Advertisement
০৭ মে ২০২৪

কালো টাকায় কেনা সম্পত্তি স্বেচ্ছায় ঘোষণা প্রকল্পের সাফল্য নিয়ে সংশয়

কালো টাকা সাদা করার যে-প্রকল্প কেন্দ্রীয় বাজেটে ঘোষণা করেছেন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি, তার যৌক্তিকতা নিয়েই প্রশ্ন তুললেন আয়কর বিশেষজ্ঞরা। নগদ এবং সম্পত্তি স্বেচ্ছায় ঘোষণার ক্ষেত্রে দু’ধরনের মাপকাঠি ধরায় প্রকল্পে কতটা সাড়া মিলবে, তা নিয়েও সংশয়ে তাঁরা।

প্রজ্ঞানন্দ চৌধুরী
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ মার্চ ২০১৬ ০৩:০৮
Share: Save:

কালো টাকা সাদা করার যে-প্রকল্প কেন্দ্রীয় বাজেটে ঘোষণা করেছেন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি, তার যৌক্তিকতা নিয়েই প্রশ্ন তুললেন আয়কর বিশেষজ্ঞরা। নগদ এবং সম্পত্তি স্বেচ্ছায় ঘোষণার ক্ষেত্রে দু’ধরনের মাপকাঠি ধরায় প্রকল্পে কতটা সাড়া মিলবে, তা নিয়েও সংশয়ে তাঁরা।

দেশে কালো টাকা উদ্ধারের ওই বিশেষ প্রকল্পটি চালু হবে ২০১৬ সালের ১ জুন থেকে। প্রকল্প অনুযায়ী ঘোষিত নগদের উপর ৪৫% কর দিলেই তা সাদা করা যাবে। কিন্তু কালো টাকায় কেনা সম্পত্তি ঘোষণা করতে গেলে সেটির ন্যায্য বাজার-মূল্য বা ফেয়ার মার্কেট প্রাইসের উপর ওই কর দিতে হবে। আর, এখানেই বাধছে সমস্যা। কারণ কালো টাকায় কেনা সম্পত্তির ১ জুন তারিখে যা মূল্য দাঁড়াবে, তাকেই ফেয়ার মার্কেট ভ্যালু ধরা হবে। ওই মূল্যকেই কালো টাকা হিসাবে ধরে তার উপরই ৪৫% হারে কর দিতে হবে সম্পত্তির মালিককে। বিপুল পরিমাণ কর সে ক্ষেত্রে চাপবে ওই স্বেচ্ছায় সম্পদ ঘোষণাকারীর উপর। কর বিশেষজ্ঞদের মধ্যে অনেকেরই আশঙ্কা, অত টাকা কর দেওয়ার ভয়ে কালো টাকায় কেনা সম্পত্তি সরকারকে জানাতে পিছিয়ে যেতে পারেন সংশ্লিষ্ট মালিক।

একটি উদাহরণ দিলেই বিষয়টি পরিষ্কার হবে। ধরা যাক কোনও ব্যক্তি ১৯৯৭ সালে ১ কোটি কালো টাকা দিয়ে নিজের বসবাসের জন্য একটি বাড়ি কিনেছিলেন। বর্তমানে সেই বাড়ির মূল্য ২০ কোটি টাকা। কালো টাকায় কেনা ওই সম্পত্তি এখন নতুন প্রকল্প অনুযায়ী সরকারকে জানাতে হলে সংশ্লিষ্ট কালো টাকার মালিককে তার ৪৫% হিসেবে ৯ কোটি টাকা কর গুনতে হবে, যেটা আন্দাজ করে অনেকেই আর প্রকল্পে সামিল হবেন না বলে আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের।

অল ইন্ডিয়া ফেডারেশন অব ট্যাক্স প্র্যাক্টিশনার্সের সহ-সভাপতি নারায়ণ জৈন বলেন, ‘‘ফেয়ার মার্কেট ভ্যালুর উপর কর হিসাব করার প্রস্তাব অবাস্তব। কারণ বহু ক্ষেত্রেই করের অঙ্ক যা দাঁড়াবে, তা মেটানো সম্পত্তির মালিকের পক্ষে সম্ভব হবে না। এর ফলে প্রকল্পটি শেষ পর্যন্ত কতটা সফল হবে, তা নিয়ে আমার সংশয় রয়েছে।’’

জৈনের মতো একই মত প্রকাশ করেছেন পিডব্লিউসির পার্টনার মণীশ শেঠ। তিনি বলেন, ‘‘আপাতদৃষ্টিতে প্রস্তাবটিতে যা বলা হয়েছে, তা কালো টাকায় কেনা সম্পত্তি ঘোষণার পথে বাধা সৃষ্টি করতে পারে। অনেক ক্ষেত্রেই অবস্থা এমন দাঁড়াতে পারে যে, সম্পত্তি বিক্রি করে তবেই কর মেটানোর ব্যবস্থা করতে হতে পারে সংশ্লিষ্ট মালিককে।’’ এটা তাঁর মতে বাস্তবে সম্ভব নয়। তবে বাজেটের প্রস্তাবটি বিশদে অনুধাবন করে তবেই চূড়ান্ত মন্তব্য করা সম্ভব বলে তিনি মন্তব্য করেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

black money government project property
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE