রিচার্ড বর্মা
সবার আগে জমি অধিগ্রহণের জট কাটাতে হবে। সরাতে হবে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের রাস্তার কাঁটা। একমাত্র তবেই লগ্নি টানা সম্ভব হবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর স্বপ্নের ‘স্মার্ট সিটি’ প্রকল্পে। নয়তো সেখানে মুশকিল হবে বাণিজ্যিক ভাবে লাভের মুখ দেখাই। ভারত-আমেরিকা দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্ভাবনা নিয়ে বলতে গিয়ে মঙ্গলবার কেন্দ্রের উদ্দেশে এই বার্তাই দিলেন ভারতে মার্কিন রাষ্ট্রদূত রিচার্ড বর্মা।
দেশে ১০০টি স্মার্ট সিটি গড়ার কথা বারবারই বলেন মোদী। বাজেটে এই পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করেছেন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলিও। বড় শহরের লাগোয়া অঞ্চলে বা মাঝারি মাপের শহরকে ঢেলে সেজে এই ধরনের স্মার্ট সিটি তৈরি হওয়ার কথা। যা হবে সুপরিকল্পিত, যাতায়াতের ভাল ব্যবস্থাযুক্ত ও পরিবেশ-বান্ধব। দ্রুত গতির নেট সংযোগও থাকার কথা সেখানে। কিন্তু জমি-জট ও বিদেশি লগ্নির পথের বাধা না-কাটলে যে ওই ধরনের শহর তৈরিতে টাকা ঢালতে কেউ এগিয়ে আসতে চাইবেন না, এ দিন আমেরিকান চেম্বার অব কমার্সে সে কথাই মনে করিয়ে দেন রিচার্ড বর্মা। বর্মার কথায়, ‘‘জমি অধিগ্রহণ করা, বিদেশি লগ্নি-সহ কিছু বিষয়ে কেন্দ্রের অবস্থান এখনও স্পষ্ট নয়। বেশ কিছু প্রশ্ন রয়েছে। সেগুলির উত্তর না-মিললে, দেশি-বিদেশি লগ্নিকারীদের স্মার্ট সিটিতে টাকা ঢালার জন্য টেনে আনা শক্ত। কারণ, এই সব বিষয় স্পষ্ট না-হলে প্রকল্পগুলির লাভজনক হয়ে ওঠাই কঠিন হবে।’’ বর্মার দাবি, স্মার্ট সিটি তৈরিতে প্রযুক্তিগত ও আর্থিক সহায়তা দিতে রাজি অনেক মার্কিন সংস্থাই। কিন্তু জমি ও বিদেশি লগ্নি নিয়ে কেন্দ্রের অবস্থান স্পষ্ট হওয়ার আগে তা নিয়ে এগোনো শক্ত।
স্মার্ট সিটি-সহ সারা দেশে পরিকাঠামো নির্মাণে প্রয়োজন বিপুল লগ্নি। বিশেষজ্ঞদের হিসেব অনুযায়ী, অন্তত দেড় থেকে দু’লক্ষ কোটি টাকা। এর একটা বড় অংশ বেসরকারি ক্ষেত্র থেকে আসবে বলে আশা করছে মোদী-সরকার। কিন্তু জমি ও বিদেশি লগ্নি সম্পর্কে নীতি স্বচ্ছ না-হলে যে তা কিছুতেই সম্ভব হবে না, সে কথাই এ দিন জোরের সঙ্গে বলেছেন বর্মা।
অবশ্য ভারত-মার্কিন বাণিজ্য বৃদ্ধির সম্ভাবনা নিয়ে বেশ আশাবাদী আমেরিকার রাষ্ট্রদূত। তিনি বলেন, ‘‘পনেরো বছর আগে দু’দেশের বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ১,৯০০ কোটি ডলার। গত বছরই তা প্রথম ১০ হাজার কোটি ডলার ছাড়িয়েছে। এখন দাঁড়িয়েছে ১০,৩০০ কোটি ডলারে। আগামী দিনে এই অঙ্ককে ৫০ হাজার কোটি ডলারে নিয়ে যেতে মার্কিন মুলুক হাত বাড়াতে তৈরি।’’ একই ভাবে ভারতে পরিবহণ ব্যবস্থার সংস্কারেও ওবামার দেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে চায় বলে দাবি করেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy