—ফাইল চিত্র
কেন্দ্রীয় বাজেটে জনজাতি শিক্ষাক্ষেত্রে বিপুল বরাদ্দের ঘোষণা করেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। সারা দেশের আদিবাসী-জনজাতি অধ্যুষিত এলাকাগুলিতে ৭৫০টি নতুন একলব্য আদর্শ আবাসিক বিদ্যালয় তৈরির ঘোষণার পাশাপাশি প্রতিটি স্কুল তৈরির জন্য ৩৮ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব রাখা হয়েছে। তফশিলিদের জন্য পোস্ট ম্যাট্রিক বৃত্তি কাঠামো পুনর্গঠনের প্রস্তাবও রয়েছে।
কিন্তু এই ঘোষণার সুফল জনজাতি পড়ুয়ারা কতটা পাবেন, তা নিয়ে সংশয়ে এ রাজ্যের পাহাড় ও জঙ্গলমহলের জনজাতি মানুষজনই। অভিযোগ, ভোট-বঙ্গের কথা মাথায় রেখে এ সব বিজেপির কৌশলী পদক্ষেপ। তবে বিজেপির দাবি, রাজ্যে তৃণমূল সরকার জনজাতি শিক্ষার প্রকৃত মানোন্নয়নে আগ্রহী নয়। তাদের অসহযোগিতায় কেন্দ্রের বহু উদ্যোগও বাস্তবায়িত হচ্ছে না।
রাজ্যে তৃণমূল ক্ষমতায় এলে সাঁওতালি ভাষায় অলচিকি লিপিতে প্রাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত পাঠক্রম চালু হয়েছে। কলেজেও সাঁওতালিতে পঠনপাঠন শুরু হয়েছে। সাঁওতালিতে ডিএলএড কোর্স হয়েছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয় স্তরে পুরোদস্তুর সাঁওতালিতে পড়া শুরু হয়নি। তবে ঝাড়গ্রামে নির্মীয়মাণ বিশ্ববিদ্যালয়ের নামকরণ হয়েছে সাঁওতালি মহাকবি সাধু রামচাঁদ মুর্মুর নামে।
এ সব উদ্যোগ সত্ত্বেও সাঁওতালি মাধ্যম স্কুলগুলিতে পর্যাপ্ত শিক্ষক, উপযুক্ত পরিকাঠামো না থাকার অভিযোগ রয়েছে। রাজ্যে একলব্য স্কুলগুলির অধিকাংশও বেহাল। গোটা উত্তরবঙ্গে একলব্য স্কুল দু’টি। বাম আমলে চালু ঝাড়গ্রামের একলব্য স্কুলটি দীর্ঘদিন বেহাল ছিল। ২০১৬ -তে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রামকৃষ্ণ মিশনের হাতে এই স্কুলের দায়িত্ব দেওয়ার পরে আমূল বদল হয়েছে স্কুলটির। কিন্তু বাঁকুড়া, বীরভূমের মতো জেলার বাকি ছ’টি একলব্য স্কুল পিছিয়ে বলে অভিযোগ।
আদিবাসী সংগঠন ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহলের পুরুলিয়া জেলা পারগানা রতনলাল হাঁসদা বলেন, ‘‘নতুন একলব্য স্কুল খোলার ঘোষণাকে স্বাগত। বর্তমানে সাঁওতালি মাধ্যমের স্কুলগুলি বেহাল। পড়ুয়াদের জন্য বরাদ্দ অর্থ যাতে তাদের উন্নয়নে ঠিকঠাক ব্যবহার হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে।’’ পশ্চিমবঙ্গ আদিবাসী কল্যাণ ও শিক্ষা পরিষদের চেয়ারম্যান রবিন টুডুর ক্ষোভ, ‘‘কেন্দ্র আগেও আদিবাসী উন্নয়নে বহু প্রতিশ্রুতি দিলেও কিছুই হয়নি।’’
মালদহ তৃণমূলের মুখপাত্র শুভময় বসুর অবশ্য দাবি, “সঙ্ঘের স্কুলগুলিতে ধর্মপাঠের বিষয় সকলেরই জানা রয়েছে। একলব্য স্কুল গড়েও সেই কাজ চলবে।” ঝাড়গ্রামের বিজেপি সাংসদ কুনার হেমব্রম যদিও দিল্লি থেকে ফোনে বলেন, ‘‘আদিবাসী শিক্ষাক্ষেত্রে, আদিবাসীদের স্কিল ডেভেলপমেন্ট ও কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে বাজেটে অভূতপূর্ব প্রস্তাব রাখা হয়েছে।’’ কুনারের অভিযোগ, রাজ্য জমি না দেওয়ায় বান্দোয়ানে একলব্য স্কুল করা যাচ্ছে না, ঝাড়গ্রামেও জমির অভাবে প্রস্তাবিত কেন্দ্রীয় বিদ্যালয় হচ্ছে না। আদিবাসী আবাসিক পড়ুয়া পিছু বছরে ২ লক্ষ ৯ হাজার টাকা কেন্দ্র দিলেও রাজ্য তা ঠিক মতো খরচ করছে না। আর একলব্য স্কুলগুলির দায়িত্ব রাজ্য ছাড়ছে না বলেই সেগুলি বেহাল বলে সাংসদের দাবি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy