প্রযুক্তি রয়েছে। প্রাথমিক বিনিয়োগও মজুত। বাধা সেই লাল ফিতের ফাঁস। আর তাতেই আটকে কলকাতা শহরের রোপওয়ে পরিবহণ প্রকল্প।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, আগামী বছর বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই প্রকল্প চালু করে দিতে চায় রাজ্য। মার্চ মাসে রাজ্য সরকারের উচ্চ স্তরের এক বৈঠকে এই প্রকল্পকে ছাড়পত্র দেন নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। চূড়ান্ত হয় দু’টি রুট। ওই বৈঠকেই রোপওয়ে নির্মাতা সংস্থাকে মে মাসের মধ্যে প্রকল্প চালু করে দেওয়ার নির্দেশ দেন মন্ত্রী। কিন্তু মন্ত্রীর অনুমোদনের পরেও বিভিন্ন ছাড়পত্রের অভাবে দরপত্র চাওয়ার কাজই শুরু হয়নি।
গোটা প্রকল্পের দায়িত্বে রয়েছে কেএমডিএ। স্থানীয় সংস্থা কনভেয়ার অ্যান্ড রোপওয়ে সার্ভিসেস এই প্রকল্পের সার্বিক পরিকল্পনা তৈরি করে কেএমডিএ-র কাছে জমা দেয়। প্রকল্প যাচাই করে দেখার দায়িত্ব পরামর্শদাতা সংস্থা ইনফ্রাস্ট্রাকচার্স লিজিং অ্যান্ড ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেস (আইএলঅ্যান্ডএফএস)-কে দেয় কেএমডিএ। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, আই এল অ্যান্ড এফ এস বিস্তারিত প্রকল্প রিপোর্ট তৈরিও করেছে। কিন্তু কেএমডিএ এখনও ছাড়পত্র দিতে পারেনি। রাজ্যের দাবি, এই প্রকল্পে নিরাপত্তা সংক্রান্ত খুঁটিনাটি বিচার করতে সময় লাগছে।
দেশের প্রথম মোনো-রেল প্রকল্প ইতিমধ্যেই এ শহরের হাতছাড়া হয়েছে। মুম্বই ওই জায়গা দখল করেছে ।
সেই ক্ষতে প্রলেপ দিতে পারে রোপওয়ে পরিবহণ ব্যবস্থা। শুধু দেশেই নয়। গোটা বিশ্বের যাত্রী পরিবহণ মানচিত্রেই আলাদা জায়গা করে নিতে পারে কলকাতা। কারণ পর্যটন কেন্দ্রে রোপওয়ের মাধ্যমে যাত্রী পরিবহণ পরিচিত দৃশ্য হলেও এখনও তা শহরের যান চলাচলের অঙ্গ নয়। আঁকা-বাঁকা পথে চলার ব্যাপারে প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতার কারণেই তা সম্ভব হয়নি।
এ বার সেই সমস্যাকে টপকে যাওয়ার প্রযুক্তির চাবিকাঠি পাওয়া গিয়েছে। এমনই দাবি করেছেন কনভেয়ার অ্যান্ড রোপওয়ে সার্ভিসেস-এর অন্যতম প্রধান রচনা মুখোপাধ্যায়। আর তার ভিত্তিতেই রাজ্য সরকারকে প্রকল্পের পূর্ণাঙ্গ পরিকল্পনা জমা দিয়েছে সংস্থা। দু’টি রুটের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। শিয়ালদহ থেকে ফেয়ারলি প্লেস এবং হাওড়া থেকে নবান্ন। তিনি বলেন, “বর্তমান প্রযুক্তিতে সোজা পথেই রোপওয়ে চলে। বাঁক নিতে পারে না। সেই সমস্যার কারণেই শহরের আঁকা-বাঁকা পথে রোপওয়ে ব্যবহার করা যায় না। আমাদের কার্ভো রোপওয়ে সহজেই বাঁক নিতে পারবে।”
সংস্থার দাবি, আন্তর্জাতিক পেটেন্ট নেওয়া এই প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে যানজট ও দূষণের জোড়া সমস্যা মোকাবিলা করা সম্ভব। খরচও তুলনামূলক ভাবে কম। রোপওয়ের প্রতি কিলোমিটার তৈরি করতে খরচের পরিমাণ দাঁড়াবে ২০ কোটি টাকা। অন্য দিকে যান চলাচল ও যাত্রী পরিবহণ ব্যবস্থায় স্বস্তি আনতে উড়ালপুল বা মেট্রোর মতো পরিকাঠামো তৈরি অনেকটাই ব্যয়সাপেক্ষ। বিশেষজ্ঞদের মতে, উড়ালপুলের প্রতি কিলোমিটার তৈরি করতে গড়ে খরচ হয় ৭০ কোটি টাকা। মেট্রো তৈরি করতে কিলোমিটার প্রতি খরচের পরিমাণ ৩০০ কোটি টাকা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy