Advertisement
০৫ মে ২০২৪

বিদেশি লগ্নির সম্মিলিত সীমা নিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি

বিভিন্ন ধরনের বিদেশি বিনিয়োগের সম্মিলিত ঊর্ধ্বসীমা বেঁধে দেওয়ার বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করল কেন্দ্র। এবং সেই নতুন নিয়ম কার্যকর হল বৃহস্পতিবার থেকেই। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, এর ফলে আগামী দিনে বিপুল অঙ্কের বিদেশি লগ্নি আসতে পারে শেয়ার বাজার, বিমা, খুচরো ব্যবসা, পেনশন তহবিল পরিচালনা, ওষুধ ব্যবসার মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ৩১ জুলাই ২০১৫ ০৩:১৪
Share: Save:

বিভিন্ন ধরনের বিদেশি বিনিয়োগের সম্মিলিত ঊর্ধ্বসীমা বেঁধে দেওয়ার বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করল কেন্দ্র। এবং সেই নতুন নিয়ম কার্যকর হল বৃহস্পতিবার থেকেই। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, এর ফলে আগামী দিনে বিপুল অঙ্কের বিদেশি লগ্নি আসতে পারে শেয়ার বাজার, বিমা, খুচরো ব্যবসা, পেনশন তহবিল পরিচালনা, ওষুধ ব্যবসার মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে। তবে আগের ঘোষণা মতোই এই নতুন নিয়মের আওতায় আসছে না ব্যাঙ্কিং ও প্রতিরক্ষা শিল্প।

ঘোষণা বাজেটেই ছিল। বিদেশি বিনিয়োগের পথ মসৃণ করতে ১৬ জুলাই সেই পরিকল্পনায় সিলমোহর দিয়েছিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি জানিয়েছিলেন, এ বার থেকে বিদেশি লগ্নির ঊর্ধ্বসীমা নির্ধারণে আর তার গোত্র বিচার করা হবে না। অর্থাৎ, আলাদা-আলাদা সর্বোচ্চ সীমা বেঁধে দেওয়া হবে না প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই), বিদেশি আর্থিক সংস্থার লগ্নি (এফআইআই), কিংবা অনাবাসী ভারতীয়দের বিনিয়োগে। তার বদলে বরং সবগুলি মিলিয়ে বেঁধে দেওয়া হবে একটিই ঊর্ধ্বসীমা (কম্পোজিট ক্যাপ)।

আগে অধিকাংশ শিল্পে বিদেশি লগ্নির ঊর্ধ্বসীমা তো বেঁধে দেওয়া হতই, তার মধ্যে আবার আলাদা-আলাদা গণ্ডি কেটে দেওয়া হত এফডিআই, এফআইআই ইত্যাদির জন্য। নতুন নিয়মে তা আর থাকছে না। শুধু তা-ই নয়। বিদেশি মুদ্রায় পরিবর্তনযোগ্য ঋণপত্র (ফরেন কারেন্সি কনভার্টিবল্‌ বন্ড) এবং ডিপোজিটরি রিসিট ছেড়ে টাকা তুললেও, যতক্ষণ তাকে শেয়ারে রূপান্তরিত করা না-হবে, ততক্ষণ তা আর গণ্য হবে না বিদেশি বিনিয়োগ হিসেবে। সংস্থার মালিকানা বদল না-হলে কিংবা বিদেশি সংস্থার হাতে নিয়ন্ত্রণ যাওয়ার উপক্রম না-হলে, সরকারি অনুমোদন লাগবে না ৪৯ শতাংশ পর্যন্ত বিদেশি পোর্টফোলিও লগ্নিতেও। উল্লেখ্য, এই ধরনের বিনিয়োগ করা হয় কোনও সংস্থায় শেয়ার কিনে মুনাফা করার জন্য। সংস্থার মালিকানা দখলের উদ্দেশ্য এর মধ্যে থাকে না।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এর ফলে ভারতে বিদেশি লগ্নি বাড়বে। সহজ হবে ব্যবসা করা। বিনিয়োগের জোয়ার আসবে খুচরো ব্যবসা (রিটেল), স্টক এক্সচেঞ্জের মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে। কারণ, শেয়ার বাজারে প্রত্যক্ষ বিদেশি লগ্নি (এফডিআই) সাধারণত কম আসে। বরং টাকা উপুর করে বিদেশি আর্থিক সংস্থাগুলি (এফআইআই)। সম্মিলিত ঊর্ধ্বসীমার সুবিধা নিয়ে সেখানে ওই ধরনের লগ্নিই আরও বেশি আসার সুযোগ পাবে।

তবে আপাতত এই নতুন নিয়মের বাইরে রাখা হয়েছে ব্যাঙ্কিং ও প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রকে। বর্তমানে ব্যাঙ্কে বিদেশি লগ্নির ঊর্ধ্বসীমা ৭৪%। এর মধ্যে ৪৯% পর্যন্ত আসতে পারে বিদেশি আর্থিক সংস্থার ঝুলি থেকে। গত ১৬ তারিখই শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রকের কর্তা স্পষ্ট জানিয়েছিলেন, ‘‘ব্যাঙ্কিং এবং প্রতিরক্ষা— এই দু’টি ক্ষেত্রকে নতুন নিয়মের বাইরে রাখা হবে। ফলে সেখানে এফআইআইয়ের পৃথক ঊর্ধ্বসীমা থাকছে যথাক্রমে ৪৯ ও ২৪ শতাংশ।’’ তাঁর দাবি ছিল, দেশের নিরাপত্তার প্রশ্ন জড়িত হওয়ায় প্রতিরক্ষা ক্ষেত্র স্পর্শকাতর। আর ব্যাঙ্কিংয়ে বিদেশি আর্থিক সংস্থার লগ্নি ৫০ শতাংশের নীচে বেঁধে রাখার কারণ বাড়তি সাবধানতা। যাতে ওই সংস্থাগুলি হঠাৎ করে ভারত থেকে লগ্নি সরাতে শুরু করলে, ব্যাঙ্কিং ক্ষেত্র হুড়মুড়িয়ে ধসে না-পড়ে। পরে ওই একই কথা বলেন কেন্দ্রীয় বাণিজ্যমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। এ দিন জারি করা বিজ্ঞপ্তিতেও ওই দুই ক্ষেত্রকে নতুন নিয়মের বাইরে রাখার বিষয়টি স্পষ্ট করে দিয়েছে কেন্দ্র।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE