দেশ জুড়ে এক সঙ্গে বৈদ্যুতিন চা নিলাম ব্যবস্থা নিয়ে গোড়া থেকেই শিল্পমহলের তোপের মুখে পড়তে হয়েছে টি বোর্ডকে। এ বার চা শিল্পের দাবি, চা কেনার পরবর্তী প্রক্রিয়ায় ত্রুটি রয়েছে। ফলে চা বিক্রি করে পাওনা পেতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে বিক্রেতাদের। যার জেরে পুজোর মুখে কোথাও কোথাও বাগানের কর্মীদের বোনাস নিয়েও আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। যদিও সব অভিযোগই উড়িয়ে দিয়েছে টি বোর্ড।
দেশের ছ’টি নিলাম কেন্দ্রে বৈদ্যুতিন চা নিলাম আগেই শুরু হলেও এক সঙ্গে সব কেন্দ্রে নিলামের অংশীদার হওয়ার সুযোগ ছিল না। সম্প্রতি সেই ব্যবস্থাও চালু হয়। কিন্তু প্রথম থেকেই এই পদ্ধতি নিয়ে আপত্তি ছিল চা শিল্পের। তাদের দাবি ছিল, যুক্তমূল্য কর-সহ নানা বিষয়ে জট থাকায় এই ব্যবস্থা চালু করলে সমস্যা হবে। তাই আগে সেগুলি নিষ্পত্তির দাবি তোলে তারা। সেই আশ্বাস দিলেও বোর্ড পাল্টা দাবি করে, এই ব্যবস্থা চালু হলে স্বচ্ছতা আসবে। কিন্তু চা শিল্পমহল তাতে বাদ সাধছে বলেই অভিযোগ ছিল বোর্ডের।
নতুন ব্যবস্থায় নিলাম আগেই শুরু হলেও নিলামের পরবর্তী প্রক্রিয়া পুরনো প্রথাতেই চলছিল। এ দিন ইন্ডিয়ান টি অ্যাসোসিয়েশন (আইটিএ) জানিয়েছে, ৩৭তম নিলাম থেকে সেই লেনদেনের ক্ষেত্রেও নতুন ব্যবস্থা চালু হয়। বিষয়টির দায়িত্বে রয়েছে এসএনএইআইটি (প্রযুক্তিগত) ও ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া (আর্থিক লেনদেন)। আইটিএ-র অভিযোগ, ‘ডিজিটাল’ সই পরীক্ষার কোনও কাঠামো না-থাকায় লেনদেনের পরে গুদাম থেকে ক্রেতাকে বিক্রি হওয়া চা দেওয়ার সময়ে সমস্যা হচ্ছে। কারণ ওই পদ্ধতিতে সেই চায়ের প্রকৃত দাবিদার চিহ্নিত করার উপায় নেই।
তেমনই আগে সংস্থার নামে চা বিক্রি হত। কিন্তু এখন বাগানের ‘মার্ক’-এর নামে হচ্ছে। ফলে লেনদেনে জট তৈরি হচ্ছে। করের ‘ইনভয়েস’-এও বিভিন্ন তথ্য বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। এর ফলে চা বিক্রেতা সংস্থা, অর্থাৎ, বাগানগুলি চা বিক্রি করলেও তাদের নগদ জোগানে টান পড়ছে। পুজোর মুখে এই সমস্যা চললে বাগানগুলি আর্থিক সঙ্কটের মুখে পড়বে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে আইটিএ।
যদিও এই অভিযোগ মানতে নারাজ টি বোর্ডের চেয়ারম্যান সন্তোষ ষড়ঙ্গী রাতে জানান, সব বড় লেনদেনই স্বাভাবিক ভাবে হচ্ছে। নগদ জোগানেও সমস্যা নেই। তাঁর দাবি, ‘‘বোর্ড ওঁদের কথা সব সময়ে শোনে। ওঁদের বেশিরভাগ পরামর্শই এই ব্যবস্থায় কার্যকর হয়েছে। যে-সফটওয়্যার এই বৃহৎ ও জটিল ব্যবস্থাটি কার্যকর করছে, তাতে কিছু সমস্যা হতে পারে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সব কিছু ভাল চলছে। তবে সমস্যা সমাধানে বোর্ড উদ্যোগী হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy