Advertisement
E-Paper

সরকারি ঋণপত্রে টাকা ঢালছে অনেক বড় সংস্থাই

রিলায়্যান্স ইন্ডাস্ট্রিজ, লার্সেন অ্যান্ড টুব্রোর পরে এ বার টাটা কনসালট্যান্সি সার্ভিসেস (টিসিএস)।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০১৬ ০৭:৪৮

রিলায়্যান্স ইন্ডাস্ট্রিজ, লার্সেন অ্যান্ড টুব্রোর পরে এ বার টাটা কনসালট্যান্সি সার্ভিসেস (টিসিএস)।

সরকারি ঋণপত্রে লগ্নি বাড়াচ্ছে একের পর বড় সংস্থা। হাতে বিপুল নগদ জমা রয়েছে যাদের। এই প্রবণতা বাড়ার হাত ধরে সরকারি ঋণপত্রের বাজারে বিনিয়োগের নতুন ধারার সূচনা হতে চলেছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। উল্টো চিন্তাও রয়েছে। কারণ এই সব সংস্থা পরে এক লপ্তে বেশি সংখ্যক বন্ড বিক্রি করলে ঋণপত্রের বাজারে অস্থিরতা বাড়াবে বলেও সতর্ক করেছেন তাঁরা।

জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত এই ধরনের ঋণপত্রে ৩০০ কোটি ডলার (প্রায় ২০,১০০ কোটি টাকা) ঢেলেছে টিসিএস। যা তাদের হাতে থাকা বাড়তি নগদের প্রায় ৮০%। গত কয়েক বছরে একই পথে হেঁটেছে মুকেশ অম্বানীর রিলায়্যান্স ইন্ডাস্ট্রিজ এবং লার্সেন অ্যান্ড টুব্রোর মতো হাতে বিপুল নগদ থাকা সংস্থাও। ২০১৫ সালের মার্চ পর্যন্ত সরকারি ঋণপত্রে রিলায়্যান্স লগ্নি করেছে ৭,৯২১ কোটি টাকা। এলঅ্যান্ডটি-র ক্ষেত্রে সেই অঙ্ক ১,৪৭০ কোটি টাকা। সংশ্লিষ্ট মহলের আশঙ্কা, টাকা তুলে নেওয়ার জন্য এই সব সংস্থা পরে হঠাৎ করে এক সঙ্গে প্রচুর ঋণপত্র বিক্রি করলে বাজার অস্থির হতে পারে।

দেশের ৬৬,৫০০ কোটি ডলারের (প্রায় ৪৪,৫৫,৫০০ কোটি টাকা) সরকারি ঋণপত্রের বাজারের অংশীদার মূলত বিভিন্ন ব্যাঙ্ক। বিশেষজ্ঞদের মতে, একই সঙ্গে বাণিজ্যিক ব্যাঙ্ক ও বন্ডের বাজারকে নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা রয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের (আরবিআই)। তাই বন্ডের বাজারে দোলাচল আটকাতে অনেক ক্ষেত্রে তার বিক্রিও নজরে রাখতে পারে শীর্ষ ব্যাঙ্ক। কিন্তু সংস্থাগুলির কার্যকলাপের উপর আরবিআইয়ের কোনও হাত নেই। ফলে তারা চাইলেই নিজেদের ইচ্ছেমতো ঋণপত্র বিক্রি করতে পারে।

যদিও, এ নিয়ে আশ্বস্ত করেছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আরবিআই কর্তা। বিষয়টির উপর নজর রাখা হচ্ছে জানিয়ে তাঁর দাবি, এখনও পর্যন্ত আতঙ্কিত হওয়ার কোনও কারণ ঘটেনি। কিন্তু যেহেতু এই ধরনের সংস্থাগুলি নিয়মিত লগ্নিকারী নয়, তাই এ ব্যাপারে সতর্ক থাকছে শীর্ষ ব্যাঙ্ক।

সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, নগদ হাতে থাকার বিচারে ভারতের প্রথম ছ’টি সংস্থার ভাঁড়ারে রয়েছে প্রায় ১.৭ লক্ষ কোটি টাকা। যা জমা রাখতে কর্পোরেট বন্ড, মিউচুয়াল ফান্ড এবং ব্যাঙ্কের স্থায়ী আমানতই ছিল এত দিন তাদের মূল গন্তব্য। কিন্তু ২০১৫ সালের শুরু থেকে ১৫০ বেসিস পয়েন্ট সুদ কমিয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। যার সঙ্গে তাল মিলিয়ে সুদের হার কমছে ব্যাঙ্কের আমানতেও। উল্টো দিকে আকর্ষণ বাড়ছে বন্ডের। এখন স্টেট ব্যাঙ্কে এক বছরের মেয়াদি আমানতে সুদের হার ৭.২৫-৭.৫০%। সেখানে ১০ বছরের সরকারি ঋণপত্রের ক্ষেত্রে রিটার্ন মিলছে ৭.৫০%। আবার মিউচুয়াল ফান্ডে টাকা রাখতে যে পরিমাণ খরচ হয়, তার তুলনায় সরকারি বন্ডে তা অনেকটাই কম। এই সব কারণেই ছবিটা বদলাচ্ছে বলে মনে করছে তারা।

ভারতে বার্কলেজের অন্যতম কর্তা অনিন্দ্য দাশগুপ্তের মতে, ব্যাঙ্ক আমানত এবং ১০ বছরের সরকারি বন্ডগুলির মধ্যে সুদের হারের তফাৎ ক্রমশ কমে আসছে। যে কারণে বেশি সুরক্ষা, ইচ্ছেমতো টাকা তোলার সুবিধা, লগ্নির কম খরচের মতো বৈশিষ্ট্য সংস্থাগুলিকে সরকারি ঋণপত্রের দিকে টেনে আনছে। আগামী দিনে এই ধরনের প্রকল্পে সংস্থাগুলির লগ্নি আরও বাড়বে বলেও তাঁর ধারণা। ডিবিএস ব্যাঙ্কের কর্তা আশিস বৈদ্যের মতে, মিউচুয়াল ফান্ড বা স্থায়ী আমানতে লগ্নির তুলনায় এই ধরনের ঋণপত্রে গত কয়েক বছরে বেশি রিটার্ন পাওয়া যাচ্ছে। ফলে সংস্থাগুলি উৎসাহ দেখাচ্ছে।

তবে মূল্যবৃদ্ধির কথা মাথায় রেখে সম্প্রতি সুদ কমানোর পথ থেকে কিছুটা সরে এসেছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। ফলে গত দেড় বছরে চাঙ্গা থাকা বন্ডের বাজার আপাতত কিছু দিন ঝিমিয়ে থাকবে বলেই ধারণা বিশেষজ্ঞদের। এই অবস্থায় আগামী দিনে সংস্থাগুলি কী পদক্ষেপ করে, তার দিকেই তাকিয়ে তাঁরা।

government security
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy