জেট এয়ারওয়েজের কর্ণধার নরেশ গয়ালও।
অংশীদার এতিহাদের পরে এ বার জেট এয়ারওয়েজকে বাঁচাতে শর্ত সাপেক্ষে লগ্নির প্রস্তাব দিলেন খোদ কর্ণধার নরেশ গয়ালও। জানালেন, দেওয়ালে কার্যত পিঠ ঠেকে যাওয়া বিমান পরিষেবা সংস্থাটিকে বাঁচাতে তিনি ৭০০ কোটি টাকা পর্যন্ত ঢালতে রাজি। তার জন্য আপত্তি নেই নিজের হাতে থাকা সংস্থার সমস্ত শেয়ার বন্ধক রাখতেও। কিন্তু নিজের অংশীদারি ২৫ শতাংশের নীচে নামানো না হলে তবেই এই লগ্নির কথা ভাববেন তিনি।
নগদের অভাবে জেরবার জেট। অনেক কর্মীকে বেতন দিতে হিমশিম খাচ্ছে। ঋণের কিস্তিও মেটাতে ব্যর্থ হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে সংস্থা চাঙ্গার জন্য নগদ জোগানের প্রস্তাব আসছে একাধিক। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, সেগুলির সঙ্গে যে ভাবে জড়িয়ে থাকছে নানান শর্ত, তা শেষে পুঁজি পাওয়ার পথে বাধা হয়ে দাঁড়াবে না তো?
সম্প্রতি জেটের অন্যতম অংশীদার সংযুক্ত আরব আমিরশাহির বিমান সংস্থা এতিহাদও সংস্থায় অংশীদারি বাড়াতে চেয়ে প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু শর্ত রেখেছিল গয়ালের শেয়ার ৫১% থেকে ২২ শতাংশের নীচে নামানো ও তাঁকে পর্ষদ থেকে সরানোর। যার প্রেক্ষিতে জেটের ঋণদাতা স্টেট ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান রজনীশ কুমারকে চিঠি লিখে গয়াল শর্তসাপেক্ষে তাঁর লগ্নির প্রস্তাব দিয়েছেন।
নগদের অভাবে জেরবার জেট। অনেক কর্মীকে বেতন দিতে হিমশিম খাচ্ছে।
এর আগে পুঁজি ঢালতে শর্তের কথা বলেছিল কাতার এয়ারওয়েজও। সংস্থার সিইও আকবর আল-বাকের বলেছিলেন, ‘‘এতিহাদের হাতে ২৪% অংশীদারি না থাকলে বিষয়টি (জেটের শেয়ার কেনা) অবশ্যই ভেবে দেখতে পারি।’’ কাতারের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসে মদতের অভিযোগ নিয়ে তাদের সঙ্গে সম্পর্ক তেতো আমিরশাহির।
তিন দাবি
• জেটকে বাঁচাতে গয়াল ৭০০ কোটি টাকা পর্যন্ত লগ্নি করতে রাজি।
• বন্ধক রাখতে আপত্তি নেই তাঁর হাতে থাকা সংস্থার সমস্ত শেয়ারও।
কিন্তু...
গয়ালের শর্ত, তাঁর অংশীদারি ২৫ শতাংশের নীচে নামালে চলবে না।
• জেটে আরও পুঁজি ঢালতে চায় এতিহাদ। উৎসাহী বর্তমানে সেখানে তাদের হাতে থাকা ২৪% অংশীদারি আরও বাড়াতে।
শর্ত...
• তারা শেয়ার কিনবে মোটা অঙ্কের ছাড়ে।
• গয়ালের অংশীদারি ৫১% থেকে নামাতে হবে ২২ শতাংশে।
• সংস্থার পরিচালন পর্ষদ থেকেও সরতে হবে গয়ালকে।
• জেটে পুঁজি ঢালার কথা ভাবাই সম্ভব নয়, বলেছে কাতারের সরকারি বিমান সংস্থা কাতার এয়ারওয়েজ।
কারণ...
• জেটে রয়েছে তাদের ‘শক্র’ রাষ্ট্র সংযুক্ত আরব আমিরশাহির বিমান সংস্থা এতিহাদের ২৪% শেয়ার।
• সন্ত্রাসবাদে মদতের অভিযোগে ২০১৭ সালেই কাতারের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছে আমিরশাহি।
জেটের ঋণ পুনর্গঠনের জন্য এই মুহূর্তে সংস্থা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নিয়মিত কথা চলছে স্টেট ব্যাঙ্কের নেতৃত্বাধীন ঋণদাতা গোষ্ঠীর। স্টেট ব্যাঙ্কের দাবি, ভাবা হচ্ছে দীর্ঘ মেয়াদি পুনরুজ্জীবন পরিকল্পনা তৈরির কথাও। গয়ালের দাবি, শেষ পর্যন্ত জেটে যে প্রস্তাবই কার্যকর হোক, তা যেন হয় নীতিসম্মত ও ন্যায্য। সংস্থা ও শেয়ারহোল্ডারদের স্বার্থ যেন ক্ষুন্ন না হয়। যে যুক্তিতে নিজের শেয়ারকে অন্তত ২৫% রাখার সওয়াল তাঁর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy