মোদী সরকার এমনিতেই ভর্তুকি আর করছাড় কমিয়ে আনায় বিশ্বাসী। তার উপর শিল্পের জন্য যথেচ্ছ ভাবে এই দুই সুবিধা চালু থাকলে, ধাক্কা খাবে পণ্য-পরিষেবা কর (জিএসটি) চালুর মূল উদ্দেশ্যই। তাই জিএসটি চালু হলে, সেগুলি যথাসম্ভব ছেঁটে ফেলা হবে বলেই ইঙ্গিত দিলেন কেন্দ্রীয় বাণিজ্য সচিব রীতা তেওটিয়া। শুধু সরকারি সুবিধার দিকে তাকিয়ে না-থেকে শিল্পপতি ও রফতানিকারীদের বরং অনেক বেশি আগ্রাসী প্রতিযোগিতার জন্য তৈরি হওয়ার পরামর্শ দিলেন তিনি। বললেন, কর ব্যবস্থা সংস্কারের পরে সকলের জন্য তৈরি হওয়া কিছুটা সমান জমির সুবিধা নেওয়ার কথাও।
শনিবার কলকাতায় যৌথ ভাবে একটি অনুষ্ঠান আয়োজন করে রফতানিকারীদের সংগঠন ইইপিসি এবং দুই বণিকসভা বেঙ্গল চেম্বার ও অ্যাসোচ্যাম। সেখানেই তেওটিয়া বলেন, ‘‘জিএসটি আর করছাড়ের ঢালাও সুবিধা একসঙ্গে পাওয়া সম্ভব নয়।’’ তাঁর যুক্তি, এত কাঠখড় পুড়িয়ে জিএসটি চালুর মূল উদ্দেশ্যই হল, একই পণ্য বা পরিষেবার উপর একাধিক বার কর, লেভি ইত্যাদির বোঝা না-চাপানো, যাতে তৈরি হয় শিল্প ও বিনিয়োগের উপযুক্ত পরিবেশ। মোটামুটি ভাবে প্রতিযোগিতার সমান জমি তৈরি করে দেওয়া যায় সকলের জন্য। ফলে এই পরিস্থিতিতে কোনও শিল্প বা রফতানি পণ্যকে বিশেষ করছাড় দেওয়ার অর্থ সেই লক্ষ্যের মূলেই কুঠারাঘাত। তা এড়াতেই কেন্দ্র শিল্পের জন্য ঢালাও করছাড় বা ভর্তুকিতে আস্থা রাখছে না বলে তেওটিয়ার দাবি।
মতাদর্শগত ভাবে তারা যে ভর্তুকির পক্ষপাতী নয়, ২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বারবার তা স্পষ্ট করেছে মোদী সরকার। তার অঙ্ক কমাতে জোর দিয়েছে আধার নম্বরের ভিত্তিতে সরাসরি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ভর্তুকি পৌঁছে দেওয়ায়। গত দু’বছর ধরে বাজেটেও অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি বলেছেন, ৪ বছরের মধ্যে কোম্পানি করের হার ৩০% থেকে ধাপে ধাপে কমিয়ে ২৫% করতে চান তাঁরা। কিন্তু তেমনই কার্যত তুলে দিতে চান ওই ক্ষেত্রে করছাড়ের সুবিধাকে। এই সব কিছুর পরে এ বার জিএসটি এলে, ওই দুই সমস্যাকে যতটা সম্ভব ছেঁটে ফেলতে চান তাঁরা। বাণিজ্য সচিবের কথায়, জিএসটি চালু হলে সার্বিক ভাবে করের হার কমার সম্ভাবনা উজ্জ্বল। কিন্তু তার মধ্যে আবার করছাড় বা ভর্তুকির গেরো থাকলে, কর ব্যবস্থায় সংস্কারের মূল উদ্দেশ্যই ব্যর্থ হবে।
একই সঙ্গে রফতানিকারীদের প্রতি তাঁর আশ্বাস, ‘‘রফতানি বৃদ্ধি কেন্দ্রের অগ্রাধিকারের তালিকায় আছে। এর জন্য এমন পরিবেশ তৈরির চেষ্টা হচ্ছে, যাতে বিশ্ব বাজারে তীব্র প্রতিযোগিতায় যুঝে এ দেশের পণ্য এগিয়ে যেতে পারে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy