আলোচনা: নয়াদিল্লিতে জিএসটি পরিষদের ২৭তম বৈঠকে ভিডিও সম্মেলনে অরুণ জেটলি ও হাসমুখ আঢিয়া। ছবি: পিটিআই।
আলোচনা চলছিল অনেক দিন ধরেই। সেই মতো জিএসটি নেটওয়ার্ককে (জিএসটিএন) রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থায় পরিণত করতে শুক্রবার সায় দিল জিএসটি পরিষদ। শুরু থেকে এত দিন যার ৫১% অংশীদারি থেকেছে বেসরকারি সংস্থার হাতে।
সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশের মতে, আধারের তথ্য চুরির অভিযোগে একাধিক বার অস্বস্তিতে পড়েছে কেন্দ্র। জিএসটিএনে করদাতাদের বিপুল তথ্য জমা থাকে। তা সুরক্ষিত রাখতে সম্ভবত এই পদক্ষেপ। অন্য অংশের অবশ্য মত, আগেই ঠিক ছিল বেসরকারি সংস্থা হিসেবে কাজ শুরু করলেও, শেষ পর্যন্ত জিএসটিএনকে হাতে নেবে সরকার। তা-ই হয়েছে।
অর্থ মন্ত্রকের দাবি, জিএসটিএন যে ধরনের কাজ করে, তাতে সেটি রাষ্ট্রায়ত্ত হলে সুবিধা। বর্তমান পর্ষদ পাঁচ বছর পর্যন্ত কাজ করবে। অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি বলেন, নতুন সংস্থার ৫০% থাকবে কেন্দ্রের হাতে। বাকি রাজ্যগুলির। তবে কার হাতে কত, তা স্থির হবে কর আদায়ের অনুপাতে। সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ-সহ বিভিন্ন রাজ্য।
পাল্টে রাষ্ট্রায়ত্ত
এখন জিএসটিএন*
• বেসরকারি সংস্থা
• ৫১% অংশীদারি পাঁচ বেসরকারি সংস্থার হাতে
• আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ক, এইচডিএফসি, এইচ়ডিএফসি ব্যাঙ্ক এবং এনএসই স্ট্র্যাটেজিক ইনভেস্টমেন্টের কাছে ১০% করে।
বাকি ১১% শেয়ার এলআইসি হাউসিং ফিনান্সের
• ৪৯% অংশীদারি সরকারের। এর মধ্যে কেন্দ্রের হাতে ২৪.৫% শেয়ার। বাকি শেয়ার রাজ্যগুলির হাতে বদলে হচ্ছে
• রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা। ১০০% মালিকানাই সরকারের
• বেসরকারি সংস্থাগুলির হাতে থাকা ৫১% শেয়ার প্রায় ৫.১ কোটি টাকায় কিনবে কেন্দ্র ও রাজ্যগুলি
• নতুন রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থায় ৫০% শেয়ার কেন্দ্রের। বাকি অর্ধেক রাজ্যগুলির কাজ একই
• জিএসটিতে নাম নথিভুক্তি
• কর দেওয়া, রিটার্ন জমা, আগে মেটানো করের টাকা ফেরতের (ইনপুট ট্যাক্স ক্রেডিট)
ব্যবস্থা ইত্যাদি নিয়ে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে সাহায্য
* পুরো নাম জিএসটি নেটওয়ার্ক এ দিন আরও
• রিটার্ন জমার নিয়ম সরল করতে উদ্যোগ। মাসে একটি রিটার্নের নিয়ম চালু ছ’মাসেই
• ডিজিটাল লেনদেনে উৎসাহ দিতে ২% ছাড়ের প্রস্তাব খতিয়ে দেখবে পাঁচ রাজ্যের অর্থমন্ত্রীকে নিয়ে গঠিত কমিটি
• চিনিতে সেস বসানোর প্রস্তাব নিয়েও কথা পাঁচ রাজ্যের অর্থমন্ত্রীর কমিটিতে
তবে এই সিদ্ধান্তের পরে অর্থসচিব হাসমুখ আঢিয়াকে অর্থ মন্ত্রক থেকে সরানোর দাবি জানিয়েছেন বিজেপি সাংসদ সুব্রহ্মণ্যন স্বামী। অনেক দিনই জিএসটিএন বেসরকারি হাতে থাকা নিয়ে আপত্তি জানাচ্ছিলেন তিনি।
চিনিতে সেস নিয়ে কথা জিএসটির আওতায় চিনিতে সেস বসানোর প্রস্তাবে এ দিন একমত হতে পারেনি পরিষদ। কেন্দ্রের যুক্তি ছিল, সম্প্রতি আখচাষিদের ভর্তুকি দেওয়ার যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, তার অর্থ জোগাড়েই এই প্রস্তাব। কিন্তু বৈঠকের টেবিলে উপস্থিত পশ্চিমবঙ্গের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র বলেন, কেরল, ওডিশা, পশ্চিমবঙ্গ, অন্ধ্রপ্রদেশ-সহ বিভিন্ন রাজ্য এতে আপত্তি জানিয়েছে। তাদের মতে, সেই টাকা আসলে চিনিকল মালিকরা পাবেন। ধাক্কা খাবে এক দেশ-এক করের ভাবনা। বোঝা চাপবে সাধারণ মানুষের উপরেও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy