রাগ তো স্বাভাবিক!

কিন্তু আমি বলব, এই সব ঘটনা থেকে ব্যাঙ্ক বাছাইয়ে একটু সাবধানি হওয়ার শিক্ষা নিন। তার জন্য শুরুতেই কী কী দেখে নিতে হবে, চলুন সে দিকে চোখ রাখি।

খুঁটিয়ে দেখুন

লগ্নির আগে কোনও প্রকল্প যতটা খুঁটিয়ে দেখি, সাধারণত ব্যাঙ্ক বাছাইয়ের আগে সে সম্পর্কে তেমন খোঁজখবর আমরা নিই না। অথচ সবার আগে সেই বিষয়টি জরুরি। তবে হ্যাঁ, খুব জটিল হিসেব নিকেশ সকলের পক্ষে বোঝা সম্ভব নয়। তবু কয়েকটা বিষয় মাথায় রাখলে, সুবিধা হবে বলে মনে হয়। যেমন—

• যে ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খুলতে চান, তার শেষ ৫-১০ বছরের ইতিহাস দেখুন। তারা কখনও আর্থিক সঙ্কটে পড়েছিল কি? পড়ে থাকলে, তা কী ধরনের? ওই সমস্যা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়েছে? এগুলি জানা জরুরি।

• ব্যাঙ্কের পরিচালন ব্যবস্থা বা তার স্বচ্ছতা নিয়ে কখনও প্রশ্ন উঠেছে কি না, সেটিও দেখা জরুরি।

• ব্যাঙ্কের আয়, মুনাফা, মূলধনের সঙ্গে ঋণের অনুপাত ইত্যাদি সম্পর্কে খোঁজ নিন। ব্যাঙ্কের হিসেবের খাতায় এই সমস্ত তথ্য স্পষ্ট দেওয়া থাকে।

• নেটেই সব তথ্য পাওয়া যায়। নিজের পক্ষে সব কিছু যাচাই করা কঠিন হলে, পরিচিত কারও সাহায্য নিন। চাইলে পরামর্শদাতার সঙ্গে এক বার কথাও বলে নিতে পারেন।

বাড়ির সামনে তো?

সুরক্ষা ছাড়াও আর যে সমস্ত বিষয়ে নজর দেওয়া প্রয়োজন, তার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ বাড়ি থেকে ব্যাঙ্কের দূরত্ব। বিশেষত যদি প্রায়ই শাখায় যাওয়ার দরকার পড়ে। সে ক্ষেত্রে—

• এমন ব্যাঙ্কে টাকা রাখা সুবিধাজনক, যার শাখা বাড়ি বা অফিসের কাছাকাছি। বিশেষত বয়স্ক মানুষের ক্ষেত্রে এই কথাটা প্রথমেই মাথায় রাখতে হবে।

• ব্যাঙ্কে লকার থাকাটাও জরুরি। ভাবুন তো, সামনেই পরিবারে কারও বিয়ে। আর আপনি ছুটছেন লকারে। সেখান থেকে যদি এক ঘণ্টা বাসেই আসতে হয়, তা হলে তো গয়না খোয়া যাওয়ার ভয়ে কাঁটা হয়ে থাকতে হবে।

• বাড়ি পাল্টালে বা চাকরির সূত্রে অন্য রাজ্য বা শহরে গেলে, প্রথমেই দেখুন কোথায় আপনার ব্যাঙ্কের শাখা রয়েছে। সেখানেও বাড়ির কাছের ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খুলতে পারেন।

• ব্যাঙ্কে খুব বেশি না গেলে এবং নেট ব্যাঙ্কিংয়ে স্বচ্ছন্দ হলে অবশ্য কিছুটা ঝক্কি কম। কিন্তু তা-ও কোথায় শাখা রয়েছে দেখে রাখলে ভাল।

সুদ কেমন?

সাধারণত দেখা যায়, ব্যাঙ্কে টাকা রাখার আগে সুদের হারকে প্রাধান্য দিই আমরা। এ কথা বিশেষ করে সত্যি প্রবীণ মানুষদের জন্য। কারণ তাঁরা সুদের উপর নির্ভর করেই সংসার চালান। তাই কোন ব্যাঙ্কে সুদ বেশি পাওয়া যাচ্ছে, তা অবশ্যই দেখতে হবে। এমনকী সেভিংস অ্যাকাউন্টে। সেখানেও কিন্তু সুদের ফারাক এখন যথেষ্ট। অর্থাৎ নিরাপত্তা এবং সুদ দু’ই মাথায় রাখতে হবে আপনাকে।

ব্যাঙ্ক অনেক সময়ে রেকারিং বা স্থায়ী আমানতে গ্রাহক ‘অটো রিনিউয়াল’ করতে চান কি না, সে কথা জিজ্ঞাসা করে। এতে মেয়াদ শেষে নিজে থেকেই তহবিল পুনর্নবীকরণ হয়ে যায়। কিন্তু এই পদ্ধতিতে সায় দিলে অন্য কোথাও সুদ বেশি দেওয়া সত্ত্বেও, সেখানে টাকা সরানোর উপায় নেই।

তবে বয়স্কদের জন্য এই সুবিধা ভাল। বার বার ব্যাঙ্কে যাওয়ার ঝক্কি নেই। ফলে আপনার পক্ষে কোনটা উপযুক্ত, তা দেখে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

এ ছাড়া, ব্যাঙ্কে চেক বই, কার্ড দেওয়ার চার্জ কেমন, তা-ও জেনে নিতে ভুলবেন না।

ন্যূনতম জমা

এখন অনেক ব্যাঙ্কে মাসে গড়ে ন্যূনতম জমা না রাখলে জরিমানা দিতে হয়। তাই আপনি যে ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খুলবেন বা যেখানে তা রয়েছে, সেখানকার নিয়ম দেখে নিন। জানুন অন্তত কত টাকা রাখতে হবে। আর না থাকলে জরিমানাই বা কত।

কী দেখবেন?

• ব্যাঙ্কের আর্থিক স্বাস্থ্য। তার মুনাফা, অনাদায়ী ঋণ ইত্যাদি।

• ব্যাঙ্কের ভাবমূর্তি, শেষ দু’এক বছরে তার সম্পর্কে খবর।

• বাড়ি বা অফিস থেকে ব্যাঙ্কের শাখার দূরত্ব। অন্তত এটিএম কাছে তো?

• নেট ব্যাঙ্কিং ভাল? অ্যাপ ঠিকঠাক?

• পরিষেবা কেমন? বয়স্কদের বসার বন্দোবস্ত আছে কি?

• কাছের শাখায় কর্মীরা সাহায্যের হাত কতটা বাড়ান?

• সেভিংস অ্যাকাউন্ট থেকে আমানত, সুদ কেমন?

• বিমা, মিউচুয়াল ফান্ড মেলে কি? আর বিদেশে টাকা পাঠানোর সুবিধা?

• লকারের সুবিধা আছে তো?

• ঋণ অন্য কোথাও নিলে সুবিধা?

অন্যান্য সুবিধা

অনেক ব্যাঙ্কের শাখাই এখন বিমা ও মিউচুয়াল ফান্ডের এজেন্ট এবং লগ্নি পরামর্শদাতা হিসেবে কাজ করে। সেখানে ঠিকঠাক নিয়ম মেনে এই পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে কি না, দেখতে হবে তা-ও। নজর রাখুন—

• প্রকল্পে টাকা রাখার আগে আপনার কথায় ব্যাঙ্ক গুরুত্ব দিচ্ছে কি না।

• দরকার না থাকলেও, ব্যাঙ্কের তরফে অন্যান্য প্রকল্পে টাকা রাখতে জোর করা হচ্ছে কি না। তেমন জোরাজুরি করলে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক, সেবি-র নিয়ম জানতে চান।

• প্রকল্প বাছাইয়ের সময়ে সব কথা জানানো হচ্ছে কি না, খোঁজ নিন। ব্যাঙ্কের থেকে কাগজ দেখতে চান।

• লগ্নির কাগজপত্র ঠিকঠাক রয়েছে কি না দেখে নিন।

• লগ্নি করিয়েই ব্যাঙ্কের দায়িত্ব শেষ নয়। তারা নিয়মিত সেই প্রকল্পগুলি নিয়ে আপনার কাছে তথ্য পৌঁছে দিচ্ছে কি না, খেয়াল রাখুন।

• সেই সব প্রকল্পে টাকা রাখার নথি (যেমন রসিদ) আপনার কাছে পৌঁছচ্ছে কি না, তা-ও দেখতে হবে।

যদি মনে করেন, আপনার শাখা এই ধরনের পরিষেবা দিতে দক্ষ নয়, তা হলে সেখানে টাকা না রাখাই ভাল। তার বদলে সরাসরি ফান্ড, বিমা সংস্থার কাছে যান। নিতে পারেন বিশেষজ্ঞের পরামর্শও।

গ্রাহক পরিষেবা

ব্যাঙ্কে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়েও কোনও কাজ হল না, এ রকম প্রায়ই হয়। অথচ গ্রাহক হিসেবে আপনারও কিছু অধিকার রয়েছে। তাই ব্যাঙ্কে গ্রাহক পরিষেবা কতটা ভাল, তা দেখুন। যেমন, বয়স্কদের জন্য আলাদা কাউন্টার থেকে শুরু করে, বাড়িতে এসে পরিষেবা দেওয়ার মতো বিভিন্ন ব্যবস্থা আছে কি না, তা জেনে নিতে পারলে ভাল।

ঋণের ব্যবস্থা

যদি দেখা যায়, যে ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট রয়েছে তার চেয়ে অন্য ব্যাঙ্কে ঋণে সুবিধা বেশি, তা হলে দ্বিতীয়টিতেই যাওয়া উচিত। তবে এ ক্ষেত্রে শুধু সুদের হার দেখলেই হবে না। বরং তার সঙ্গে ঋণের মেয়াদ, কাগজপত্রের ঝক্কি, কতটা ধার পাচ্ছেন, এই সব বিষয়গুলিই দেখতে হবে। নজর রাখতে হবে যে কোনও লুকোনো খরচ আছে কি না। মনে রাখবেন, যেখানে জমাচ্ছেন, সেখানেই ঋণ নিতে হবে, তার কোনও মানে নেই। যেখানে যেটা ভাল, তার সুযোগ নিন।

বিদেশে টাকা

অনেকের ছেলেমেয়ে বিদেশে পড়তে যান। সেখানে টাকা পাঠাতে হয়। সে জন্য কোন ব্যাঙ্কে ঝামেলা কম, দেখে নিন। একই কথা প্রযোজ্য বিদেশে চাকরি করে দেশে টাকা পাঠানোতেও।

লকারের সুবিধা

ব্যাঙ্ক বাছাইয়ের সময়েই দেখে নিতে হবে সেখানে লকারের সুবিধা রয়েছে কি না। অনেক ব্যাঙ্ক লকার ভাড়া দেওয়ার জন্য বাধ্যতামূলক ভাবে বিমা বা অন্য কোনও প্রকল্পে লগ্নি করতে বলে। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নিয়ম কিন্তু তা নয়। লকারের ফর্মে সইয়ের আগে বিষয়টি ভালভাবে জেনে নিন।

একাধিক অ্যাকাউন্ট

• ছোটবেলায় হয়তো বাবা-মায়ের সঙ্গে অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছিল। অথবা বিয়ের আগে ভাই বা বোনের সঙ্গে খোলা যৌথ অ্যাকাউন্ট রয়েছে। এগুলিও নিয়ম করে দেখা উচিত।

• একটি বা দু’টি ব্যাঙ্কে সেভিংস অ্যাকাউন্ট সীমাবদ্ধ থাকলে ভাল। এতে হিসেব রাখতে সুবিধা হয়। তেমনই প্রতি বার কেওয়াইসি জমার জন্য বিভিন্ন জায়গায় ছুটতে হবে না।

• অনেকেই মনে করেন, বিভিন্ন ব্যাঙ্কে সেভিংস অ্যাকাউন্ট রাখলে কর বাঁচবে। আসলে তা নয়। সবক’টি সেভিংস অ্যাকাউন্ট মিলিয়ে বছরে সুদ ১০ হাজার টাকার বেশি হলেই কর দিতে হবে। ফলে বেশি অ্যাকাউন্ট খুলে রেখে বাড়বে শুধু ঝক্কি।

• আমি বলব, একটি অ্যাকাউন্ট থাকুক যেখান থেকে শুধু মাত্র লেনদেন করবেন। অর্থাৎ, আপনার ফান্ডে টাকা কাটানো থেকে শুরু করে সবই হবে সেই অ্যাকাউন্ট থেকে। এতে কিছুটা বেশি টাকা রাখুন। আর একটি অ্যাকাউন্ট থাকুক কার্ডে কেনাকাটার জন্য। সেই অ্যাকাউন্টের সঙ্গে যুক্ত ক্রেডিট বা ডেবিট কার্ডই ব্যবহার করবেন। এতে থাকুক তুলনায় কম টাকা।

• অনেক ব্যাঙ্ক রেকারিং বা স্থায়ী আমানত করা অথবা ঋণ নেওয়ার সময়ে সেভিংস অ্যাকাউন্ট খুলতে বলে। এরকম কিন্তু নিয়ম নেই। ফলে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নিয়ম জানতে চান।

লেখক: বিনিয়োগ বিশেষজ্ঞ (মতামত ব্যক্তিগত)

ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার

পাঠকের প্রশ্ন?

প্রঃ আমার একটি পার্টনারশিপ সংস্থা আছে। বৈদ্যুতিন সরঞ্জাম বিক্রি করি। ক্রেতারা ৪০টি সাপ্তাহিক কিস্তিতে দাম দিতে পারেন। বুঝতে পারছি না কী করে ১% জিএসটির হিসেব ধরব।

কবি গুহ

এই সমস্যার কথা আরও অনেকে বলছেন। কিন্তু সমাধান সহজ। আপনার কথায়, একজন ক্রেতাকে একবারে যতটা বৈদ্যুতিন সরঞ্জাম বিক্রি করেন, তার দাম নেন ৪০টি কিস্তিতে। এ রকম ক্ষেত্রে প্রথমে পণ্য সরবরাহের সময়েই তার মোট দামের উপর জিএসটি বসাতে হবে আপনাকে। এর পরে মোট টাকা ৪০টি কিস্তিতে ফেরত পেতে থাকবেন।

প্রঃ আমার একটি গয়নার দোকান আছে। ওয়েবসাইট তৈরি করে ই-কমার্স মাধ্যমে ব্যবসা করতে চাই। দু’টোই কি আমার নামে করতে পারব? কোথা থেকে লাইসেন্স মিলবে?

অনুপ জানা, হলদিয়া

আপনার দু’টো লাইসেন্স দরকার নেই। ব্যবসা করার জন্য শুধুমাত্র মিউনিসিপালিটি বা পুরসভা থেকে ট্রেড লাইসেন্স নেওয়া থাকলেই চলে। তবে ই-কমার্স ব্যবস্থায় ব্যবসা করতে হলে জিএসটি-র আওতায় নথিভুক্ত হতে হবে।

পরামর্শদাতা:
তিমির বরণ চট্টোপাধ্যায়

পরামর্শের জন্য লিখুন:

‘বিষয়’, ব্যবসা বিভাগ,

আনন্দবাজার পত্রিকা,

৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা, পিন-৭০০০০১।

ই-মেল: bishoy@abp.in

ঠিকানা ও ফোন নম্বর জানাতে ভুলবেন না

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Money Security Bank surveillance
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE