Advertisement
E-Paper

নোট বাড়ন্ত, বাজার দখলে ঝাঁপাচ্ছে ই-ওয়ালেট সংস্থা

পকেটে নোট বাড়ন্ত। তাই হাতে থাকা নগদটুকু বাঁচিয়ে রাখতে অনেক বেশি করে ডিজিটাল লেনদেনের দিকে ঝুঁকছেন সাধারণ মানুষ। সরকারও চাইছে, এই ঠেলায় পড়ে কার্ডে, নেটে কেনাকাটায় ধীরে-ধীরে অভ্যস্ত হতে শুরু করুন সকলে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০১৬ ০৩:২৮
—নিজস্ব চিত্র।

—নিজস্ব চিত্র।

পকেটে নোট বাড়ন্ত। তাই হাতে থাকা নগদটুকু বাঁচিয়ে রাখতে অনেক বেশি করে ডিজিটাল লেনদেনের দিকে ঝুঁকছেন সাধারণ মানুষ। সরকারও চাইছে, এই ঠেলায় পড়ে কার্ডে, নেটে কেনাকাটায় ধীরে-ধীরে অভ্যস্ত হতে শুরু করুন সকলে। ফলে ফাঁক হতে শুরু করেছে সম্ভাবনাময় এক বিশাল বাজারের দরজা। লড়াই শুরু হয়েছে তার জমি দখলেরও। আর এই পরিস্থিতিতে মুশকিল আসানের দাওয়াই নিয়ে যে সংস্থাগুলি সেই লক্ষ্যে ঝাঁপাচ্ছে, তাদের প্রথম সারিতেই রয়েছে পেটিএম।

এত দিন পেটিএমের মতো ই-ওয়ালেটে টাকা রাখার ঊর্ধ্বসীমা ছিল ১০ হাজার। সম্প্রতি তা বাড়িয়ে ২০ হাজার করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে আবার ব্যবসায়ীদের জন্য তা বাড়িয়ে ৫০ হাজার করেছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। সেই সুবিধা নিয়ে বুধবার নিজেদের অ্যাপে নতুন সুবিধা চালু করেছে পেটিএম। সিইও বিজয় শেখর শর্মার দাবি, এক সপ্তাহে অন্তত দেড় কোটি ব্যবসায়ী এই অ্যাপ ব্যবহার শুরু করবেন।

৮ নভেম্বর নোট বাতিলের ঘোষণার পর থেকেই চারদিক বিজ্ঞাপনে ছয়লাপ করেছে পেটিএম। লক্ষ্য, কেনাকাটার কাজে নগদের বিকল্পও যে হাতের কাছে মজুত, তা জানান দেওয়া। বুধবার আরও এক ধাপ এগিয়ে নিজেদের অ্যাপের মাধ্যমেই ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড থেকে টাকা মেটানোর ব্যবস্থা চালু করল সংস্থাটি। অর্থাৎ, এ ক্ষেত্রে কার্ডে কেনাকাটার জন্য তা ঘষার (সোয়াইপ) মেশিন (পয়েন্ট অব সেল বা পিওএস) না-থাকলেও চলবে।

শর্মা বলেন, ‘‘দেশে ৫৫ কোটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট রয়েছে। কার্ড রয়েছে ৭৪ কোটি। কিন্তু পিওএস মাত্র ১৪.৮ লক্ষ। যার মধ্যে ৭ লক্ষই খুচরো ব্যবসায়ীদের কাছে। অর্থাৎ, কার্ডের তুলনায় পিওএসের সংখ্যা বেশ কম।’’ পেটিএম অ্যাপ সেই সমস্যা কিছুটা মেটাবে বলে তাঁর দাবি।

বাজার সূত্রের দাবি, এই অ্যাপের নির্দিষ্ট সুবিধাগুলি হল: (১) ক্রেতার পেটিএম না-থাকলেও চলবে। দোকানির থাকলেই হল (২) ঘষার (সোয়াইপ করার) মেশিন না-থাকলেও ব্যবহার করা যাবে ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড।

সংস্থার দাবি, এই অ্যাপ ব্যবহার কঠিন নয়। এর পদ্ধতি এ রকম:

• বিক্রেতার মোবাইলে পেটিএমের ‘পেজ’-এ নির্দিষ্ট জায়গায় কার্ডের তথ্য (নম্বর, মেয়াদ ফুরোনোর সময় ইত্যাদি) দিতে হবে

• যে-ব্যাঙ্কের কার্ড, তারা এ বার পাসওয়ার্ড চাইবে তারা

• ক্রেতা নিজের মোবাইলে এক বার ব্যবহারের উপযোগী (ওয়ান টাইম) পাসওয়ার্ড পেয়ে তা দিলেই টাকা যাবে দোকানির ই-ওয়ালেটে

• পরে টাকা নিজের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দিতে পারবেন দোকানি।

নোট নাকচের পর থেকেই প্রধানমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী এবং অর্থ বিষয়ক সচিব শক্তিকান্ত দাসের দাবি, আগামী দিনে দেশ আরও বেশি করে ডিজিটাল লেনদেনের দিকে হাঁটুক বলে চাইছেন তাঁরা। এ দিনও সন্ধ্যায় মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। নেট লেনদেনে উৎসাহ দিতে একগুচ্ছ সুবিধার কথা ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। ই-ওয়ালেট সংক্রান্ত ঘোষণা ছাড়াও তার মধ্যে রয়েছে—

• সমস্ত রাষ্ট্রায়ত্ত ও কিছু বেসরকারি ব্যাঙ্কের ডেবিট কার্ডে লেনদেনে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত চার্জ মকুব

• মোবাইল ব্যাঙ্কিংয়ের খরচ ছাঁটতে চার্জ কমাচ্ছে টেলিকম নিয়ন্ত্রক ট্রাই। এ বছরের শেষ পর্যন্ত তা লাগবেই না। সুবিধা হবে সাধারণ ফোনেও (স্মার্ট ফোন নয় যেগুলি) নেট মারফত ব্যাঙ্কিং পরিষেবা পেতে

• সরকারি দফতরে ডিজিটাল লেনদেনে উৎসাহ।

এই পরিস্থিতিতে স্বাভাবিক ভাবেই বাজার ধরতে ঝাঁপাচ্ছে পেটিএমের মতো সংস্থা। এমনিতেই নোট বাতিলের পরে মোবাইল ওয়ালেটে কেনাকাটা কয়েক গুণ বেড়েছে। রোজ শুধু পেটিএমেরই অ্যাপ ব্যবহার শুরু করছেন পাঁচ লক্ষ মানুষ। তাই ‘এই সুযোগে’ দ্রুত নিজেদের বাজার বহু গুণ বাড়াতে চাইছে তারা।

কেউ কেউ অবশ্য বলছেন, পেটিএমের রমরমায় লাভের গুড় খাচ্ছে চিনা ই-কমার্স সংস্থা আলিবাবা-ও। পেটিএমে যারা অন্যতম লগ্নিকারী। তাঁরা বলছেন, চিন নিয়ে শাসক দলের এত ছুঁতমার্গ। অথচ ঘুরপথে নোট নাকচের ক্ষীরের বেশ খানিকটা খেয়ে যাচ্ছে সেই দেশের অন্যতম পরিচিত সংস্থাও।

E-wallet Denometisation
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy