চিঁড়ে ভিজল না কেন্দ্রীয় বিজ্ঞপ্তিতেও। গয়না শিল্পে আন্দোলন থামাতে বিশেষ কিছু সুবিধার কথা জানিয়ে সোমবারই যা জারি করা হয়েছিল। কিন্তু গয়নায় ১% উৎপাদন শুল্ক বসানোর প্রস্তাব পুরোপুরি ফেরানোর দাবিতে মঙ্গলবার ফের ধর্মঘটের পথে হাঁটলেন ব্যবসায়ীদের বেশির ভাগ অংশ। ফলে মার্চের শুরু থেকে চলা টানা ১৮ দিনের ধর্মঘট দেশের কিছু কিছু জায়গায় গত শনিবার রাতে তুলে নেওয়া হলেও, এ দিন আবার চালু হয়ে গেল পুরোদমে। অধিকাংশ রাজ্যে অবশ্য তা আদৌ ওঠেইনি।
তবে পশ্চিমবঙ্গের গয়না ব্যবসায়ীরা এই দ্বিতীয় দফার ধর্মঘটে সামিল হবেন কি না, সে ব্যাপারে আগামী কাল সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে দাবি স্বর্ণশিল্প বাঁচাও কমিটির। যদিও সোনা ব্যবসায়ীদের আর এক সংগঠন ওয়েস্ট বেঙ্গল বুলিয়ন মার্চেন্টস অ্যান্ড জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের তরফে খবর, মঙ্গলবার থেকে ফের শুরু হওয়া ধর্মঘটে সামিল কলকাতার সোনাপট্টিও। উল্লেখ্য, যে সব রাজ্যে শনিবার রাতে ধর্মঘট তোলা হয়েছিল, তার মধ্যে ছিলেন এ রাজ্যের ব্যবসায়ীরাও।
গয়নায় শুল্ক বসানোর প্রস্তাবের বিরোধিতায় দেশ জুড়ে চলতে থাকা আন্দোলন মোকাবিলা করতে কেন্দ্র বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছিল বিশেষ কমিটি তৈরি করে আলোচনায় বসার কথা। কিন্তু তা শিল্পমহলের ক্ষোভে জল ঢালতে পারেনি। তবে ধর্মঘট চালানো নিয়ে এই মুহূর্তে স্পষ্টই দু’ভাগে বিভক্ত ব্যবসায়ীরা। যেমন, অল ইন্ডিয়া জেমস অ্যান্ড জুয়েলারি ট্রেড ফেডারেশনের ডিরেক্টর বাছরাজ বামালুয়া বলেন, ‘‘অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে ধমর্ঘট তোলার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, তাতে অটল থাকব। কারণ, আমাদের সঙ্গে আলোচনায় তিনি যে সমস্ত প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তার সবক’টিই রক্ষা করা হয়েছে কেন্দ্রীয় বিজ্ঞপ্তিতে। তবে আন্দোলনে গয়না শিল্পের ৩৫০টি সংগঠন সামিল। কাজেই স্থানীয় স্তরে কোনও সংগঠন ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত নিলে তার বিরোধিতা করব না।’’
আবার দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পাওয়া খবরে এটা স্পষ্ট যে, আন্দোলন তো ওঠেইনি, বরং তা আরও জোরালো হচ্ছে। সংবাদ সংস্থা জানাচ্ছে, উত্তেজনা এতটাই তুঙ্গে যে, কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করতে উত্তরপ্রদেশে গয়না ব্যবসায়ীদের একাংশ এ বার হোলি পালন না-করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
এ দিকে ধর্মঘট চালু থাকায় মার খাচ্ছে দেশের গয়না রফতানি। জেমস অ্যান্ড জুয়েলারি এক্সপোর্ট প্রোমোশন কাউন্সিলের পূর্বাঞ্চল শাখার চেয়ারম্যান প্রকাশ পিন্চা বলেন, ‘‘বিদেশের বহু বরাত হারিয়েছি। ফলে রফতানিকারীদের প্রচুর আর্থিক ক্ষতি স্বীকার করতে হয়েছে। কত টাকার রফতানি মার খেল, তার অঙ্ক শীঘ্রই জানতে পারব।’’ তাঁর মতে, ধর্মঘট আগামী দিনে চললে গয়না রফতানির অবস্থা যে আরও জটিল আকার নেবে, তাতে কোনও সন্দেহ নেই।