পুণেয় চাকরির পরীক্ষার ফর্ম ভরতে উপচে পড়া ভিড়। সব পেরিয়েও লোকসভা নির্বাচনে বিপুল জয় বিজেপির। এ বার? ফাইল চিত্র
প্রতিশ্রুতি ছিল, বছরে দু’কোটি কাজের সুযোগ তৈরির। সেই লক্ষ্যে পৌঁছনো তো দূর, বরং নোটবন্দি আর তড়িঘড়ি জিএসটি চালুর খেসারত গুনে কাজ খুইয়েছেন বহু জন।
শিল্পের চাকায় গতি আনতে ঢাক-ঢোল পিটিয়ে প্রচার হয়েছিল ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ প্রকল্পের। কিন্তু নতুন লগ্নি সে ভাবে না আসার পাশাপাশি ঝাঁপ বন্ধ হয়েছে বহু কারখানার। ধুঁকছে ছোট-মাঝারি শিল্প। ফলে আকাল কল-কারখানায় কাজেরও।
কেন্দ্র চাষির আয় দ্বিগুণ করার কথা বলেছে। কিন্তু ফসলের দাম না পেয়ে ধুঁকছেন চাষিরা। এমনকি আত্মহত্যার পথ পর্যন্ত বেছে নিতে বাধ্য হয়েছেন অনেকে।
তুলনায় মসৃণ বিশ্ব অর্থনীতি আর বিশ্ব বাজারে অপেক্ষাকৃত সস্তা অশোধিত তেলের সুবিধা পেয়েও সম্ভব হয়নি ৮% বৃদ্ধিতে পৌঁছনো।
কিন্তু বৃহস্পতিবার ব্যালট যুদ্ধের ফল দেখে এক বারও মনে হয়নি যে, অর্থনীতির এমন বিবর্ণ ছবিকে সঙ্গী করে ভোট ময়দানে গিয়েছিল মোদী সরকার। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠছে, তবে কি ওই সমস্ত অর্থনৈতিক বিষয় আঁচড়ই কাটতে পারল না নির্বাচনী লড়াইয়ে? না কি এ নিয়ে মোদী সরকারকে সে ভাবে নাগাড়ে আক্রমণ করতে পারলেন না বিরোধীরা? মোদীর জাতীয়তাবাদের জিগির আর কংগ্রেসের রাফাল নিয়ে আক্রমণের মাঝে তা মানুষের মন থেকে হারিয়ে গেল কি না, ঘুরপাক খেল সেই প্রশ্নও।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বৃদ্ধির হার থেকে ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ হয়ে কাজের সুযোগ তৈরি— অর্থনীতির অঙ্কে যে তাঁর সরকার খুব ভাল জায়গায় থেকে ভোটে নামেনি, তা বিলক্ষণ জানতেন মোদী। তাই ‘অচ্ছে দিন’ শব্দবন্ধ প্রায় উচ্চারণ করেননি বলেই চলে। তার বদলে বরং মজবুত সরকার আর জাতীয়তাবাদে জোর দিয়েছেন তিনি। কিন্তু তাঁদের প্রশ্ন, বিরোধীরাও এই সমস্ত নিয়ে তেমন ঝাঁঝালো আক্রমণ করেছেন কি? নোটবন্দির সময়ে নরেন্দ্র মোদী বিপক্ষে থাকলে কি এত সহজে পার পেত সরকার? বেকারত্বের হার সাড়ে চার দশকে সবচেয়ে বেশি হলে, কেন্দ্রের সরকারকে কতটা জোর আক্রমণ করতেন তিনি? সে দিক থেকে বিরোধীদের ব্যর্থতার দিকে আঙুল তুলছেন তাঁরা। একই সঙ্গে, মূল্যবৃদ্ধির হার কম থাকা, ব্যাঙ্কিং থেকে শুরু করে শৌচাগারের মতো নানা পরিষেবা সাধারণ মানুষের দরজায় পৌঁছনো মোদী সরকারের পক্ষে গিয়েছে বলে তাঁদের অভিমত।
তবে মোদীও বিলক্ষণ জানেন, বারবার বালাকোটের মতো কাণ্ডে চিঁড়ে ভিজবে না। আগামী দিনে প্রশ্ন উঠবেই অর্থনীতির হাল আর কাজের সুযোগ তৈরি নিয়ে। বিশেষত যেখানে ফি বছর চাকরির বাজারে পা রাখছেন বহু তরুণ-তরুণী। অর্থনীতির চাকা ঘুরিয়ে কাজের সুযোগ তৈরিই তাই নতুন মোদী সরকারের প্রথম চ্যালেঞ্জ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy