আহ্বান: বিনিয়োগ টানতে অস্ত্র সামাজিক প্রকল্পও। —ফাইল চিত্র
সুবিধাজনক ভৌগলিক অবস্থান। বড় বাজার। ‘সুখী’ ক্রেতা। মূলত এই তিন মন্ত্রেই ফ্রাঙ্কফুর্টে জার্মান শিল্পমহলকে রাজ্যে লগ্নির আমন্ত্রণ জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তুলে ধরলেন, লগ্নির সুবিধা হিসেবে জমি ব্যাঙ্ক, তৈরি পরিকাঠামো, প্রকল্পে ছাড়পত্রের ক্ষেত্রে এক-জানলা ব্যবস্থা, ব্যবসা করার সুবিধার মাপকাঠিতে দেশে শীর্ষ স্থান ও ই-গভর্ন্যান্সে সাফল্যের ছবি। তবে তাঁর বক্তৃতায় বার বার ঘুরে এল কন্যাশ্রী, সবুজসাথীর মতো সামাজিক প্রকল্প। এই যুক্তিতে যে, মানুষের হাতে টাকা ও মুখে হাসি থাকলে তবেই তিনি বাজারের দিকে পা বাড়াবেন। চাহিদার হাত ধরে বাড়বে ব্যবসা, লগ্নির সুযোগ।
চলতি ধারণা, জার্মানরা সেরা মানের পণ্য তৈরি করেন। কিন্তু মানুষ হিসেবে কাঠখোট্টা। এ দিন তাঁদের সামনেই লাটাই থেকে আত্মীয়তা ও আবেগের সুতো ছাড়েন মমতা। বলেন ছোট ছোট জার্মান শব্দ, বাক্য। মনে করান কলকাতার ফুটবল পাগল জার্মান সমর্থকদের কথা। তোলেন সুভাষচন্দ্র বসুর প্রসঙ্গও। সেই বুনোটের জোরে তাঁর বার্তা, ‘‘রাজ্যে আসুন, লগ্নি করুন। বাংলাই ভবিষ্যতের গন্তব্য।’’
তবে শুধু আবেগে যে চিঁড়ে ভেজে না, তা জানেন মুখ্যমন্ত্রী। তাই বোঝান কী ভাবে এখানে পা রাখলে খুলতে পারে পূর্ব, উত্তর-পূর্ব ভারত, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বাজারের দরজা। রাজ্যে ব্যবসার অভিজ্ঞতা তুলে ধরতে শিল্প কর্তাদের মঞ্চে ডাকেন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র।
চ্যাটার্জি গোষ্ঠীর পূর্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায় পেট্রোপণ্যে নতুন লগ্নি ছাড়াও নিউরো সায়েন্স ইত্যাদিতে ব্যবসার কথা বলেন। নতুন প্রকল্পের কথা বলেন কেভেন্টারের ময়াঙ্ক জালান। আইটিসি-র সঞ্জীব পুরী, রিলায়্যান্সের তরুণ ঝুনঝুনওয়ালা বা হর্ষ নেওটিয়া— রাজ্যে লগ্নির সদর্থক পরিবেশের বার্তা দেন বাকিরাও।
জার্মান বণিকসভা আইএইচকে, ইন্দো-জার্মান চেম্বার, ভিডিএমএ বলেছে, তারা বাংলা তথা ভারতে লগ্নি সম্ভাবনা খতিয়ে দেখবে। প্রতিশ্রুতি, পরের বিশ্ব বঙ্গ শিল্প সম্মেলনে আরও ভারী নাম থাকবে। আর এই সব কিছুকেই লগ্নি টানার আগে বিশ্বাসের সলতে পাকানো হিসেবে দেখতে চায় রাজ্য। তাতে নতুন লগ্নির আলো জ্বলবে কি না, তার উত্তর সময়ের গর্ভে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy