আমলা থাকার সময়ে এক বক্তৃতা নিয়ে আক্রমণ করেছিলেন রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন ডেপুটি গভর্নরকে। এ বার নিজের বই ‘উই অলসো মেক পলিসি’-তে ফের সেই বিরল আচার্যকে নিশানা করলেন প্রাক্তন অর্থসচিব সুভাষচন্দ্র গর্গ। দাবি করলেন, ‘রোষের আঁচ’ বক্তৃতার জন্য যে পরিসংখ্যান বিরল ব্যবহার করেছিলেন, তা আদতে ‘মিথ্যা’। এ নিয়ে জবাবদিহি করতে তাঁকে ডেকে পাঠানোর জন্য চিঠিও তৈরি করিয়েছিলেন তৎকালীন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। কিন্তু পরে আর তা নিয়ে এগোননি তিনি। সম্প্রতি যদিও নিজের বইয়ের নতুন সংস্করণে কেন্দ্র জোর করে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের ভাঁড়ার থেকে ২-৩ লক্ষ কোটি টাকা ‘হাতানোর’ চেষ্টা করেছিল বলে অভিযোগ করেছেন বিরল। বলেছেন তা রুখে দেওয়া হয়।
২০১৬ সালের ডিসেম্বরে ৪২ বছর বয়সে শীর্ষ ব্যাঙ্কের সর্বকনিষ্ঠ ডেপুটি গভর্নর হয়েছিলেন বিরল। বরাবরই জোর সওয়াল করতেন শীর্ষ ব্যাঙ্ককে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখার পক্ষে। ২০১৮ সালে যখন রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের সঙ্গে মোদী সরকারের বিরোধ তুঙ্গে, তখন প্রকাশ্য বক্তৃতায় বলেছিলেন, ‘‘যে সরকার শীর্ষ ব্যাঙ্কের স্বাধীনতাকে মর্যাদা দেয় না, আজ হোক বা কাল তারা দেশের আর্থিক বাজারের রোষের আঁচ টের পাবে। নিয়ন্ত্রক সংস্থার গুরুত্ব নষ্ট করার জন্য এক দিন তীব্র অনুশোচনায় ভুগতে হবে তাদের।’’
এই মন্তব্যের দু’সপ্তাহ পরে তাঁকে প্রকাশ্যে কটাক্ষ করেছিলেন তৎকালীন আর্থিক বিষয়ক সচিব সুভাষচন্দ্র গর্গ। ডলারের তুলনায় টাকার দাম, শেয়ার বাজারের সূচক, সরকারি বন্ডের সুদের হার নিয়ে বড়াই করে প্রশ্ন করেছিলেন, কোথায় আর্থিক বাজারের রোষ! মুখ খুলেছিলেন তৎকালীন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলিও। শেষ পর্যন্ত ২০১৯ সালের জুনে মেয়াদ শেষের ছ’মাস আগেই ‘ব্যক্তিগত কারণে’ পদ ছাড়েন বিরল।
আর এ বার বইয়ে গর্গের দাবি, আর্জেন্টিনার শীর্ষ ব্যাঙ্কে সে দেশের সরকারের হস্তক্ষেপের জেরে গভর্নরের পদত্যাগের পরে সেখানকার বন্ড বাজারের তথ্য তুলে ধরে তার সঙ্গে ভারতের তুলনা করেছিলেন আচার্য। যে ভাষা ব্যবহার করেছিলেন, তা-ও যথাযথ নয়। সেই তথ্য বিশ্লেষণ করে অর্থ মন্ত্রক তার ভুল খুঁজে বার করে। এ নিয়ে জেটলির সম্মতিতে বিরলকে ডেকে পাঠানোর জন্য চিঠি তৈরি করা হয়। পরে তা নিয়ে এগোননি জেটলি।
উল্লেখ্য, রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর উর্জিত পটেলকে প্রধানমন্ত্রী সাপ বলেছিলেন বলেও বইয়ে দাবি করেছেন গর্গ। কেন্দ্রের সঙ্গে মতবিরোধের ফলে তিনিও মেয়াদের আগে আরবিআই ছেড়েছিলেন।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)